🌹বি.এ সেমিষ্টার-৪::মেজর বাংলা(পেপার-৩)+মাইনর বাংলা সাজেশন(PART-1)🌹

✍️প্রশ্নের মান-২: 

❓ ১। 'ছন্দ' কী?

 ✅ উত্তর: ছন্দ হল শ্রুতিমধুর শব্দের শিল্পময় বিন্যাস, যা কানে জাগায় ধ্বনি-সুষমা, চিত্তে জাগায় রস।

❓ ২। ছন্দের কয়েকটি উপকরণের নাম লেখো।
✅ উত্তর: ধ্বনি (বর্ণ, শব্দ), অক্ষর বা দল, মাত্রা বা কলা, ছেদ ও যতি, লয়, পর্ব–পদ–চরণ–পংক্তি–স্তবক প্রভৃতি হল ছন্দের উপকরণ।

❓ ৩। অক্ষরের অপর নাম কী?
✅ উত্তর: অক্ষরের অপর নাম দল।

❓ ৪। অর্থ নিরপেক্ষ বিরামকে কী বলে?
✅ উত্তর: অর্থ নিরপেক্ষ বিরামকে যতি বলে।

❓ ৫। অর্থ সাপেক্ষ বিরামকে কী বলা হয়?
✅ উত্তর: অর্থ সাপেক্ষ বিরামকে ছেদ বলা হয়।

❓ ৬। পর্ব কাকে বলে?
✅ উত্তর: লঘু যতির দ্বারা নির্দিষ্ট খণ্ডিত ধ্বনি প্রবাহকে পর্ব বলে।

❓ ৭। কলাবৃত্ত ছন্দের লয় কিরূপ?
✅ উত্তর: কলাবৃত্ত ছন্দের লয় মধ্যম বা বিলম্বিত।

❓ ৮। পদ কাকে বলে?
✅ উত্তর: অর্থযতি দ্বারা বিভাজিত চরণাংশকে বলা হয় পদ। 'পদ' হল পর্বের চেয়ে বড়।
যেমন:
“রূপ লাগি আঁখি ঝুরে / গুণে মন ভোর”—
এই চরণে দুটি পদ আছে—
১. রূপ লাগি আঁখি ঝুরে
২. গুণে মন ভোর।

❓ ৯। প্রান্তিক পর্ব কাকে বলে?
✅ উত্তর: চরণের সমাপ্তিসূচক পর্বকে প্রান্তিক পর্ব বলে।
যেমন:
“বাঁশ বাগানের / মাথার উপর / চাঁদ উঠেছে / ওই।” — এখানে ‘ওই’ প্রান্তিক পর্ব।

❓ ১০। একটি পর্বের দৃষ্টান্ত দাও।

✅ উত্তর: ডেকেছ আজি / এসেছি আজি / হে মোর লীলা / গুরু। — পাঁচ মাত্রার পর্ব।

❓ ১১। পংক্তি কাকে বলে?
✅ উত্তর: পংক্তি হল লিখিত সারি। পংক্তি হল কবিতার পর্ব, পদ বা চরণ সাজিয়ে লেখার কৌশল।
যেমন—“যোজন-যোজন নীলের খেলা / সমুদ্রের জলে।”
‘সমুদ্রের জলে’ — ২য় পংক্তি।

❓ ১২। চরণ কাকে বলে?
✅ উত্তর: দীর্ঘ যতির দ্বারা নির্দিষ্ট সম্পূর্ণ ধ্বনিপ্রবাহকে চরণ বলে। চরণে এক বা একাধিক পর্ব থাকে।
যেমন—“ভোর হল রে / ফর্সা হল / দুলাল উষার / ফুল দোলা।”

❓ ১৩। স্তবক কাকে বলে?
✅ উত্তর: স্তবক একাধিক চরণের সমন্বয়ে গঠিত। এতে একটি সুসংহত নির্দিষ্ট ভাবের প্রকাশ পায়।

❓ ১৪। দলবৃত্তের লয় কিরূপ?
✅ উত্তর: দলবৃত্তের লয় দ্রুত।

❓ ১৫। লয় কী?
✅ উত্তর: কাব্য পাঠের সময় প্রবাহিত ধ্বনি স্রোতের যে উচ্চারণ গতি, তাকে লয় বলে।

❓ ১৬। শ্বাসাঘাত কী?
✅ উত্তর: কোন কোন চরণের এক একটি পর্বে বিশেষ অক্ষরের উপর যে জোর দেওয়া হয়, তাকে শ্বাসাঘাত বলে। ভাষার এই প্রবণতাকে প্রস্বর বা ঝোঁক বলা হয়।
যেমন—“বাঁশ বাগানের / মাথার উপর / চাঁদ উঠেছে / ওঁই।”

❓ ১৭। অক্ষর কয় প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর: অক্ষর তিন প্রকার। যথা—
১. স্বরান্ত অক্ষর
২. হলও অক্ষর
৩. যৌগিক স্বরান্ত অক্ষর।

❓ ১৮। স্বরান্ত অক্ষর কাকে বলে?
✅ উত্তর: যে অক্ষরের শেষে স্বরধ্বনি থাকে, তাকে স্বরান্ত অক্ষর বলে।
যেমন—বড়ো, বাবা ইত্যাদি।

❓ ১৯। হলও অক্ষর কাকে বলে?
✅ উত্তর: যে অক্ষরের শেষে ব্যঞ্জনধ্বনি থাকে, তাকে হলও অক্ষর বলে।
যেমন—‘কর’ একটি অক্ষর। কর্ = ক্ + অ + র্। যেহেতু ‘র্’ হসন্তযুক্ত ব্যঞ্জন, সেহেতু ‘কর্’ একটি হলও অক্ষর।

❓ ২০। যৌগিক স্বরান্ত অক্ষর কাকে বলে?
✅ উত্তর: একটি অক্ষরের মধ্যে যদি দুটি স্বর থাকে তবে তাকে যৌগিক স্বরান্ত অক্ষর বলে।
যেমন—‘সানাই’ একটি শব্দ। এখানে ‘সা-নাই’, এই ‘নাই’-তে ‘আই’ আছে। ‘আই’ = আ + ই। তাই এটি যৌগিক স্বরান্ত অক্ষর।

❓ ২১। দল কয় প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর: দল দুই প্রকার —
১. মুক্তদল
২. রুদ্ধদল।

❓ ২২। অতিপর্ব কাকে বলে?
✅ উত্তর: চরণের আদিতে বা পংক্তির শুরুতে যে স্বতন্ত্র ধ্বনিগুচ্ছ চরণের গতিবেগ সঞ্চার করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তাকে অতিপর্ব বলে।
যেমন—(আমি) বিদ্রোহী ভৃগু / ভগবান বুকে / এঁকে দিই / পদ চিহ্ন। এখানে ‘আমি’ অতিপর্ব।

❓ ২৩। মাত্রা কয় প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর: মাত্রা দুই প্রকার —
১. এক মাত্রা
২. দুই মাত্রা।

📝 ২৪। এক মাত্রা কী?

✅ উত্তর: একটি বা মুক্ত অক্ষর উচ্চারণ করতে যে সময় লাগে তা এক মাত্রা। যেমন— 'আমরা’-এর ‘রা’ মুক্ত অক্ষর = এক মাত্রা।

📝 ২৫। দুই মাত্রা কি?
✅ উত্তর: একটি বা রুদ্ধ অক্ষর উচ্চারণ করতে যে সময় লাগে তা দুই মাত্রা। যেমন— ‘আসবাব’, ‘আস’ রুদ্ধ অক্ষর দুই মাত্রা এবং ‘বার’ রুদ্ধ অক্ষর দুই মাত্রা।

📝 ২৬। ছন্দে একমাত্রা ও দুই মাত্রার সংকেত কী?
✅ উত্তর: এক দাঁড়ি (I) এক মাত্রা এবং দুই দাঁড়ি (II) দুই মাত্রা।

📝 ২৭। পূর্ণচ্ছেদ কী? পূর্ণচ্ছেদের চিহ্ন বা সংকেত কী?
✅ উত্তর: বাক্যের অর্থ প্রকাশের জন্য যে বিরতি চিহ্ন বসে তা পূর্ণচ্ছেদ। পূর্ণচ্ছেদের সংকেত দাঁড়ি (।)।

📝 ২৮। পূর্ণ যতির চিহ্ন কী? তা উল্লেখ করো।
✅ উত্তর: কবিতার লাইনের শেষে যে দুই দাঁড়ি (II) ব্যবহৃত হয় সেই দুই দাঁড়ি পূর্ণ যতির চিহ্ন।

📝 ২৯। পর্ব কয় প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর: পর্ব তিন প্রকার। যথা— (১) মূল পর্ব, (২) প্রান্তিক পর্ব, (৩) অতি পর্ব।

📝 ৩০। বাংলা ছন্দের মূল রীতি কয়টি ও কী কী?
✅ উত্তর: বাংলা ছন্দের মূল রীতি তিনটি। যথা—
(ক) স্বরবৃত্ত বা দলবৃত্ত বা শ্বাসাঘাত প্রধান ছন্দ।
(খ) মাত্রাবৃত্ত বা কলাবৃত্ত বা ধ্বনি প্রধান ছন্দ।
(গ) অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্রকলাবৃত্ত বা তানপ্রধান ছন্দ।

📝 ৩১। সনেটে ক-টি চরণ থাকে? ক-টি মাত্রা থাকে প্রতিটি চরণে?
✅ উত্তর: সনেটে ১৪টি চরণ থাকে। সনেটে থাকে ১৪ মাত্রা প্রতি চরণে।

📝 ৩২। সনেটের জনক কে?
✅ উত্তর: পেত্রার্ককে সনেটের জনক বলা হয়।

📝 ৩৩। বাংলা সনেটের প্রবর্তক কে?
✅ উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সনেটের প্রবর্তক।

📝 ৩৪। অমিত্রাক্ষর ছন্দের স্রষ্টা কে?
✅ উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত অমিত্রাক্ষর ছন্দের স্রষ্টা।

📝 ৩৫। অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার কোন্ গ্রন্থে প্রথম হয়?
✅ উত্তর: ‘তিলোত্তমা সম্ভব’ কাব্যে (মাইকেল মধুসূদন দত্ত) প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার হয়।

📝 ৩৬। ‘মেঘনাদ বধ’ কাব্যটি কোন্ ছন্দে লেখা?
✅ উত্তর: মেঘনাদবধ কাব্যটি অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা।

📝 ৩৭। ব্রজবুলি ভাষায় লেখা ‘বৈষ্ণব পদগুলি’ কোন্ ছন্দে লেখা?
✅ উত্তর: ব্রজবুলি ভাষায় লেখা বৈষ্ণব পদগুলি প্রাচীন কলাবৃত্ত ছন্দে লেখা।

📝 ৩৮। ‘ছন্দের যাদুকর’ কাকে বলা হয়?
✅ উত্তর: সত্যেন্দ্রনাথ দত্তকে ‘ছন্দের যাদুকর’ বলা হয়।

📝 ৩৯। পদ কয় প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর: পদ চার প্রকার। যথা— একপদী, দ্বিপদী, ত্রিপদী ও চৌপদী।

📝 ৪০। পয়ার কত পদী হয়?

✅ উত্তর: দ্বিপদী হয়।

📝 ৪১। পয়ারে প্রতিটি চরণ 'ক' মাত্রার হয়?
✅ উত্তর: চৌদ্দ মাত্রার।

📝 ৪২। পয়ারের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর: (১) পয়ারে থাকে দুটি চরণ, (২) দুই চরণে অন্ত্যমিল থাকে।

📝 ৪৩। মহাপয়ার কাকে বলে?
✅ উত্তর: ৮ + ১০ মাত্রার দুটি পদ নিয়ে গঠিত যে পয়ার, তাই-ই মহাপয়ার।

📝 ৪৪। মহাপয়ারে পূর্ণপর্বের মাত্রা কত ও চরণে মোট মাত্রা কত?
✅ উত্তর: পূর্ণপর্ব ৮ মাত্রার। চরণ ১৮ মাত্রার (৮ + ১০)।

📝 ৪৫। মহাপয়ারের উদাহরণ দাও।
✅ উত্তর: “একথা জানিতে তুমি | ভারত ঈশ্বর শাজাহান
              কালস্রোতে ভেসে যায় | জীবন যৌবন ধনমান।”

📝 ৪৬। মহাপয়ার প্রথম কোথায় দেখা যায়?
✅ উত্তর: রঙ্গলালের ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’-এ মহাপয়ার দেখা যায়।

📝 ৪৭। একটি পূর্ণ পর্বের উদাহরণ দাও। অপূর্ণ পর্ব কোনটি?
✅ উত্তর: জীবন-দেউল/আঁধার করে/নিভল হঠাৎ/আলো।। ৪ + ৪ + ৪ + ২ = ১৪ মাত্রা।
উপরের ১৪ মাত্রার চরণের প্রথম পর্ব তথা ‘জীবন-দেউল’ পর্বটি মূলপর্ব অর্থাৎ পূর্ণপর্ব ৪ মাত্রার।
শেষ পর্ব ‘আলো’ ২ মাত্রার। যেহেতু কম মাত্রা আছে শেষ পর্বে, তাই শেষ পর্বটি অপূর্ণ পর্ব।

📝 ৪৮। কোন্ ছন্দে প্রতিটি অক্ষরই একমাত্রার হয়?
✅ উত্তর: শ্বাসাঘাত প্রধান ছন্দে প্রতিটি অক্ষরই একমাত্রার হয়।

📝 ৪৯। শ্বাসাঘাত প্রধান ছন্দের মূলপর্ব সাধারণত কয় মাত্রার হয়?
✅ উত্তর: শ্বাসাঘাত প্রধান ছন্দের মূল পর্ব চার মাত্রার হয়।

📝 ৫০। কোন্ ছন্দে হলন্ত ও যৌগিক স্বরান্ত অক্ষর এক মাত্রার হয়?
✅ উত্তর: স্বরবৃত্ত ছন্দে হলন্ত ও যৌগিক স্বরান্ত অক্ষর এক মাত্রার হয়।

📝 ৫১। মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অপর ২টি নাম কী কী?
✅ উত্তর: মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অপর দুটি নাম হল ধ্বনিপ্রধান ও কলাবৃত্ত।

📝 ৫২। কলাবৃত্ত ছন্দে মূল পর্ব কয়মাত্রার হয় তা লেখো।
✅ উত্তর: কলাবৃত্ত ছন্দের মূল পর্ব ৪/৫/৬/৭ মাত্রার হয়।

📝 ৫৩। কোন ছন্দে রুদ্ধদল মাত্রই দু-মাত্রার হয়?
✅ উত্তর: কলাবৃত্ত (মাত্রাবৃত্ত) ছন্দে রুদ্ধদল মাত্রেই দু’মাত্রার হয়।

📝 ৫৪। মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর: (ক) ধীর লয় আশ্রিত ছন্দ, (খ) মূল পর্ব ৮ মাত্রা।

📝 ৫৫। 'অপরাজিতা' শব্দটিতে ক-টি মুক্তদল আছে?
✅ উত্তর: এই শব্দটিতে পাঁচটি মুক্তদল আছে।

📝 ৫৬। ‘রবীন্দ্রনাথ’—শব্দটিতে ক-টি রুদ্ধদল আছে?
✅ উত্তর: শব্দটিতে দুটি রুদ্ধদল আছে।

📝 ৫৭। প্রত্নমাত্রাবৃত্ত ছন্দে প্রসারিত মুক্তদল কয়মাত্রার মূল্য পায়?

✅ উত্তর: প্রত্নমাত্রাবৃত্ত ছন্দে প্রসারিত মুক্তদল ২ মাত্রার (দুই মাত্রার) মূল্য পায়।

📝 ৫৮। কোন্ ছন্দের শোষণ শক্তি সর্বাধিক?
✅ উত্তর: মিশ্রকলাবৃত্ত ছন্দের শোষণ শক্তি সর্বাধিক।

📝 ৫৯। কোন্ ছন্দে প্রতিটি দল সমান মাত্রার মূল্য পায়?
✅ উত্তর: দলবৃত্ত বা স্বরবৃত্ত ছন্দে প্রতিটি দল সমান মাত্রার মূল্য পায়।

📝 ৬০। স্বরধ্বনির সংখ্যা গণনা করে কোন্ ছন্দের গণনা করা যায়?
✅ উত্তর: স্বরধ্বনির সংখ্যা গণনা করে দলবৃত্ত ছন্দের মাত্রা গণনা করা যায়।

📝 ৬১। নিয়মিত ছন্দের ভিত্তি ছন্দ যতি। গদ্য ছন্দের ভিত্তি কী?
✅ উত্তর: গদ্যছন্দের ভিত্তি মিশ্রবৃত্ত ছন্দের উপর প্রতিষ্ঠিত।

📝 ৬২। দীর্ঘ ত্রিপদীতে চরণের পর্বানুযায়ী মাত্রা সংখ্যা লেখো।
✅ উত্তর: দীর্ঘ ত্রিপদীতে চরণের পর্বানুযায়ী মাত্রা সংখ্যা ৮+৮+১০।

📝 ৬৩। বলাকা কাব্যগ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ যে ছন্দরূপটি ব্যবহার করেছেন তার নাম লেখো।
✅ উত্তর: মুক্তক ছন্দ বা মুক্তবদ্ধ ছন্দ রবীন্দ্রনাথ বলাকায় ব্যবহার করেছেন।

📝 ৬৪। যে-কোন একজন ছন্দ শাস্ত্রীর নাম লেখো।
✅ উত্তর: প্রবোধ চন্দ্র সেন হলেন একজন ছন্দশাস্ত্রী।

📝 ৬৫। দলবৃত্ত ছন্দে বিশ্লিষ্ট রুদ্ধদল কয় মাত্রার মূল্য পায়?
✅ উত্তর: দলবৃত্ত ছন্দে বিশ্লিষ্ট রুদ্ধদল এক মাত্রার মূল্য পায়।

📝 ৬৬। মিশ্রবৃত্ত (তান প্রধান) ছন্দে সংশ্লিষ্ট রুদ্ধদল কয় মাত্রার মূল্য পায়?
✅ উত্তর: মিশ্রবৃত্ত ছন্দে সংশ্লিষ্ট রুদ্ধদল একমাত্রার মূল্য পায়।

📝 ৬৭। ধ্বনিপ্রধান ছন্দের নামকরণ করেন কে?
✅ উত্তর: ধ্বনিপ্রধান ছন্দ নামকরণ করেন অমূল্যধন মুখোপাধ্যায়।

📝 ৬৮। মাত্রাবৃত্ত ছন্দের নামকরণ করেছিলেন কে?
✅ উত্তর: মাত্রাবৃত্ত বা কলাবৃত্ত ছন্দের নামকরণ করেন প্রবোধচন্দ্র সেন।

📝 ৬৯। ‘কে মেরেছে কে ধরেছে কে দিয়েছে গাল। তাই তো খুকু রাগ করেছে ভাত খায়নি কাল’ — কোন্ ছন্দ?
✅ উত্তর: এটি দলবৃত্ত ছন্দ।

📝 ৭০। 'বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এল বান'—এই ছড়ায় রুদ্ধদল ও মুক্তদলের সংখ্যা কত?
✅ উত্তর: এখানে মুক্তদল (টি, প, ড়ে, টা, টু, ন, দে, এ, ল) নয়টি এবং রুদ্ধদল (বৃষ, পুর, পুর, বান) এই চারটি।

📝 ৭১। মিশ্রবৃত্ত ছন্দের লয় কিরূপ?
✅ উত্তর: মিশ্রবৃত্ত ছন্দের লয় ধীর।

📝 ৭২। উচ্চারণ বিচারে অক্ষরের ক-টি ভাগ ও কি কি?
✅ উত্তর: উচ্চারণ বিচারে অক্ষরের দুটি ভাগ যথা—রুদ্ধদল ও মুক্তদল।

📝 ৭৩। প্রবহমান পয়ারে প্রতিটি চরণের পর্বানুযায়ী মাত্রা সংখ্যা লেখো।
✅ উত্তর: প্রবহমান পয়ারে প্রতিটি চরণের পর্বানুযায়ী মাত্রা সংখ্যা ৮+৬ = ১৪ মাত্রা।

📝 ৭৪। মহাপয়ার ছন্দরূপের কবিতায় প্রতি চরণে কত মাত্রা থাকে?
✅ উত্তর: মহাপয়ার ছন্দরূপের কবিতায় প্রতি চরণে ১৮ মাত্রা থাকে।

---

📝 ৭৫. অলংকারকে প্রাথমিকভাবে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? তাদের নাম কী?
✅ উত্তর: অলংকারকে প্রাথমিকভাবে দু’ভাগে ভাগ করা যায়— (ক) শব্দালংকার এবং (খ) অর্থালংকার।

📝 ৭৬. শব্দালংকারের ভূমিকা কী?
✅ উত্তর: শব্দালংকার বাক্যের ধ্বনিঝংকার বা শ্রুতিমাধুর্য বাড়ায়। এটি কাব্যের শব্দসৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

📝 ৭৭. অর্থালংকারের ভূমিকা কী?
✅ উত্তর: অর্থালংকার বাক্যের অর্থকে আরও তাৎপর্যমণ্ডিত ও হৃদয়গ্রাহী করে তোলে। এটি ভাবের গভীরতা প্রকাশ করে।

📝 ৭৮. একই ব্যঞ্জনধ্বনি বাক্যে বা চরণে পুনঃপুনঃ উচ্চারিত হলে কোন অলংকার হয়?
✅ উত্তর: একই ব্যঞ্জনধ্বনি পুনঃপুনঃ উচ্চারিত হলে বৃত্ত্যনুপ্রাস অলংকার হয়।

📝 ৭৯. একাধিক ব্যঞ্জনধ্বনি যুক্ত বা সন্নিহিত অবস্থায় দু’বার ব্যবহৃত হলে কোন অলংকার হয়?
✅ উত্তর: একাধিক ব্যঞ্জনধ্বনি যুক্ত বা ক্রমানুসারে সন্নিহিত অবস্থায় দু’বার ব্যবহৃত হলে শ্লেষানুপ্রাস অলংকার হয়।

📝 ৮০. কোন অলংকারে একই ধ্বনিগুচ্ছ সমস্বরধ্বনিসহ ভিন্নার্থে দু’বার ব্যবহৃত হয়?
✅ উত্তর: যমক অলংকারে একই ধ্বনিগুচ্ছ সমস্বরধ্বনিসহ ভিন্নার্থে ব্যবহৃত হয়।

📝 ৮১. উপমেয় ও উপমানের মধ্যে অভেদের সম্পর্ক দেখানো হয় কোন অলংকারে?
✅ উত্তর: উপমেয় ও উপমানের মধ্যে অভেদের সম্পর্ক কল্পিত হয় রূপক অলংকারে।

📝 ৮২. কোন অলংকারে সংশয়ের সম্পর্ক জিজ্ঞাসার ভঙ্গিতে উপস্থাপিত হয়?
✅ উত্তর: সন্দেহ অলংকারে সংশয়ের সম্পর্ক জিজ্ঞাসার ভঙ্গিতে প্রকাশিত হয়।

📝 ৮৩. কোন অলংকারে নিষেধাত্মক শব্দের ব্যবহার থাকবেই?
✅ উত্তর: নিশ্চয় এবং অপহ্নুতি অলংকারে নিষেধাত্মক শব্দের ব্যবহার আবশ্যিক।

📝 ৮৪. কোন অলংকারে অচেতন বস্তুর উপর চেতনের ধর্ম অরোপিত হয়?
✅ উত্তর: সমাসোক্তি অলংকারে অচেতন বস্তুর উপর চেতনের ধর্ম আরোপিত হয়।

📝 ৮৫. কোন অলংকারে উপমানের উপর অসম্ভব ধর্ম আরোপিত হয়?
✅ উত্তর: অধিকারূঢ় রূপক অলংকারে উপমানের উপর অসম্ভব ধর্ম আরোপিত হয়।

📝 ৮৬. কোন অলংকারে বক্তব্যের মধ্যে আপাত বিরোধ দেখিয়ে কাব্যচমৎকার সৃষ্টি করা হয়?
✅ উত্তর: বিরোধাভাস অলংকারে বক্তব্যে আপাতবিরোধ দেখিয়ে রস ও চমৎকার সৃষ্টি করা হয়।

---

📝 ৮৭. কোন অলংকারে বক্তার বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল প্রকাশ পায়?
✅ উত্তর: পর্যায় অলংকারে বক্তার বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল প্রকাশ পায়। এটি বাক্যের ভঙ্গিতে রস ও প্রখরতা আনে।

📝 ৮৮. কোন অলংকারে বক্তার আবেগপ্রবণতা ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ পায়?
✅ উত্তর: আকুলতা অলংকারে বক্তার আবেগ, উৎকণ্ঠা ও হৃদয়ের তীব্র অনুভূতি প্রকাশ পায়।

📝 ৮৯. কোন অলংকারে এক বিষয়ের পরিবর্তে অন্য বিষয় বুঝানো হয়?
✅ উত্তর: রূপক অলংকারে এক বিষয়ের পরিবর্তে অন্য বিষয়কে বোঝানো হয়, যেখানে উপমেয় ও উপমান অভিন্ন হয়ে যায়।

📝 ৯০. কোন অলংকারে এক বস্তু অন্য বস্তুর জন্য দণ্ডায়মান থাকে?
✅ উত্তর: প্রতিস্থা অলংকারে এক বস্তু অন্য বস্তুর জন্য দণ্ডায়মান থাকে, অর্থাৎ একের দ্বারা অন্যকে বোঝানো হয়।

📝 ৯১. কোন অলংকারে এক কথায় একাধিক অর্থ প্রকাশিত হয়?
✅ উত্তর: শ্লেষ অলংকারে এক কথায় একাধিক অর্থ প্রকাশিত হয়, যা কাব্যে বুদ্ধি ও রসের সমন্বয় ঘটায়।

📝 ৯২. কোন অলংকারে একটি বিষয়কে অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হয়?
✅ উত্তর: অতিশয়োক্তি অলংকারে একটি বিষয়কে অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হয়, যাতে ভাবের প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

📝 ৯৩. কোন অলংকারে দুটি বিপরীত ভাব একত্রে প্রকাশিত হয়?
✅ উত্তর: বিরোধাভাস অলংকারে দুটি বিপরীত ভাব একত্রে প্রকাশ পায়, কিন্তু তাতে প্রকৃত কোনো বিরোধ থাকে না।

📝 ৯৪. কোন অলংকারে একটি ঘটনার পরিণতি অন্য ঘটনার পূর্বরূপে দেখানো হয়?
✅ উত্তর: ভ্রান্তি অলংকারে একটি ঘটনার পরিণতি অন্য ঘটনার পূর্বরূপে দেখানো হয়, যা পাঠকের মনে চমৎকার সৃষ্টি করে।

📝 ৯৫. কোন অলংকারে বক্তার অক্ষমতা বা অপারগতা প্রকাশ পায়?
✅ উত্তর: অপহ্নুতি অলংকারে বক্তা নিজের যোগ্যতা, শক্তি বা ক্ষমতা অস্বীকার করে বিনয় প্রকাশ করেন।

📝 ৯৬. কোন অলংকারে বক্তা অন্যের কথা নিজের বলে প্রকাশ করেন?
✅ উত্তর: অন্যোক্তি অলংকারে বক্তা অন্যের কথা নিজের মুখে প্রকাশ করেন, যাতে রচনায় প্রাণবন্ততা আসে।

📝 ৯৭. কোন অলংকারে একটি বস্তুর গুণ অন্য বস্তুর মধ্যে আরোপিত হয়?
✅ উত্তর: অতিশয়োক্তি অলংকারের উপপ্রকার রূপে কখনও একটি বস্তুর গুণ অন্য বস্তুর মধ্যে আরোপিত হয়, যা কাব্যরসকে গভীর করে।

📝 ৯৮. কোন অলংকারে কল্পনার সাহায্যে এক বস্তুকে অন্য বস্তুরূপে দেখা হয়?
✅ উত্তর: রূপক অলংকারে কল্পনার সাহায্যে এক বস্তুকে অন্য বস্তুরূপে দেখা হয়।

📝 ৯৯. কোন অলংকারে একই ভাব পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয় ভাব জোরালো করতে?
✅ উত্তর: পুনরুক্তি অলংকারে একই ভাব পুনরাবৃত্তি করে ভাব ও আবেগকে জোরালো করা হয়।

📝 ১০০. কোন অলংকারে সরাসরি তুলনা না করে ইঙ্গিতের মাধ্যমে সাদৃশ্য প্রকাশ করা হয়?
✅ উত্তর: রূপক অলংকারে সরাসরি তুলনা না করে ইঙ্গিতের মাধ্যমে সাদৃশ্য প্রকাশ করা হয়, যেখানে “যেন”, “তুল্য” ইত্যাদি শব্দ অনুপস্থিত থাকে।

---

📝 ১০১. কোন অলংকারে বাঞ্ছিত ফলের বিপরীত ফল লাভ দেখিয়ে কাব্যচমৎকারিত্ব সৃষ্টি করা হয়?
✅ উত্তর: বিষম অলংকারে বাঞ্ছিত ফলের বিপরীত ফলপ্রাপ্তি দেখানো হয়।

---

📝 ১০২. শব্দালংকারের ক'টি ভাগ? কী কী?
✅ উত্তর: শব্দালংকারের ৫টি ভাগ — (ক) অনুপ্রাস, (খ) যমক, (গ) শ্লেষ, (ঘ) পুনরুক্তবদাভাস এবং (ঙ) বক্রোক্তি।

---

📝 ১০৩. শব্দালংকার কাকে বলে?
✅ উত্তর: যে অলংকারে বিশেষ ধ্বনি যুক্ত শব্দ নির্বাচনের দ্বারা বাক্য বা চরণের মধ্যে ধ্বনিঝংকার ও শ্রুতিমাধুর্য সৃষ্টি করা হয়, তাকেই বলা হয় শব্দালংকার।

---

📝 ১০৪. অর্থালংকার কাকে বলে?
✅ উত্তর: যে অলংকারে একাধিক বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্যজনিত বা বিরোধজনিত সম্পর্ক দেখিয়ে বাক্যের অর্থে তাৎপর্য ও কাব্যচমৎকারিত্ব সৃষ্টি করা হয়, তাকেই বলা হয় অর্থালংকার।

---

📝 ১০৫. পাঁচটি প্রধান সাদৃশ্যমূলক অলংকারের নাম লেখ।
✅ উত্তর: উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা, সন্দেহ ও সমাসোক্তি — এই পাঁচটি প্রধান সাদৃশ্যমূলক অলংকার।

---

📝 ১০৬. পাঁচটি বিরোধমূলক অলংকারের নাম লেখ।
✅ উত্তর: বিরোধাভাস, বিষম, বিভাবনা, বিশেষোক্তি ও অসঙ্গতি — এই পাঁচটি প্রধান বিরোধমূলক অলংকার।

---

📝 ১০৭. অনুপ্রাস অলংকারের ক'টি ভাগ? কী কী?
✅ উত্তর: অনুপ্রাস অলংকারের তিনটি ভাগ — অন্ত্যানুপ্রাস, বৃত্ত্যনুপ্রাস ও ছেকানুপ্রাস। এছাড়া শ্রুত্যনুপ্রাস (অন্ত্যানুপ্রাসের সহকারী) ও লাটানুপ্রাস (বৃত্ত্যনুপ্রাসের সহকারী) আছে।

---

📝 ১০৮. অন্ত্যানুপ্রাস বলতে কী বোঝ? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অনুপ্রাসে চরণান্ত বা পর্বান্তের ধ্বনিসাম্য ঘটিয়ে শ্রুতিমাধুর্য সৃষ্টি করা হয়, তাকেই অন্ত্যানুপ্রাস বলে।
যেমন — “শুধু বিঘে দুই / ছিল মোর ভুঁই // আর সবই গেছে / ঋণে।”

---

📝 ১০৯. বৃত্ত্যনুপ্রাস বলতে কী বোঝ? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অনুপ্রাসে একই ব্যঞ্জনধ্বনি একই চরণের মধ্যে বারবার উচ্চারিত হয়ে ধ্বনিঝংকার সৃষ্টি করে, তাকেই বৃত্ত্যনুপ্রাস বলে।
যেমন — “চলচপলার চকিত চমকে করিছে চরণ বিচরণ।”

---

📝 ১১০. ছেকানুপ্রাস কাকে বলে? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অলংকারে যুক্তাক্ষর বা ক্রমানুসারে একাধিক ব্যঞ্জনধ্বনির পুনরাবৃত্তি দ্বারা শ্রুতিমাধুর্য সৃষ্টি হয়, তাকেই ছেকানুপ্রাস বলে।
(উদাহরণ: “বজ্র কঠোর কণ্ঠে কহে করুণ কাহিনী।”)

---

📝 ১১১. ধার ব্যবহৃত হয়ে কোন অনুপ্রাস অলংকার সৃষ্টি হয়?
✅ উত্তর: ধার ব্যবহৃত হয়ে ছেকানুপ্রাস অলংকার সৃষ্টি হয়।

---

📝 ১১২. শ্রুত্যনুপ্রাস বলতে কী বোঝ? দৃষ্টান্তসহ বোঝাও।
✅ উত্তর: একই উচ্চারণস্থান থেকে উচ্চারিত, প্রায় সমান উচ্চারণের দুটি ভিন্ন ব্যঞ্জনের মধ্যে অনুপ্রাস ঘটিয়ে শ্রুতিমাধুর্য সৃষ্টি হলে তাকে বলা হয় শ্রুত্যনুপ্রাস।
যেমন — “দেখি আঁকা তরুছায়া মসীমাখা পরপারে।”

---

📝 ১১৩. লাটানুপ্রাস কাকে বলে? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: একই শব্দ একই অর্থে একই চরণে একাধিকবার ব্যবহৃত হয়ে ধ্বনিঝংকার সৃষ্টি করলে তাকে লাটানুপ্রাস অলংকার বলে।
যেমন — “গাছে গাছে ফুল, ফুলে ফলে অলি সুন্দর ধরাতল!”

---

📝 ১১৪. যমক কাকে বলে? দৃষ্টান্তসহ বোঝাও।
✅ উত্তর: যে শব্দালংকারে কোনো ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ একইভাবে উচ্চারিত হলেও ভিন্নার্থে দুইবার ব্যবহৃত হয়, তাকেই যমক বলে।
যেমন — “কোথা হা অন্ত চিরবসন্ত আমি বসন্তে মরি!”

---

📝 ১১৫. শ্লেষ অলংকার বলতে কী বোঝ? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অলংকারে একটি শব্দ একাধিক অর্থে প্রয়োগ করে শব্দটির তাৎপর্য বাড়িয়ে তোলা হয়, তাকেই শ্লেষ অলংকার বলে।
যেমন — “বাজে পূরবীর ছন্দে রবির শেষ রাগিণীর বীণ।” (‘রবি’ মানে সূর্য বা রবীন্দ্রনাথ দু’ভাবেই নেওয়া যায়।)

---

📝 ১১৬. শ্লেষ অলংকারের কয়টি ভাগ? প্রতিটি ভাগের একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: শ্লেষ অলংকারের দুইটি ভাগ — অভঙ্গ শ্লেষ ও সভঙ্গ শ্লেষ।
(ক) অভঙ্গ শ্লেষ — “আনিয়াছে তোর স্বামী বান্ধি নিজ গুণে।”
(খ) সভঙ্গ শ্লেষ — “অপরূপ রূপ কেশবে, দেখরে তোরা এমন ধারা কালো রূপ কি আছে ভবে?”

---

📝 ১১৭. অভঙ্গ শ্লেষ বলতে কী বোঝ? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে শ্লেষ অলংকারে শব্দটিকে না ভেঙে অবিকৃত অবস্থায় উচ্চারণ করলেও একাধিক অর্থ বোঝায়, তাকে অভঙ্গ শ্লেষ বলে।
যেমন — “ঠাকুর আমাকে একটি মনের মতো বর দাও।” (‘বর’ মানে আশীর্বাদ ও পতি—দু’টি অর্থে ব্যবহৃত)।

---

📝 ১১৮. সভঙ্গ শ্লেষ বলতে কী বোঝ? একটা দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে শ্লেষ অলংকারে একাধিক অর্থ প্রতীতির জন্য শব্দটিকে ভেঙে বা বিকৃত করে উচ্চারণ করতে হয়, তাকেই সভঙ্গ শ্লেষ বলে।
যেমন — “কৃষ্ণসারের বধে সারল কৃষ্ণের রূপ।” (‘কৃষ্ণসার’ মানে হরিণ এবং কৃষ্ণের সারা—দু’অর্থে)।

---

📝 ১১৯. সাদৃশ্যমূলক অলংকারে ক’টি অঙ্গ থাকে? তাদের নাম লেখ।
✅ উত্তর: সাদৃশ্যমূলক অলংকারে চারটি অঙ্গ থাকে। যথা— (ক) উপমেয়, (খ) উপমান, (গ) সাধারণ ধর্ম, (ঘ) সাদৃশ্যবাচক শব্দ।

---

📝 ১২০. একটি দৃষ্টান্তের সাহায্যে উপমেয় ও উপমানের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।
✅ উত্তর: বক্তা বা কবি যার সম্পর্কে বলতে চান তাকে বলে উপমেয়, আর যার সঙ্গে তার সাদৃশ্য দেখানো হয়, সেটিই উপমান।
যেমন — “মেঘের মতো কালো চুলে ফুলের অলংকার।” এখানে ‘চুল’ উপমেয় ও ‘মেঘ’ উপমান।

---

📝 ১২১. উপমা অলংকারের সংজ্ঞা ও দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অর্থালংকারে উপমেয় ও উপমানের মধ্যে সাদৃশ্যের সম্পর্ক দেখিয়ে কাব্যচমৎকার সৃষ্টি করা হয়, তাকেই উপমা অলংকার বলে।
যেমন — “আমার অন্তরে আমি কস্তুরীমৃগের সম একা।”

---

📝 ১২২. পূর্ণোপমা কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্তসহ এর স্বরূপ বোঝাও।
✅ উত্তর: যে উপমায় উপমেয়, উপমান, সাধারণ ধর্ম ও সাদৃশ্যবাচক শব্দ — এই চারটি উপাদানই উপস্থিত থাকে, তাকে বলে পূর্ণোপমা অলংকার।
যেমন — “লোহার মতো শক্ত দাঁতে কামড় দিল যবে।”

---

📝 ১২৩. লুপ্তোপমা কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্তসহ বোঝাও।
✅ উত্তর: যে উপমা অলংকারে উপমেয়, উপমান, সাধারণ ধর্ম, সাদৃশ্যবাচক শব্দের কোনো একটি বা একাধিক উহ্য থাকে, তাকে লুপ্তোপমা বলে।
যেমন — “মেঘের মতো চুল রূপসীর, সোনার মতো রং।”

---

📝 ১২৪. মালোপমা বলতে কী বোঝ? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে উপমা অলংকারে একটি উপমেয়ের সঙ্গে একাধিক উপমানের সাদৃশ্য দেখানো হয়, তাকে মালোপমা অলংকার বলে।
যেমন — “মলিন বদনা দেবী, হায়রে যেমতি খনির তিমির গর্ভে সূর্যকান্ত মণি কিম্বা বিম্বাধরা রমা অম্বুরাশি তলে।”

---

📝 ১২৫. রূপক অলংকারের সংজ্ঞা ও দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে সাদৃশ্যমূলক অর্থালংকারে উপমেয় ও উপমানের মধ্যে অভেদের সম্পর্ক কল্পিত হয়, তাকে রূপক অলংকার বলে।
যেমন — “জীবন নদী বহিয়া চলে।” এখানে ‘জীবন’-এর সঙ্গে ‘নদী’-র অভেদ কল্পিত হয়েছে।

---

📝 ১২৬. সন্দেহ অলংকার কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে সাদৃশ্যমূলক অর্থালংকারে উপমেয় ও উপমানের মধ্যে প্রবল সাদৃশ্যের কারণে সংশয় সৃষ্টি হয় এবং তা জিজ্ঞাসার ভঙ্গিতে প্রকাশ করা হয়, তাকেই বলে সন্দেহ অলংকার।
যেমন — “ঐ দূরে দেখা যায় মেঘ, না কি হিমালয়?”

---

📝 ১২৭. নিশ্চয় অলংকারের সংজ্ঞা ও দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অর্থালংকারে ‘না’, ‘নহে’, ‘নয়’ ইত্যাদি নিষেধাত্মক শব্দের দ্বারা উপমানকে অস্বীকার করে উপমেয়কে নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়, তাকেই বলে নিশ্চয় অলংকার।
যেমন — “ঐ দূরে দেখা যায় মেঘ নহে, হিমালয়।”

---

📝 ১২৮. অপহ্নুতি অলংকারের সংজ্ঞা ও দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অর্থালংকারে ‘না’, ‘নহে’, ‘নয়’ বা ‘ছলে’ শব্দ ব্যবহার করে উপমেয়কে অস্বীকার করে উপমানকে প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকেই বলে অপহ্নুতি অলংকার।
যেমন — “চোখে চোখে কথা নয়গো বন্ধু, আগুনে আগুনে কথা।”

---

📝 ১২৯. সমাসোক্তি বলতে কী বোঝ? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অর্থালংকারে অচেতন বস্তুর উপর চেতনের গুণ বা আচরণ আরোপ করে কাব্যচমৎকার সৃষ্টি করা হয়, তাকেই বলে সমাসোক্তি অলংকার।
যেমন — “পাতারা শোনায় শারদ বার্তা বাতাসের কানে কানে।”

---

📝 ১৩০. অতিশয়োক্তি অলংকার কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্তসহ বোঝাও।
✅ উত্তর: যে অর্থালংকারে উপমেয়কে এত বড় করে দেখানো হয় যে উপমান যেন তার মধ্যে মিলিয়ে যায়, তাকেই বলে অতিশয়োক্তি অলংকার।
যেমন — “এত দিনে কি পড়িল ধরা অশনি ভরা বিদ্যুৎ।”

---

📝 ১৩১. ভ্রান্তিমান অলংকার কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে অর্থালংকারে উপমেয়কে দেখে উপমান বলে ভ্রম হয়, তাকেই বলে ভ্রান্তিমান অলংকার।
যেমন — “চরণ পঙ্কজ ভ্রমে ধায় অলিগণ।”

---

📝 ১৩২. বিশেষোক্তি অলংকার কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে বিরোধমূলক অর্থালংকারে উপযুক্ত কারণ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কার্য উৎপন্ন হয় না, তাকেই বলে বিশেষোক্তি অলংকার।
যেমন — “যদি করি বিষপান তথাপি না যায় প্রাণ, চিরজীবী করিল গোঁসাই।”

📝 প্রশ্ন ১৩৩। অসঙ্গতি অলংকার কাকে বলে? দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে বিরোধমূলক অর্থালংকারে কারণ ও কার্য উভয়ই থাকে, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো সঙ্গতি বা সহাবস্থান দেখা যায় না, তাকেই বলে অসঙ্গতি অলংকার। যেমন —
‘ওদের বনে ঝরে শ্রাবণ ধারা, আমার বনে কদম ফুটে ওঠে।’

📝 প্রশ্ন ১৩৪। বিভাবনা অলংকার কাকে বলে? দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে বিরোধমূলক অর্থালংকারে উপযুক্ত কারণ ছাড়াই কার্য ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হয়, তাকে বলে বিভাবনা অলংকার। যেমন —
‘শাশুড়ি ননদী নাই, নাই তোর সতা; কার সনে দ্বন্দ্ব করি চক্ষু কৈলি রাতা।’

📝 প্রশ্ন ১৩৫। ব্যাজস্তুতি অলংকার কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে গূঢ়ার্থ প্রতীতিমূলক অলংকারে নিন্দার ছলে স্তুতি বা স্তুতির ছলে নিন্দা করা হয়, তাকে বলে ব্যাজস্তুতি অলংকার। যেমন —
‘কি সুন্দর মালা আজি পরিয়াছ গলে, প্রচেতঃ!’

📝 প্রশ্ন ১৩৬। কোন বিরোধমূলক অলংকারে কার্য থাকে না? দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: বিশেষোক্তি অলংকারে কার্য থাকে না, যদিও কারণ উপস্থিত থাকে। যেমন —
‘সাপে বাঘে যদি খায়, মরণ না হবেতায়।’

📝 প্রশ্ন ১৩৭। বিরোধাভাস অলংকার কাকে বলে? একটি দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে বিরোধমূলক অলংকারে প্রথমে বক্তব্য পরস্পরবিরোধী মনে হয়, কিন্তু গভীর অর্থ বোঝা গেলে বিরোধের অবসান ঘটে, তাকেই বলে বিরোধাভাস অলংকার। যেমন —
‘অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহানন্দময় লভিব মুক্তির স্বাদ।’

📝 প্রশ্ন ১৩৮। বিষম অলংকারের সংজ্ঞা ও দৃষ্টান্ত দাও।
✅ উত্তর: যে বিরোধমূলক অর্থালংকারে কারণ ও কার্য, আরদ্ধ কাজ ও অভিপ্রেত ফল, বা ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে বৈষম্য থাকে, তাকেই বলে বিষম অলংকার। যেমন —
‘সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু, অনলে পুড়িয়া গেল।’

📝 প্রশ্ন ১৩৯। মালোপমা অলংকারের দৃষ্টান্ত দিয়ে উপমেয় ও উপমান নির্দেশ কর।
✅ উত্তর:
দৃষ্টান্ত —
‘মেহগনির মঞ্চ জুড়ে পঞ্চ হাজার গ্রন্থ;
সোনার জলে দাগ পড়ে না, খোলে না কেউ পাতা,
অস্বাদিত মধু যেমন, যুথি অনাঘ্রাতা।’
এখানে উপমেয় — পাতা না-খোলা গ্রন্থ,
আর উপমান — ‘অস্বাদিত মধু’ ও ‘অনাঘ্রাতা যুথি’।

---

<<<<<<<<<<<<<<<<🌹সমাপ্ত🌹>>>>>>>>>>> 

👉For pdf whatsapp-8250978714

---