✍️উপযুক্ত প্রতীকসহ মানচিত্রে স্থানগুলিকে দেখাও:
(i) রানিগঞ্জ, (ii) তারাপুর, (iii) বোম্বে হাই, (iv) ফারাক্কা, (v) তালচের।(vi) বায়লাডিলা লৌহ আকরিক খনি। (vii) তালচের কয়লাখনি। (viii) ফারাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। (ix) নারোরা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। (x) কয়ালি তৈলশোধনাগার।(xi) ভারতের বৃহত্তম তৈল শোধনাগার (জামনগর), (xii) সমুদ্রগর্ভের তৈলখনি (বম্বে হাই), (xiii) নেভেলি (বৃহত্তম লিগনাইট খনি),(xiv) পশ্চিমবঙ্গের একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, (xv) ভারতের প্রাচীনতম কয়লাখনি, (xvi) তারাপুর, (xvii) পূর্ব ভারতের একটি আকরিক লৌহ খনি, (xviii) পশ্চিম ভারতের বায়ুশক্তি কেন্দ্র।(xix) বায়লাডিলা লৌহখনি। (xx) রানিগঞ্জ কয়লাখনি। (xxi) বোম্বেহাই তৈলখনি। (xxii) দক্ষিণ ভারতের একটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। (xxiii) ভারতের একটি পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র।
✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
১. নগ্নীভবন কীভাবে ঘটে?
উত্তর: নগ্নীভবন ঘটে যখন শিলা প্রাকৃতিক উপাদানের প্রভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এটি মূলত তাপমাত্রার পরিবর্তন, জল, বায়ু ও জীবজন্তুর ক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই প্রক্রিয়ায় শিলা ক্ষয়ে মাটি ও বালুকণায় পরিণত হয়।
২. অপসূর ও অনুসূর অবস্থান কাকে বলে?
উত্তর: অপসূর অবস্থান হল যখন পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে (প্রায় ১৫২ মিলিয়ন কিমি) থাকে। অনুসূর অবস্থান হল যখন পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছে (প্রায় ১৪৭ মিলিয়ন কিমি) অবস্থান করে। এই অবস্থান পরিবর্তন পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথের কারণে ঘটে।
৩. পেনিপ্লেন বা সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে?
উত্তর: পেনিপ্লেন হল একটি প্রায় সমতলভূমি, যা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষয়ের ফলে গঠিত হয়। এটি মূলত প্রাচীন পাহাড় বা উঁচু ভূমির দীর্ঘকালীন ক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা একটি উদাহরণ।
৪. যান্ত্রিক আবহবিকার কোন্ জলবায়ুতে অধিক কার্যকরী?
উত্তর: যান্ত্রিক আবহবিকার প্রধানত শুষ্ক ও মরুভূমি জলবায়ুতে বেশি কার্যকরী হয়। এই অঞ্চলে দিনের ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্য বেশি থাকার ফলে শিলা দ্রুত ভেঙে যায়। সাহারা মরুভূমি ও থর মরুভূমিতে এই প্রক্রিয়া স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
৫. পৃথিবীর সর্বত্র সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত একসময় হয় না কেন?
উত্তর: পৃথিবী নিজ অক্ষে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘূর্ণন করে বলে বিভিন্ন স্থানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় ভিন্ন হয়। গোলাকার আকৃতির কারণে সব স্থানে সূর্যের আলো একই সময়ে পৌঁছায় না। এ কারণেই এক দেশেও বিভিন্ন অঞ্চলে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় পরিবর্তিত হয়।
৬. পর্বতবেষ্টিত মালভূমি কাকে বলে?
উত্তর: যে মালভূমির চারপাশ পর্বতশ্রেণি দ্বারা ঘেরা থাকে তাকে পর্বতবেষ্টিত মালভূমি বলে। এই ধরনের মালভূমি সাধারণত ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের ফলে গঠিত হয়। তিব্বত মালভূমি এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
৭. রবিমার্গ কাকে বলে?
উত্তর: রবিমার্গ হল সূর্যের আপাত বার্ষিক গতিপথ, যা পৃথিবীর কক্ষপথের কারণে বিভিন্ন নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে। এটি পৃথিবীর কক্ষপথের উল্লম্ব কোণের কারণে তৈরি হয়। এই পথকে ক্রান্তিবলয় অঞ্চলেও অনুভব করা যায়।
৮. দিগন্তরেখা কাকে বলে?
উত্তর: দিগন্তরেখা হল সেই কাল্পনিক রেখা যেখানে আকাশ ও ভূমি বা জলরাশি মিলিত হয়েছে বলে মনে হয়। বাস্তবে এটি দৃষ্টির সীমাবদ্ধতার কারণে দেখা যায়। সমুদ্রে বা বিশাল সমতলে এটি স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়।
৯. ভারতের সম্ভাবনাময় তৈল ক্ষেত্রগুলির নাম লেখো।
উত্তর: ভারতের প্রধান তৈল ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে দিগবৈল (অসম), আঁকleshwar (গুজরাট), এবং বারমের (রাজস্থান) উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও মুম্বাই উপকূলে অবস্থিত বোম্বে হাই ভারতের বৃহত্তম অফশোর তেলক্ষেত্র। এই ক্ষেত্রগুলো ভারতের জ্বালানি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১০. NTPC কী?
উত্তর: NTPC (National Thermal Power Corporation) হল ভারতের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা। এটি মূলত কয়লা ও গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিচালনা করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে NTPC-এর বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, যা ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১১. অপ্রচলিত শক্তি বলতে কী বোঝো?
উত্তর: অপ্রচলিত শক্তি হল এমন শক্তির উৎস, যা প্রথাগত জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ, জিওথার্মাল শক্তি, ও বায়োগ্যাস অন্তর্ভুক্ত। এই শক্তিগুলি নবীকরণযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব বলে গুরুত্বপূর্ণ।
১২. ‘কয়লা সম্পদ নয়, কয়লার কার্যকারিতাই হল সম্পদ' – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কয়লা নিজে কোনো উপযোগিতা সৃষ্টি করে না, বরং এর ব্যবহারিক কার্যকারিতাই একে মূল্যবান সম্পদে পরিণত করে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, ইস্পাত ও সিমেন্ট শিল্পে কয়লার ব্যবহার একে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। তাই কয়লার প্রকৃত মূল্য নির্ভর করে তার ব্যবহারযোগ্যতার ওপর।
১৩. “আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা” কাকে বলে?
উত্তর: আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা হল প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করা ১৮০° দ্রাঘিমারেখার কাল্পনিক রেখা, যা সময় পরিবর্তনের ভিত্তিতে একদিনের পার্থক্য নির্ধারণ করে। এই রেখা অতিক্রম করলে ক্যালেন্ডারের তারিখ একদিন এগিয়ে বা পিছিয়ে যায়। এটি বিশ্বব্যাপী সময় গণনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
১৪. সূর্যের দৈনিক আপাতগতি কাকে বলে?
উত্তর: সূর্যের দৈনিক আপাতগতি বলতে সেই দৃশ্যমান গতি বোঝায়, যেখানে মনে হয় সূর্য পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে সরছে। আসলে এটি পৃথিবীর নিজ অক্ষে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘূর্ণনের ফলে ঘটে।
১৫. দিগন্তরেখা কাকে বলে?
উত্তর: দিগন্তরেখা হল সেই কাল্পনিক রেখা, যেখানে ভূমি বা জলরাশি আকাশের সঙ্গে মিলিত হয়েছে বলে মনে হয়। এটি আসলে দৃষ্টিসীমার একটি ভ্রমমাত্র, যা সমতল অঞ্চলে বা সমুদ্রে আরও স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
১৬. কয়লাকে 'কালোহিরে' বলা হয় কেন?
উত্তর: কয়লা অত্যন্ত শক্তিশালী জ্বালানি, যা উচ্চ পরিমাণে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম। শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ইস্পাত তৈরিতে এর ব্যাপক ব্যবহার একে অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত মূল্যবান করেছে। এজন্য কয়লাকে ‘কালোহিরে’ বলা হয়।
১৭. অভ্রের দুটি আকরিকের নাম লেখো।
উত্তর: অভ্রের দুটি প্রধান আকরিক হল মাস্কোভাইট ও বায়োটাইট। এগুলি বিদ্যুৎ নিরোধক, কাচ ও সিরামিক শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১৮. পৃথিবীর মধ্যভাগ স্ফীত ও মেরুদেশ চাপা কেন?
উত্তর: পৃথিবী নিজের অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণন করার কারণে বিষুব অঞ্চলে কেন্দ্রাতিগ বল বেশি কাজ করে, ফলে মধ্যভাগ স্ফীত হয়। অন্যদিকে, মেরু অঞ্চলে এই বল কম থাকায় তারা সংকুচিত থাকে। এজন্য পৃথিবীর আকৃতি পুরোপুরি গোলাকার নয়, বরং কিছুটা চ্যাপ্টা।
১৯. পৃথিবীর কক্ষপথে ২১ মার্চ কীরকম পরিস্থিতির উদ্ভব হয়?
উত্তর: ২১ মার্চ দিনটিকে বিষুব দিবস বলা হয়, কারণ এদিন সূর্যের লম্বভাবে কিরণ ঠিক বিষুবরেখার উপর পড়ে। ফলে পৃথিবীর সব স্থানে দিন ও রাত সমান হয়, এবং এটি উত্তর গোলার্ধে বসন্ত ও দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎ ঋতুর সূচনা করে।
২০. ‘আন্তর্জাতিক তারিখরেখা' কোথায় কোথায় কেন বাঁকানো হয়েছে?
উত্তর: আন্তর্জাতিক তারিখরেখা সাধারণত ১৮০° দ্রাঘিমারেখা অনুসরণ করে, তবে বেরিং প্রণালী, ফিজি দ্বীপপুঞ্জ ও টোঙ্গা দ্বীপের কাছে এটি বাঁকানো হয়েছে। এর কারণ হলো, একই দেশের বিভিন্ন অংশে তারিখের পার্থক্য এড়ানো এবং প্রশাসনিক জটিলতা কমানো।
২১. বেডফোর্ড লেভেল পরীক্ষাটি কীভাবে প্রমাণ করেছিল যে, ‘পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার'?
উত্তর: ১৮৩৮ সালে চালানো বেডফোর্ড লেভেল পরীক্ষায় একটি দীর্ঘ সোজা খালের উপর একটি নৌকা ও একটি দূরবীক্ষণ ব্যবহার করা হয়। পরীক্ষার ফলাফল দেখায় যে, দূরবর্তী বস্তু ক্রমশ নিচে ডুবে যাচ্ছে, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের বক্রতার প্রমাণ দেয়। এটি পৃথিবীর গোলাকার আকৃতির অন্যতম প্রাথমিক প্রমাণ ছিল।
২২. GPS পদ্ধতির যে-কোনো দুটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর:
১. অবস্থান নির্ণয়: GPS প্রযুক্তি সুনির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়, যা গাড়ি চালনা ও মোবাইল ম্যাপে ব্যবহৃত হয়।
২. জলবায়ু ও দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ: আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য GPS ব্যবহৃত হয়।
২৩. ছায়াবৃত্ত কী?
উত্তর: ছায়াবৃত্ত হল সেই কাল্পনিক রেখা, যা সূর্য, পৃথিবী ও পৃথিবীর ছায়ার মধ্যবর্তী স্থানকে সংযুক্ত করে। এটি চন্দ্রগ্রহণের সময় স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়, যখন চাঁদ পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে প্রবেশ করে।
২৪. ২১ জুন তারিখটিকে কী বলে ও কেন? এর অপর নাম কী?
উত্তর: ২১ জুন উত্তরায়ণ (Summer Solstice) নামে পরিচিত, কারণ এদিন সূর্য কর্কটক্রান্তির উপর লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং উত্তর গোলার্ধে বছরের দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত হয়। একে গ্রীষ্মকালীন অয়নান্ত দিবস ও বলা হয়।
২৫. গচ্ছিত ও অবাধ সম্পদের মধ্যে যে-কোনো দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
১. গচ্ছিত সম্পদ: এই সম্পদগুলির ব্যবহার সীমিত এবং সরকার বা নির্দিষ্ট সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন, যেমন- খনিজ সম্পদ।
২. অবাধ সম্পদ: এই সম্পদ সবার জন্য উন্মুক্ত, যেমন- বাতাস, সূর্যালোক, নদীর প্রবাহিত জল।
২৬. আঙ্কালেশ্বর ও কাম্বে অঞ্চলের খনিজ তৈল উত্তোলক অঞ্চলের নাম লেখো।
উত্তর:
১. আঙ্কালেশ্বর: গুজরাট রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ তেল ক্ষেত্র।
২. কাম্বে: গুজরাটের ক্যাম্বে উপসাগর অঞ্চলে অবস্থিত তেল উত্তোলন ক্ষেত্র।
২৬. পৃথিবীর আবর্তন গতি না থাকলে কী হত?
উত্তর: যদি পৃথিবীর আবর্তন গতি না থাকত, তাহলে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত থাকত এবং একদিকে চরম গরম, অন্যদিকে চরম ঠান্ডা দেখা দিত। এছাড়া, বায়ুমণ্ডলীয় প্রবাহ, মহাসাগরীয় স্রোত ও আবহাওয়ার স্বাভাবিক ধরণ সম্পূর্ণভাবে বদলে যেত।
২৭. পৃথিবী পৃষ্ঠকে সমতল মনে হয় কেন?
উত্তর: পৃথিবী প্রকৃতপক্ষে গোলাকার হলেও এর বিশাল ব্যাসার্ধের তুলনায় স্থানীয়ভাবে ভূমির বক্রতা খুবই সামান্য। ফলে দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চোখে এটি সমতল বলে মনে হয়।
২৮. সাগরসম্রাট কী?
উত্তর: সাগরসম্রাট হল ভারতীয় তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন (ONGC)-এর মালিকানাধীন একটি বৃহৎ ভাসমান তেলখনি খনন রিগ। এটি মূলত অফশোর (সমুদ্রের নিচে) তেল ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
২৯. স্থানীয় সময় ও প্রমাণ সময়ের পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
১. স্থানীয় সময়: এটি নির্দিষ্ট দ্রাঘিমারেখার উপর নির্ভর করে সূর্যের অবস্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
২. প্রমাণ সময়: এটি একটি নির্দিষ্ট দ্রাঘিমারেখা ধরে গড়ে নেওয়া হয়, যাতে একটি দেশ বা অঞ্চলের জন্য একক সময় নির্ধারিত হয়। যেমন, ভারতের প্রমাণ সময় ৮২°৩০′ পূর্ব দ্রাঘিমা অনুসারে নির্ধারিত।
৩৪. GPS সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: GPS (Global Positioning System) হল একটি উপগ্রহ-ভিত্তিক ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা, যা নির্দিষ্ট অবস্থান, গতি এবং সময় সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করে। এটি মূলত ২৪টি কৃত্রিম উপগ্রহ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সামরিক, পরিবহন, মানচিত্র নির্মাণ, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
৩৫. প্রতিপাদ স্থান কাকে বলে?
উত্তর: পৃথিবীর যে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের বিপরীত দিকে অবস্থিত স্থানকে প্রতিপাদ স্থান বলে। এটি নির্ণয়ের জন্য ১৮০° দ্রাঘিমাংশ ও ৯০° অক্ষাংশ পার্থক্য বিবেচনা করা হয়।
৩৬. টীকা লেখো: NTPC
উত্তর: NTPC (National Thermal Power Corporation) হল ভারতের একটি বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা। এটি মূলত তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে নিযুক্ত এবং নবায়নযোগ্য শক্তি উৎসের দিকেও সম্প্রসারিত হয়েছে।
৩৭. নিরপেক্ষ উপাদান কী?
উত্তর: যেসব রাসায়নিক পদার্থ সাধারণ অবস্থায় কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় না, তাদের নিরপেক্ষ উপাদান বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে নিষ্ক্রিয় গ্যাস (যেমন- হিলিয়াম, আর্গন) ও বিশুদ্ধ জল উল্লেখযোগ্য।
৩৮. OPEC সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
উত্তর: OPEC (Organization of the Petroleum Exporting Countries) হল একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যা প্রধানত তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করে। ১৯৬০ সালে গঠিত এই সংস্থার প্রধান লক্ষ্য হল বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও সদস্য দেশগুলোর উৎপাদন নীতি নির্ধারণ করা।
৩৯. ‘নিশীথ সূর্যের দেশ’ বলতে কী বোঝো?
উত্তর: উত্তর মেরু অঞ্চলের দেশগুলোতে গ্রীষ্মকালে কিছু সময় সূর্য দীর্ঘ সময় অস্ত যায় না, ফলে রাতেও আলো থাকে। এই দেশগুলোকে ‘নিশীথ সূর্যের দেশ’ বলা হয়, যেমন- নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড।
৪০. পৃথিবীর কোন্ স্থানে সারাবছর শীতকাল ও কোন্ স্থানে সারাবছর গ্রীষ্মকাল দেখা যায়?
উত্তর: পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে (উত্তর ও দক্ষিণ মেরু) সারাবছর শীতকাল দেখা যায়, কারণ সেখানে সূর্যের কিরণ তির্যকভাবে পড়ে এবং তাপমাত্রা অত্যন্ত কম থাকে। বিপরীতে, বিষুবরেখা অঞ্চলে (যেমন- ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, উগান্ডা) সারাবছর গ্রীষ্মকাল থাকে, কারণ এখানে সূর্যের কিরণ লম্বভাবে পড়ে ও তাপমাত্রা বেশি থাকে।
৪১. প্রচলিত শক্তি উৎসের দুটি সুবিধা লেখো।
উত্তর:
১. প্রচলিত শক্তি উৎস (যেমন- কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস) সহজলভ্য এবং বিশ্বব্যাপী প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
২. এই শক্তি উৎসগুলি থেকে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করা সম্ভব, যা শিল্প, পরিবহন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪২. কোনো বস্তুর ওজন নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চলে বেশি হওয়ার কারণ কী?
উত্তর: পৃথিবী ঘূর্ণায়মান হওয়ার ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চলে কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব বেশি থাকে, যা বস্তুদের ওজন কিছুটা হ্রাস করে। অন্যদিকে, মেরু অঞ্চলে এই কেন্দ্রাতিগ বল প্রায় নেই এবং পৃথিবীর অভিকর্ষ বল তুলনামূলকভাবে বেশি কাজ করে, তাই বস্তুগুলোর ওজন সেখানে বেশি হয়।
৪৩. জিয়ডের উল্লেখযোগ্য দুটি বৈশিষ্ট্য কী কী?
উত্তর:
১. জিয়ড হল একটি ফাঁপা, গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির শিলা, যার অভ্যন্তরে স্ফটিকের স্তর থাকে।
২. এটি সাধারণত আগ্নেয় ও পাললিক শিলার মধ্যে গঠিত হয় এবং এর অভ্যন্তরীণ অংশে কোয়ার্টজ, ক্যালসাইট বা অন্য খনিজের স্ফটিক থাকতে পারে।
৪৪. বামন গ্রহ কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর:
যেসব গ্রহ তাদের নিজ কক্ষপথের অন্যান্য বস্তুকে পরিত্যাগ করতে ব্যর্থ হয় এবং মূল গ্রহের মতো বড় নয়, তাদের বামন গ্রহ (Dwarf Planet) বলা হয়।
উদাহরণ: প্লুটো, ইরিস, মাকিমাকি, হাউমিয়া, সেরেস।
৪৫. কোক কয়লা কী?
উত্তর:
কোক কয়লা হল একটি উচ্চ-কার্বনযুক্ত শক্ত কয়লা, যা মূলত লোহা ও ইস্পাত শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এটি বাতাসের অনুপস্থিতিতে কয়লার তাপীয় বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তৈরি করা হয়, ফলে এতে উচ্চ তাপমাত্রা উৎপাদনের ক্ষমতা থাকে এবং ধোঁয়া কম হয়।
৪৬. ভারতের কোথায় কোথায় খনিজ তেল শোধনাগার অবস্থিত?
উত্তর:
ভারতে খনিজ তেল শোধনাগারগুলি প্রধানত নিম্নলিখিত স্থানে অবস্থিত:
১. গুজরাট - জামনগর, কয়লি
২. আসাম - ডিগবয়, নুমালীগড়, বঙ্গাইগাঁও
৩. মহারাষ্ট্র - মুম্বাই
৪. পশ্চিমবঙ্গ - হলদিয়া
৫. উত্তরপ্রদেশ - মথুরা
৬. তামিলনাড়ু - মণালি (চেন্নাই)
৭. বিহার - বরৌনি
৪৭. অয়নান্ত দিবস বলতে কী বোঝো?
উত্তর:
অয়নান্ত দিবস হল সেই বিশেষ দিন, যখন সূর্য কর্কটক্রান্তি (২১ জুন) বা মকরক্রান্তি (২২ ডিসেম্বর) রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ নিক্ষেপ করে। এই দিনগুলিতে নির্দিষ্ট গোলার্ধে দীর্ঘতম বা ক্ষুদ্রতম দিন ও রাত দেখা যায়।
৪৮. প্লুটয়েড কী?
উত্তর:
যেসব বামন গ্রহ নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে অবস্থান করে, তাদের প্লুটয়েড বলা হয়। এগুলো সূর্যের চারদিকে ঘুরলেও তাদের কক্ষপথের আশেপাশে অন্যান্য বস্তু উপস্থিত থাকে। উদাহরণ: প্লুটো, ইরিস, হাউমিয়া, মাকিমাকি।
৪৯. সম্ভাব্য সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর:
সম্ভাব্য সম্পদ হল সেইসব প্রাকৃতিক সম্পদ, যা নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিদ্যমান বলে অনুমান করা হয় কিন্তু এখনও ব্যবহার করা হয়নি বা উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। উদাহরণ: গভীর সমুদ্রে অবস্থিত খনিজ তেল ও গ্যাস, হিমালয়ের খনিজ সম্পদ।
৫০. জীবাশ্ম জ্বালানি কী?
উত্তর:
প্রাচীনকালে মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশেষ ভূগর্ভে চাপ ও তাপের কারণে কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসে পরিণত হয়, যেগুলিকে জীবাশ্ম জ্বালানি বলা হয়। এগুলি উচ্চ তাপশক্তিসম্পন্ন ও অপ্রচলিত শক্তি উৎসের অন্তর্ভুক্ত।
৫১. পৃথিবীর আবর্তন গতি আমরা অনুভব করি না কেন?
উত্তর:
আমরা পৃথিবীর আবর্তন গতি অনুভব করি না কারণ পৃথিবী ও তার বায়ুমণ্ডল একসঙ্গে একই গতিতে ঘুরছে, ফলে আমরা ও আমাদের চারপাশের সমস্ত কিছু একই হারে চলমান থাকায় আপেক্ষিকভাবে স্থির মনে হয়। এছাড়া, মহাকর্ষের প্রভাব আমাদের মাটির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত রাখে, তাই আমরা আবর্তন অনুভব করি না।
৫২. ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে বিজ্ঞানীরা আন্টার্কটিকা অভিযানে যান কেন?
উত্তর:
ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে আন্টার্কটিকায় গ্রীষ্মকাল থাকে, যখন তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম হিমশীতল থাকে এবং দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যালোক পাওয়া যায়, যা গবেষণা ও অনুসন্ধানের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। এছাড়া, এই সময় বরফ কিছুটা গলতে শুরু করায় গবেষকরা স্থল ও সামুদ্রিক পরিবেশ সহজে পরীক্ষা করতে পারেন।
৫৩. রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ বলতে কী বোঝো? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ পুনরুত্পাদিত হতে খুব দীর্ঘ সময় নেয় এবং মানুষের জীবনকালে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য হয় না, তাদের রুদ্ধ প্রবহমান সম্পদ বলা হয়। উদাহরণ: জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস)। এগুলো কোটি বছর ধরে তৈরি হলেও অতি দ্রুত ব্যবহৃত হচ্ছে, ফলে একবার শেষ হয়ে গেলে পুনরায় পাওয়া কঠিন।
৫৪. ভারতে খনিজ তেলের সম্ভাবনাময় অঞ্চলগুলির অবস্থান বর্ণনা করো।
উত্তর:
ভারতে খনিজ তেলের সম্ভাবনাময় অঞ্চলগুলি প্রধানত তিনটি প্রধান অঞ্চলে পাওয়া যায়:
১. পূর্বাঞ্চলীয় অববাহিকা – আসামের ডিগবয়, দুলিয়াজান, মারgherita অঞ্চল।
২. পশ্চিম উপকূল ও স্থলভাগ – গুজরাটের আনক্লেশ্বর, মেহসানা এবং মহারাষ্ট্রের মুম্বাই হাই।
৩. দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূল ও বঙ্গোপসাগর – তামিলনাড়ুর কুমারিকা উপকূল এবং কাঁভারী অববাহিকা।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
১. মালভূমি ও সমভূমির পার্থক্য লেখো।
বিষয় | মালভূমি | সমভূমি |
---|---|---|
সংজ্ঞা | উচ্চ ও সমতলভূমি, যা চারপাশের ভূমি থেকে উঁচু | নিচু ও বিস্তৃত সমতলভূমি |
উচ্চতা | সাধারণত ৩০০ মিটার বা তার বেশি | সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি |
উর্বরতা | তুলনামূলক কম উর্বর, কৃষির জন্য কম উপযোগী | নদীর পলিমাটির কারণে উর্বর ও কৃষির জন্য উপযোগী |
সম্পদ | খনিজ ও বনজ সম্পদ বেশি পাওয়া যায় | প্রধানত কৃষিনির্ভর অঞ্চল |
উদাহরণ | দাক্ষিণাত্য মালভূমি, ছোটা নাগপুর মালভূমি | গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র সমভূমি, সিন্ধু-গঙ্গা সমভূমি |
২. বার্ষিক গতির প্রমাণ দাও।
উত্তর:
১. পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তন ঘটে, যেমন গ্রীষ্ম, শীত, বর্ষা ও বসন্ত।
২. দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন বার্ষিক গতির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
৩. ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর বিষুব ঘটে এবং ২১ জুন ও ২২ ডিসেম্বর অয়নান্তর ঘটে।
৪. বার্ষিক গতির ফলে সূর্যের অবস্থান পরিবর্তিত হয় এবং বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রার তারতম্য দেখা যায়।
৫. পৃথিবীর বার্ষিক গতি আবহাওয়ার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলি লেখো।
উত্তর:
১. অতিবৃষ্টি ও প্রবল নদীপ্রবাহ মাটির ক্ষয়ের অন্যতম কারণ।
২. বন উজাড় হলে মাটির ধারণক্ষমতা কমে যায়, ফলে ক্ষয় হয়।
৩. অতিরিক্ত চাষাবাদ ও পশুচারণ মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয়।
৪. প্রবল বায়ুপ্রবাহ মরুভূমি অঞ্চলে মাটির ক্ষয় ঘটায়।
৫. ভূমিধস ও জলস্রোতের কারণে পাহাড়ি এলাকায় মৃত্তিকা ক্ষয়ের হার বেশি।
৪. পৃথিবী মানুষের আবাসস্থল রূপে গড়ে উঠেছে কেন?
উত্তর:
১. পৃথিবীর আবহাওয়া ও তাপমাত্রা মানুষের বসবাসের জন্য উপযুক্ত।
২. এখানে অক্সিজেন, পানি ও খাদ্য উৎপাদনের উপযোগী উর্বর মাটি আছে।
৩. পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য ভারসাম্য বজায় রাখে।
৪. ওজোন স্তর ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে।
৫. জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র মানুষের টিকে থাকার জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করেছে।
৫. অপ্রচলিত শক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি লেখো।
উত্তর:
১. অপ্রচলিত শক্তি যেমন সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তি পরিবেশবান্ধব।
২. এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য, তাই কখনও শেষ হবে না।
৩. একবার স্থাপন করলে এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কম হয়।
৪. জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমায়, যা শক্তির ভবিষ্যৎ সংকট এড়াতে সাহায্য করে।
৫. এটি নিরাপদ এবং জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ।
৬. অপ্রচলিত শক্তি ব্যবহারের চাহিদা বর্তমানে বেশি কেন?
উত্তর: অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, যা শক্তির সংকট তৈরি করছে। এটি পরিবেশবান্ধব এবং দূষণমুক্ত, ফলে বায়ুদূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সহায়ক। সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ শক্তি সহজলভ্য এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য, যা দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর। অপ্রচলিত শক্তির রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কম, তাই এটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। ভবিষ্যতে শক্তির চাহিদা মেটাতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৭. নক্ষত্র দিন অপেক্ষা সৌরদিনের সময় বেশি কেন?
উত্তর: নক্ষত্র দিন ও সৌরদিনের পার্থক্য পৃথিবীর বার্ষিক গতি এবং সূর্যের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে হয়। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে পরিভ্রমণ করায় প্রতিদিন সূর্যের আপাত অবস্থান সামান্য পরিবর্তিত হয়, যা সৌরদিনকে দীর্ঘতর করে। একটি নক্ষত্র দিনের সময় পরিমাপ করা হয় দূরবর্তী নক্ষত্রের অবস্থানের ভিত্তিতে, যা পৃথিবীর প্রকৃত ঘূর্ণন সময় নির্দেশ করে। সৌরদিন পরিমাপ করা হয় সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে, যা প্রতি দিনে প্রায় চার মিনিট বেশি হয়। এক নক্ষত্র দিনের সময় ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট, আর এক সৌরদিন ২৪ ঘণ্টা হওয়ায় সৌরদিন বেশি সময় নেয়।
৮. প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির পার্থক্য
বিষয় | প্রচলিত শক্তি | অপ্রচলিত শক্তি |
---|---|---|
উৎস | কয়লা, পেট্রোল, প্রাকৃতিক গ্যাস | সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈব শক্তি |
পরিবেশের প্রভাব | দূষণ সৃষ্টি করে | পরিবেশবান্ধব ও দূষণমুক্ত |
পুনর্নবীকরণযোগ্যতা | সীমিত পরিমাণে পাওয়া যায় | পুনর্নবীকরণযোগ্য ও সহজলভ্য |
৯. পৃথিবী অভিগত গোলক হল কেন?
উত্তর: পৃথিবী অভিগত গোলকের আকৃতি ধারণ করেছে তার ঘূর্ণনগতির কারণে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর মেরুগুলি সামান্য চ্যাপ্টা এবং নিরক্ষীয় অঞ্চল ফোলা থাকে। এটি নিউটনের গতিসূত্র অনুযায়ী ঘূর্ণনশীল বস্তুর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। পৃথিবীর ব্যাসার্ধ নিরক্ষীয় অঞ্চলে বেশি এবং মেরু অঞ্চলে কম হওয়ায় এটি পুরোপুরি গোলাকার না হয়ে অভিগত গোলকের আকার নিয়েছে।
১০. পৃথিবীর অক্ষ ৬৬½° কোণে হেলে থাকার ফল কী?
উত্তর: পৃথিবীর অক্ষ হেলে থাকার ফলে ঋতুচক্র সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময়ে সূর্যের কিরণ ভিন্নভাবে পড়ার কারণে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ঘটে। নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চলে দিনের ও রাতের পার্থক্য বেশি হয়। গ্রীষ্ম ও শীতকালে সূর্যের অবস্থান বদলানোর ফলে তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়। এটি বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চল এবং বৈচিত্র্যময় আবহাওয়া তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১১. স্থানীয় সময় ও প্রমাণ সময়ের পার্থক্য
বিষয় | স্থানীয় সময় | প্রমাণ সময় |
---|---|---|
সংজ্ঞা | নির্দিষ্ট স্থান থেকে সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে নির্ধারিত সময় | একটি নির্দিষ্ট দ্রাঘিমারেখার উপর ভিত্তি করে গৃহীত সময় |
ভিন্নতা | প্রতিটি দ্রাঘিমারেখার জন্য আলাদা হয় | নির্দিষ্ট সময় অঞ্চলের জন্য একরূপ থাকে |
উদাহরণ | কলকাতার স্থানীয় সময় ও দিল্লির স্থানীয় সময় আলাদা | ভারতের প্রমাণ সময় (IST) ৮২.৫° পূর্ব দ্রাঘিমারেখার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত |
১২. অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়ছে কেন?
উত্তর: অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে কারণ এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব। জীবাশ্ম জ্বালানি সীমিত এবং এটি ব্যাপক দূষণের কারণ হয়, তাই বিকল্প শক্তির প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। সৌর, বায়ু, জল ও জৈবশক্তি সহজলভ্য এবং দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী। অপ্রচলিত শক্তির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় কম এবং এটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়ক। এই শক্তির ব্যবহার টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
১৩. সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন কাকে বলে?
উত্তর:
সূর্যের উত্তরায়ণ এবং দক্ষিণায়ন হলো পৃথিবীর বার্ষিক গতির ফলে সূর্যের আপাত অবস্থানের পরিবর্তন।
-
উত্তরায়ণ: প্রতি বছর ২২ ডিসেম্বর সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার দিকে সরতে থাকে এবং ২১ জুন কর্কটক্রান্তি রেখার ঠিক উপরে অবস্থান করে। এই অবস্থান পরিবর্তনকে সূর্যের উত্তরায়ণ বলে।
-
দক্ষিণায়ন: ২১ জুনের পর সূর্য ক্রমশ দক্ষিণ দিকে সরতে থাকে এবং ২২ ডিসেম্বর মকরক্রান্তি রেখার উপর অবস্থান করে। এই অবস্থান পরিবর্তনকে সূর্যের দক্ষিণায়ন বলে।
১৪. সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাগুলি লেখো।
উত্তর:
সম্পদ সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রাকৃতিক সম্পদ সীমিত এবং অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
-
প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সম্পদ সংরক্ষণ অপরিহার্য।
-
জীবাশ্ম জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের সীমিত মজুতের কারণে এগুলোর ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত করা জরুরি।
-
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশদূষণ কমাতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
-
কৃষিজমি, বনভূমি ও পানির সংরক্ষণ করলে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা পাবে।
-
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও পুনঃব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
১৫. অপসূর ও অনুসূর অবস্থান-এর পার্থক্য
বিষয় | অপসূর (Aphelion) | অনুসূর (Perihelion) |
---|---|---|
সংজ্ঞা | যখন পৃথিবী সূর্য থেকে সর্বাধিক দূরত্বে থাকে | যখন পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে |
সময় | প্রতি বছর ৪ জুলাই | প্রতি বছর ৩ জানুয়ারি |
দূরত্ব | প্রায় ১৫২.১ মিলিয়ন কিমি | প্রায় ১৪৭.১ মিলিয়ন কিমি |
সূর্যের আকৃতি | সূর্য ছোট দেখায় | সূর্য তুলনামূলক বড় দেখায় |
তাপমাত্রার প্রভাব | সূর্য দূরে থাকলেও উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল থাকে | সূর্য কাছাকাছি থাকলেও উত্তর গোলার্ধে শীতকাল থাকে |
অপসূর ও অনুসূর অবস্থান চিত্র:
(চিত্র যোগ করুন: পৃথিবীর কক্ষপথে সূর্যের চারপাশে ঘূর্ণনের সময় অপসূর ও অনুসূর অবস্থানের চিত্র)
১৬. উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালের স্থায়িত্ব দক্ষিণ গোলার্ধের গ্রীষ্মকাল অপেক্ষা বেশি হয় কেন?
উত্তর: উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালের স্থায়িত্ব দক্ষিণ গোলার্ধের তুলনায় বেশি হওয়ার প্রধান কারণ পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ এবং তার কক্ষীয় গতি। যখন পৃথিবী অপসূর অবস্থানে থাকে, অর্থাৎ সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে, তখন তার গতি ধীর হয়ে যায়। এই সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল চলতে থাকে, ফলে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ঘটে যখন পৃথিবী সূর্যের কাছাকাছি অনুসূর অবস্থানে থাকে, এবং সে সময় পৃথিবীর গতি দ্রুত হয়ে যায়, ফলে গ্রীষ্মকাল তুলনামূলকভাবে কম স্থায়ী হয়। এছাড়া, দক্ষিণ গোলার্ধে বিশাল সমুদ্রভাগ থাকায় গ্রীষ্মের প্রভাব কিছুটা কম অনুভূত হয়। এই কারণগুলোর ফলে উত্তর গোলার্ধের গ্রীষ্মকাল দক্ষিণ গোলার্ধের গ্রীষ্মকালের চেয়ে বেশি দিন স্থায়ী হয়।
১৭. এরাটোসথেনিস কীভাবে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেছিলেন?
উত্তর: এরাটোসথেনিস খ্রিস্টপূর্ব ২৪০ সালে প্রথম বিজ্ঞানসম্মতভাবে পৃথিবীর পরিধি পরিমাপ করেন। তিনি লক্ষ করেন যে, মিশরের সিয়েন (বর্তমান আসওয়ান) শহরে ২১ জুন দুপুরবেলায় সূর্য ঠিক মাথার ওপরে থাকে এবং কূপের তলায় কোনো ছায়া পড়ে না। কিন্তু একই দিনে আলেকজান্দ্রিয়াতে একটি লম্ব দণ্ডের ছায়া পড়ে এবং তিনি মাপেন যে ছায়ার কোণ ৭.২°। তিনি অনুমান করেন যে এই ছায়ার কোণ পুরো পৃথিবীর ৩৬০° এর একটি ক্ষুদ্র অংশ। আলেকজান্দ্রিয়া ও সিয়েনের মধ্যবর্তী দূরত্ব ছিল ৮০০ কিমি, যা তিনি ৭.২°-এর ভিত্তিতে গুণ করে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেন। তার গণনা অনুযায়ী পৃথিবীর পরিধি দাঁড়ায় ৪০,০০০ কিমি, যা আধুনিক পরিমাপের (৪০,০৭৫ কিমি) প্রায় কাছাকাছি ছিল।
১৮. অপ্রচলিত শক্তি সম্পদের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি কেন?
উত্তর: অপ্রচলিত শক্তি সম্পদের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি কারণ এটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব। জীবাশ্ম জ্বালানির মজুদ সীমিত এবং এটি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, তাই বিকল্প শক্তির উৎস প্রয়োজন। সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ ও জৈবশক্তি পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বায়ুদূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হয়, যেখানে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে। এছাড়া, এটি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও শিল্পের টেকসই উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১৯. জলবিদ্যুতের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম হয় কেন?
উত্তর: জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ তুলনামূলকভাবে কম কারণ একবার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হলে এটি দীর্ঘ সময় কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এটি জ্বালানির উপর নির্ভর করে না, কারণ জলের প্রবাহ স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কম এবং জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় অপারেশন খরচও কম হয়। এছাড়া, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের সহায়তা দেয়, যা কৃষি উৎপাদনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব কারণেই জলবিদ্যুতের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে।
২০. মেরু অঞ্চলে ছ'মাস দিন ও ছ'মাস রাত হয় কেন?
উত্তর:
পৃথিবীর অক্ষ ২৩½° কোণে হেলানো থাকার কারণে মেরু অঞ্চলে ছ'মাস দিন ও ছ'মাস রাত হয়। যখন উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল হয়, তখন উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে, ফলে এখানে টানা ছ'মাস সূর্যের আলো পড়ে এবং দিন স্থায়ী হয়। এই সময়ে দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে বিপরীত দিকে থাকে, ফলে সেখানে ছ'মাস রাত হয়। আবার, শীতকালে দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকে যায়, তখন দক্ষিণ মেরুতে ছ'মাস দিন ও উত্তর মেরুতে ছ'মাস রাত থাকে। এই কারণে মেরু অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে দিন ও রাত স্থায়ী হয়।
২১. সম্পদ সৃষ্টিকারী উপাদানগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:
সম্পদ সৃষ্টিতে প্রধানত প্রাকৃতিক, মানব ও প্রযুক্তিগত উপাদান ভূমিকা রাখে।
প্রাকৃতিক উপাদানগুলির মধ্যে ভূমি, পানি, খনিজ, বায়ু ও জৈবসম্পদ অন্তর্ভুক্ত, যা কাঁচামাল ও শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মানব সম্পদ হল মানুষের শ্রম, দক্ষতা ও মেধা, যা সম্পদের যথাযথ ব্যবহার ও উন্নয়নে সহায়ক।
প্রযুক্তিগত উপাদান, যেমন বিজ্ঞান ও যন্ত্রপাতির উন্নয়ন, সম্পদের ব্যবহারকে আরও কার্যকর ও উৎপাদনশীল করে তোলে।
এই উপাদানগুলির সমন্বয়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বস্তু অর্থনৈতিক মূল্যের সম্পদে রূপান্তরিত হয়।
২২. বর্তমানে অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণগুলি কী কী?
উত্তর:
বর্তমানে অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে কারণ এটি পরিবেশবান্ধব, পুনর্নবীকরণযোগ্য এবং জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় টেকসই।
জীবাশ্ম জ্বালানির মজুদ সীমিত ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে, ফলে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈবশক্তি ও জলবিদ্যুৎ ব্যবহারের চাহিদা বাড়ছে।
অচিরাচরিত শক্তি ব্যবহারের ফলে বায়ুদূষণ ও কার্বন নির্গমন কম হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সহায়ক।
শিল্প, কৃষি ও গৃহস্থালির বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের জন্য বিকল্প শক্তির ব্যবহার জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন সরকার ও সংস্থা এই শক্তির প্রচার ও ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান করছে, যা এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে।
২৩. রাঢ় অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর:
রাঢ় অঞ্চল পশ্চিমবঙ্গের একটি পুরাতন লালভূমি অঞ্চল, যার ভূপ্রকৃতি বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
এই অঞ্চলের ভূমি সাধারণত লাল বা ল্যাটেরাইট মাটির হয়, যা আয়রন অক্সাইড সমৃদ্ধ।
এখানে ছোট ছোট পাহাড়, টিলা ও অসমতল ভূমির আধিক্য দেখা যায়, যা এই অঞ্চলের ভূপ্রকৃতিকে অনন্য করে তুলেছে।
নদীগুলি খরস্রোতা এবং বর্ষাকালে জলপ্রবাহ বৃদ্ধি পেলেও শুষ্ক মৌসুমে অনেক নদী জলশূন্য হয়ে যায়।
বনভূমির আধিক্য থাকলেও কৃষিক্ষেত্রে জলসংকটের সমস্যা রয়েছে, যা চাষাবাদকে সীমিত করে।
২৪. প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির পার্থক্য লেখো।
বিষয় | প্রচলিত শক্তি | অপ্রচলিত শক্তি |
---|---|---|
উৎস | জীবাশ্ম জ্বালানি, যেমন কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস | সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈবগ্যাস, ভূতাপীয় শক্তি |
পুনর্নবীকরণযোগ্যতা | সীমিত পরিমাণে পাওয়া যায় ও শেষ হয়ে যেতে পারে | পুনর্নবীকরণযোগ্য, অনন্তকাল ব্যবহার করা যায় |
পরিবেশের প্রভাব | দূষণ সৃষ্টি করে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয় | পরিবেশবান্ধব, দূষণ কম হয় |
২৫. বণ্টন অনুসারে সম্পদের শ্রেণিবিভাগ করে উদাহরণ দাও।
উত্তর:
বণ্টনের ভিত্তিতে সম্পদ তিন প্রকার—
স্থানীয় সম্পদ: নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ, যেমন সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন।
জাতীয় সম্পদ: একটি দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত সম্পদ, যেমন ভারতের কয়লাখনি।
আন্তর্জাতিক সম্পদ: কোনো নির্দিষ্ট দেশের আওতায় পড়ে না, যেমন সমুদ্রের আন্তর্জাতিক জলসীমার খনিজ সম্পদ।
২৬. অপসূর ও অনুসূর অবস্থানের পার্থক্য লেখো।
বিষয় | অপসূর | অনুসূর |
---|---|---|
সংজ্ঞা | যখন পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে | যখন পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকে |
দূরত্ব | প্রায় ১৫২ মিলিয়ন কিমি | প্রায় ১৪৭ মিলিয়ন কিমি |
সময় | প্রতি বছর ৪ জুলাই | প্রতি বছর ৩ জানুয়ারি |
২৭. GPS-এর ব্যবহার লেখো।
উত্তর:
GPS (Global Positioning System) হল উপগ্রহভিত্তিক ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা যা অবস্থান নির্ণয়, দিকনির্দেশনা এবং মানচিত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি মোবাইল ফোন, যানবাহন, সামরিক কার্যক্রম, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিমান চলাচল, সমুদ্র নৌপরিবহন ও উদ্ধার অভিযানে GPS অপরিহার্য।
২৮. সৌরজগতের অন্তর্ভাগের গ্রহ ও বহির্ভাগের গ্রহের তিনটি পার্থক্য লেখো।
বিষয় | অন্তর্ভাগের গ্রহ | বহির্ভাগের গ্রহ |
---|---|---|
অবস্থান | সূর্যের কাছাকাছি | সূর্য থেকে দূরে |
গঠন | কঠিন পাথুরে পৃষ্ঠ | গ্যাসীয় ও বৃহৎ আকৃতির |
উদাহরণ | বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল | বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন |
২৯. বিজ্ঞানীরা ডিসেম্বর মাসে আন্টার্কটিকা অভিযানে যান কেন?
উত্তর:
ডিসেম্বর মাসে আন্টার্কটিকায় গ্রীষ্মকাল থাকে, তাই দিনের আলো দীর্ঘ সময় থাকে, যা গবেষণার জন্য সুবিধাজনক। এই সময় আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে অনুকূল থাকে এবং বরফ গলতে শুরু করে, ফলে পরিবেশগত গবেষণা করা সহজ হয়। বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তন, মহাদেশের প্রাণীজগৎ ও বরফের গঠন নিয়ে গবেষণা করতে যান।
৩০. আন্তর্জাতিক তারিখের প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর:
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা সময় গণনার ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন সময় অঞ্চল থাকায় দিন ও তারিখ সঠিকভাবে নির্ধারণের জন্য এই রেখার প্রয়োজন হয়। এটি বিশেষভাবে বাণিজ্য, পর্যটন, মহাকাশ গবেষণা ও বিশ্বব্যাপী সমন্বয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩১. 'পৃথিবীর আকার পৃথিবীর মতো' – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: পৃথিবীর আকারকে সাধারণত ভৌগোলিকভাবে ভূ-গোলক (Geoid) বলা হয়। এটি নিখুঁত গোলাকার নয়, বরং মেরু অঞ্চলে সামান্য চাপা এবং বিষুবরেখার কাছে স্ফীত। পৃথিবীর নিজস্ব অভিকর্ষ এবং ঘূর্ণনের কারণে এই আকৃতি তৈরি হয়েছে। এই আকার কেবলমাত্র পৃথিবীরই দেখা যায়। অর্থাৎ পৃথিবীর আকার পৃথিবীর মতো। এই আকৃতির ফলে নক্ষত্রগ্রহগুলির কক্ষপথ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এবং মানচিত্র প্রক্ষেপণের সময় কিছু সংশোধন করতে হয়।
৩২. অপসূর ও অনুসূরের পার্থক্য লেখো।
বিষয় | অপসূর | অনুসূর |
---|---|---|
সংজ্ঞা | যখন পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে | যখন পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকে |
দূরত্ব | প্রায় ১৫২ মিলিয়ন কিমি | প্রায় ১৪৭ মিলিয়ন কিমি |
সময় | প্রতি বছর ৪ জুলাই | প্রতি বছর ৩ জানুয়ারি |
৩৩. সম্পদ সৃষ্টির উপাদানগুলি সম্পর্কে লেখো।
উত্তর:
সম্পদ গঠনের জন্য তিনটি মূল উপাদান গুরুত্বপূর্ণ—
প্রকৃতি: প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন জল, খনিজ পদার্থ, মাটি ও বন সম্পদ তৈরির ভিত্তি।
মানবশ্রম: মানুষের দক্ষতা, শ্রম ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান সম্পদ ব্যবহারের উপযোগিতা নির্ধারণ করে।
প্রযুক্তি: আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কাঁচামালকে সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব, যা শিল্প ও অর্থনীতির বিকাশ ঘটায়।
৩৪. কয়লার ব্যবহারগুলি লেখো।
উত্তর:
কয়লা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে, ইস্পাত ও সিমেন্ট শিল্পে, রান্নার জ্বালানি হিসেবে, রাসায়নিক পদার্থ তৈরি এবং কিছু ক্ষেত্রে তরল জ্বালানিতে রূপান্তরিত করতেও ব্যবহৃত হয়। কয়লা এখনো শিল্পোন্নত দেশগুলির শক্তির অন্যতম প্রধান উৎস।
৩৫. পৃথিবীর আবর্তন ও পরিক্রমণ গতির পার্থক্য লেখো।
বিষয় | আবর্তন গতি | পরিক্রমণ গতি |
---|---|---|
সংজ্ঞা | পৃথিবীর নিজ অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণন | সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি |
সময় | ২৪ ঘণ্টায় একবার সম্পন্ন হয় | ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টায় একবার সম্পন্ন হয় |
ফলাফল | দিন-রাতের সৃষ্টি হয় | ঋতু পরিবর্তন ও বছরের গঠন হয় |
৩৬. চিরাচরিত ও অচিরাচরিত শক্তির পার্থক্য লেখো।
বিষয় | চিরাচরিত শক্তি | অচিরাচরিত শক্তি |
---|---|---|
উৎস | প্রাকৃতিকভাবে সীমিত ও পুনর্নবীকরণ অযোগ্য | প্রাকৃতিকভাবে পুনর্নবীকরণযোগ্য |
উদাহরণ | কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস | সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈব শক্তি |
পরিবেশ প্রভাব | পরিবেশ দূষণ করে | পরিবেশবান্ধব |
৩৭. টীকা লেখো : সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি।
উত্তর:
সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বলতে সেই দৃশ্যমান গতিকে বোঝায়, যেখানে সূর্যকে প্রতি বছর ২১ মার্চ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্রান্তি রেখাগুলির মধ্যে চলমান মনে হয়। এটি মূলত পৃথিবীর পরিক্রমণ গতি ও তার অক্ষের ২৩½° হেলনের ফলে ঘটে। এই গতি উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন নামে পরিচিত, যা ঋতু পরিবর্তনের জন্য দায়ী।
৩৮. কর্কটসংক্রান্তি ও মকরসংক্রান্তি-এর মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করো।
বিষয় | কর্কটসংক্রান্তি | মকরসংক্রান্তি |
---|---|---|
তারিখ | প্রতি বছর ২১ জুন | প্রতি বছর ২২ ডিসেম্বর |
সূর্যের অবস্থান | সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর অবস্থান করে | সূর্য মকরক্রান্তি রেখার উপর অবস্থান করে |
দিনের দৈর্ঘ্য | উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন | দক্ষিণ গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন |
৩৯. ভূ-অবস্থানিক ব্যবস্থার (GPS) তিনটি প্রয়োগ উল্লেখ করো।
উত্তর:
ভূ-অবস্থানিক ব্যবস্থা (GPS) বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি নেভিগেশনে ব্যবহৃত হয়, যা বিমান, জাহাজ ও যানবাহনের সঠিক অবস্থান নির্ধারণে সহায়তা করে। এছাড়া, জরিপ ও মানচিত্র প্রণয়নে GPS প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। উদ্ধার ও বিপর্যয় মোকাবিলায়ও GPS-এর মাধ্যমে দ্রুত সঠিক স্থানের সন্ধান পাওয়া সম্ভব।
৪০. উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশের তুলনা করো।
বিষয় | উত্তর ভারত | দক্ষিণ ভারত |
---|---|---|
প্রধান নদী | গঙ্গা, যমুনা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র | গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, পেরিয়ার |
ভূপ্রকৃতি | পর্বত ও উচ্চভূমির কারণে জলপ্রবাহ বেশি | মালভূমি ও ঢালু ভূমির কারণে জলধারণ ক্ষমতা কম |
মৌসুমি বৃষ্টিপাত | হিমবাহ ও মৌসুমি বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল | প্রধানত বর্ষার সময় বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভরশীল |
৪১. পৃথিবীর পরিক্রমণ বেগ কীভাবে নির্ণয় করা হয় ? পরিক্রমণ কক্ষপথের বিভিন্ন অবস্থানে পৃথিবীর গতিবেগ ভিন্ন হয় কীভাবে বোঝায় ?
উত্তর:
পৃথিবীর পরিক্রমণ বেগ নির্ণয়ের জন্য কক্ষপথের পরিধি ও পরিক্রমণ সময়কে বিবেচনা করা হয়।
পরিক্রমণ বেগ = কক্ষপথের পরিধি ÷ পরিক্রমণ সময়
প্রায় ৯৪ কোটি কিমি পরিধি বিশিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবী ৩৬৫ দিনে পরিক্রমণ করে, ফলে গড় পরিক্রমণ বেগ প্রায় ৩০ কিমি/সেকেন্ড হয়।
কিন্তু পৃথিবীর কক্ষপথ সম্পূর্ণ বৃত্তাকার নয়, বরং উপবৃত্তাকার। ফলে, সূর্যের নিকটে (অনুসূর) গতিবেগ বেশি এবং দূরে (অপসূর) গতিবেগ কম হয়। এটি কেপলারের গতি সূত্র দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়।
৪২. পৃথিবীর তিনটি স্বকীয় বা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
পৃথিবীর নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো – এটি একটি অভিগত গোলক আকৃতির গ্রহ, যার নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণ শক্তি রয়েছে। এটি নিজের অক্ষের চারদিকে আবর্তন করে, যার ফলে দিন ও রাতের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিক্রমণ করে, যা ঋতু পরিবর্তনের জন্য দায়ী।
৪৩. ঋতু পরিবর্তনের তিনটি কারণ লেখো।
উত্তর:
ঋতু পরিবর্তনের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে –
পৃথিবীর অক্ষ ২৩½° কোণে হেলে থাকার ফলে বিভিন্ন সময় সূর্যের আলো ভিন্নভাবে পড়ে। পৃথিবীর বার্ষিক পরিক্রমণ বিভিন্ন ঋতুর সৃষ্টি করে। এছাড়া, কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখার অবস্থানের কারণে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে আলোর পরিবর্তন ঘটে, যা ঋতু পরিবর্তনে প্রভাব ফেলে।
৪৪. পূর্ব ভারতে বেশি সংখ্যায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে কেন?
উত্তর:
পূর্ব ভারতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিক্যের প্রধান কারণ হলো এখানকার প্রাচুর্যপূর্ণ কয়লা ও খনিজ সম্পদ। এই অঞ্চলে দামোদর ও সোন নদীর অববাহিকায় প্রচুর কয়লার খনি রয়েছে, যা তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান জ্বালানি। এছাড়া, এই অঞ্চলের শিল্পোন্নত রাজ্যগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হওয়ায় এখানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সহজ হয়েছে।
৪৫. প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির পার্থক্য লেখো।
বিষয় | প্রচলিত শক্তি | অপ্রচলিত শক্তি |
---|---|---|
উৎস | কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস | সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈব শক্তি |
পুনর্নবীকরণ | পুনর্নবীকরণযোগ্য নয় | পুনর্নবীকরণযোগ্য |
পরিবেশগত প্রভাব | দূষণ সৃষ্টি করে | পরিবেশবান্ধব |
৪৬. সৌরজগতের গ্রহগুলির মধ্যে একমাত্র পৃথিবীতে কেন প্রাণের অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়?
উত্তর:
পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার প্রধান কারণ হলো এর উপযুক্ত পরিবেশ ও জীবনধারণের অনুকূল পরিস্থিতি। এখানে তরল জল বিদ্যমান, যা জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও ওজোন স্তর রয়েছে, যা ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। এছাড়া, এর উপযুক্ত তাপমাত্রা, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এবং জীবজগতের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলসমূহের উপস্থিতি প্রাণের বিকাশ ও টিকে থাকার সহায়ক।
৪৭. কক্ষতলের সঙ্গে পৃথিবীর মেরুরেখা কীভাবে অবস্থান করে? ঋতু পরিবর্তনে এর প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
পৃথিবীর মেরুরেখা কক্ষতলের সাথে ২৩½° কোণে হেলানো অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে সূর্যের আলো সারা বছর সমানভাবে পড়ে না এবং উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে ভিন্ন সময়ে বেশি আলো পৌঁছায়। এর ফলেই গ্রীষ্ম ও শীত ঋতুর সৃষ্টি হয়। যখন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে থাকে, তখন সেখানে গ্রীষ্মকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল হয়। বিপরীত অবস্থায় দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্ম এবং উত্তর গোলার্ধে শীত পড়ে।
৪৮. আকরিক লোহার শ্রেণিবিভাগ করো।
উত্তর:
আকরিক লোহা মূলত চারটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত –
১. ম্যাগনেটাইট – এতে সর্বোচ্চ পরিমাণ লোহা (প্রায় ৭২%) থাকে এবং এটি অত্যন্ত চৌম্বকীয়।
২. হেমাটাইট – এতে প্রায় ৬০-৭০% লোহা থাকে এবং এটি প্রধান লৌহ আকরিক।
৩. লিমোনাইট – এতে ৩৫-৫০% লোহা থাকে এবং এটি হলুদাভ বাদামি রঙের হয়।
৪. সিডেরাইট – এতে প্রায় ৩০-৪৮% লোহা থাকে, তবে এটি লৌহ উৎপাদনের জন্য তুলনামূলকভাবে কম ব্যবহৃত হয়।
৪৯. সম্পদ সংরক্ষণ কাকে বলে? এর উপায়গুলি চিহ্নিত করো।
উত্তর:
সম্পদ সংরক্ষণ হলো প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণ, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এগুলো ব্যবহার করতে পারে। এটি প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় রোধ ও টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়।
উপায়:
– নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা, যেমন সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তি।
– পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।
– বৃক্ষরোপণ ও বন সংরক্ষণ করা।
– খনিজ ও জ্বালানির অপচয় রোধ করা।
– জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং টেকসই উন্নয়ন নীতি অনুসরণ করা।
৫০. পার্থক্য লেখো : (৩টি করে পার্থক্য লেখো)
(i) অন্তঃস্থ গ্রহ ও বহিস্থ গ্রহের পার্থক্য
বিষয় | অন্তঃস্থ গ্রহ | বহিস্থ গ্রহ |
---|---|---|
অবস্থান | সূর্যের কাছাকাছি অবস্থিত | সূর্য থেকে দূরে অবস্থিত |
গঠন | প্রধানত কঠিন পাথর ও ধাতব উপাদানে গঠিত | প্রধানত গ্যাস ও বরফ দ্বারা গঠিত |
উদাহরণ | বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল | বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন |
(ii) আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের পার্থক্য
বিষয় | আবহবিকার | ক্ষয়ীভবন |
---|---|---|
অর্থ | শিলার রাসায়নিক ও শারীরিক পরিবর্তন | শিলার ক্ষয় ও অপসারণ |
কার্যকারণ | প্রধানত তাপমাত্রা পরিবর্তন, আর্দ্রতা, অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের রাসায়নিক ক্রিয়া দ্বারা ঘটে | বাতাস, জল, হিমবাহ ও তরঙ্গের মাধ্যমে শিলার ভাঙন ও অপসারণ ঘটে |
ফলাফল | শিলার গঠন পরিবর্তিত হয় ও নতুন যৌগ তৈরি হয় | শিলার টুকরো ভেঙে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয় |
(iii) যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকার পার্থক্য
বিষয় | যান্ত্রিক আবহবিকার | রাসায়নিক আবহবিকার |
---|---|---|
অর্থ | শিলার ভৌত ভাঙন বা টুকরো হওয়া | শিলার রাসায়নিক গঠন পরিবর্তিত হওয়া |
কার্যকারণ | প্রধানত তাপমাত্রার পরিবর্তন, জল প্রবেশ ও বরফ হওয়া, গাছের মূল প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি | জল, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য রাসায়নিকের বিক্রিয়ার ফলে ঘটে |
ফলাফল | শিলার আকৃতি পরিবর্তিত হয়, তবে রাসায়নিক গঠন অপরিবর্তিত থাকে | নতুন যৌগ গঠিত হয় এবং শিলার রাসায়নিক গঠন পরিবর্তিত হয় |
<<<<<<<<<<<<<<<🌹 সমাপ্ত 🌹>>>>>>>>>>>