✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
১. পার্থক্য লেখো :
উত্তর:
বিষয় | একবীজপত্রী | দ্বিবীজপত্রী |
---|---|---|
বীজপাতা | একটি | দুটি |
শিকড় | আঁশযুক্ত (ফাইব্রাস) | প্রধান শিকড় (ট্যাপরুট) |
পাতার শিরাবিন্যাস | সমান্তরাল (Parallel) | জালিকাবিন্যাস (Reticulate) |
ফুলের অংশ | ৩ বা তার গুণিতক | ৪ বা ৫ বা তার গুণিতক |
বিষয় | কনড্রিকথিস | অসটিকথিস |
---|---|---|
কঙ্কাল | তরুণাস্থিযুক্ত | অস্থিযুক্ত |
ত্বকের আবরণ | প্লাকয়েড স্কেল | চক্রাকার বা চটকানো স্কেল |
দেহের আকৃতি | লম্বাটে ও চাপা | বিভিন্ন আকৃতির |
শ্বাস গ্রহণ | ফুলকার সাহায্যে | ফুলকার সাহায্যে |
২. প্রদত্ত পর্বগুলির একটি করে বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ দাও।
উত্তর:
একাইনোডারমাটা পর্বের প্রাণীদের দেহ রেডিয়াল সিমিট্রি যুক্ত এবং এরা জলে বসবাসকারী। উদাহরণ: স্টারফিশ।
পরিফেরা পর্বের প্রাণীদের দেহ সরল গঠনযুক্ত, দেহে ছিদ্রযুক্ত, এবং স্থিরভাবে বসবাস করে। উদাহরণ: স্পঞ্জ।
৩. লিউকোপ্লাস্ট বলতে কী বোঝো?
উত্তর: লিউকোপ্লাস্ট হল এক ধরনের প্লাস্টিড যা রঙহীন এবং প্রধানত খাদ্য সংরক্ষণ করে, যেমন শ্বেতসার, তেল ও প্রোটিন।
৪. ‘কোশের শক্তিঘর’ কাকে এবং কেন বলা হয়? ‘সুইসাইড ব্যাগ” কোন্ কোশ অঙ্গাণুকে বলে?
উত্তর:
মাইটোকন্ড্রিয়া কে ‘কোশের শক্তিঘর’ বলা হয়, কারণ এটি কোশের জন্য এনার্জি (ATP) উৎপন্ন করে।লাইসোজোম কে ‘সুইসাইড ব্যাগ’ বলা হয়, কারণ এটি কোশের অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিগ্রস্ত উপাদান ভেঙে ফেলে।
৫. দুটি করে পার্থক্য লেখো :
উত্তর:
বিষয় | প্রোক্যারিওটিক কোশ | ইউক্যারিওটিক কোশ |
---|---|---|
নিউক্লিয়াস | নিউক্লিয়াস অনুপস্থিত | নিউক্লিয়াস উপস্থিত |
অঙ্গাণু | ঝিল্লিবিহীন | ঝিল্লিযুক্ত |
বিষয় | জাইলেম | ফ্লোয়েম |
---|---|---|
কাজ | জল পরিবহন | খাদ্য পরিবহন |
কোশের প্রকৃতি | মৃত কোশের সমন্বয়ে গঠিত | জীবিত কোশের সমন্বয়ে গঠিত |
৬. যোগকলার অবস্থান ও দুটি কাজ লেখো।
উত্তর: যোগকলা উদ্ভিদের বৃদ্ধি অঞ্চলে অবস্থিত, যেমন শীর্ষস্থানে ও পার্শ্বস্থানে।
এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটায়।
এটি নতুন কোশ সৃষ্টি করে।
৭. বৃক্কের অবস্থান ও ভূমিকা লেখো।
উত্তর: বৃক্ক পেটের পিছনের দিকে দুটি অবস্থান করে।
এটি রক্ত পরিশোধন করে।
এটি দেহের জল ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে।
৮. মানুষের বর্গ ও গোত্রের নাম লেখো।
উত্তর: মানুষের বর্গ প্রাইমেটস (Primates) এবং গোত্র হোমিনিডি (Hominidae)।
৯. স্বল্পমাত্রিক খনিজ মৌল কাকে বলে? দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: শরীরে যে খনিজ মৌল খুব কম পরিমাণে প্রয়োজন হয়, তাদের স্বল্পমাত্রিক খনিজ মৌল বলা হয়।
উদাহরণ: আয়োডিন, জিঙ্ক।
১০. দুটি কোশ অঙ্গাণুর নাম লেখো যাতে DNA উপস্থিত।
উত্তর: মাইটোকন্ড্রিয়া এবং প্লাস্টিড।
১১. টেরিডোফাইটা গোষ্ঠীর দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: টেরিডোফাইটাদের প্রকৃত শিকড়, কাণ্ড ও পাতার উপস্থিতি দেখা যায়।
এদের জীবনচক্রে স্পোরোফাইট পর্যায় প্রধান।
১২. রাজ্য ফাজির বাস্তুতান্ত্রিক ভূমিকা লেখো।
উত্তর: ফাজি হলো এক ধরনের ভাইরাস যা ব্যাকটেরিয়াকে সংক্রমণ করে এবং প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
১৩. পেলেগ্রা রোগ হয় কোন্ ভিটামিনের অভাবে? অ্যান্টিস্করবিউটিক ফ্যাক্টর কাকে বলে?
উত্তর: পেলেগ্রা রোগ হয় নিয়াসিন (ভিটামিন B3) এর অভাবে।
অ্যান্টিস্করবিউটিক ফ্যাক্টর হলো ভিটামিন C, যা স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।
১৪. নিবেশিত ভাজক কলার অবস্থান ও একটি কাজ লেখো।
উত্তর: নিবেশিত ভাজক কলা উদ্ভিদের পরিধিগত বৃদ্ধির জন্য মূল ও কাণ্ডের গভীরে অবস্থিত।
এটি গাঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
১৫. বৃক্কের দুটি কাজ লেখো।
উত্তর: এটি রক্ত পরিশোধন করে।
এটি জল ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে।
১৬. দ্বিপদ নামকরণ কী ?
উত্তর: বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস উদ্ভাবিত একটি পদ্ধতি, যেখানে প্রতিটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম দুই অংশে বিভক্ত থাকে—গণ (Genus) এবং প্রজাতি (Species)।
১৭. মোনেরার একটি বৈশিষ্ট্য ও একটি উদাহরণ লেখো।
উত্তর: মোনেরা এককোষী, প্রোক্যারিওটিক এবং এদের নিউক্লিয়াস ঝিল্লিবিহীন।
উদাহরণ: ব্যাকটেরিয়া।
১৮. হাইড্রা ও কেঁচো কোন্ পর্বের প্রাণী ?
উত্তর: হাইড্রা নিডারিয়া (Cnidaria) পর্বের এবং কেঁচো অ্যানেলিডা (Annelida) পর্বের প্রাণী।
১৯. ইউরোকর্ডাটা উপপর্বের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: ইউরোকর্ডাটা উপপর্বের প্রাণীদের লার্ভা অবস্থায় কর্ড দেখা যায়।
প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় কর্ড হারিয়ে যায়।
২০. সংযুক্ত প্রোটিন কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর: সংযুক্ত প্রোটিন হলো এমন প্রোটিন যা অ্যামাইনো অ্যাসিড ছাড়াও অন্য উপাদান (যেমন কার্বোহাইড্রেট বা ধাতব আয়ন) ধারণ করে।
উদাহরণ: গ্লাইকোপ্রোটিন।
২১. কোশপর্দার দুটি কাজ লেখো।
উত্তর: এটি কোশের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি উপাদান পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে।
২২. প্রোভিটামিন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: প্রোভিটামিন হলো এমন যৌগ, যা দেহে প্রবেশ করার পর সক্রিয় ভিটামিনে রূপান্তরিত হয়।
উদাহরণ: ক্যারোটিন (ভিটামিন A-তে রূপান্তরিত হয়), এরগোস্টেরল (ভিটামিন D-তে রূপান্তরিত হয়)।
২৩. Vascular Cryptogams-এর দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
এদের দেহে প্রকৃত জাইলেম ও ফ্লোয়েম উপস্থিত থাকে।
এরা বীজ উৎপন্ন না করে স্পোরের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।
২৪. প্রজাতি কাকে বলে ? তারামাছের গমন অঙ্গের নাম কী ?
উত্তর: একই বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, একসঙ্গে প্রজননক্ষম এবং একই অঞ্চলে বসবাসকারী জীবগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে।
তারামাছের গমন অঙ্গ হল টিউব ফুট।
২৫. চিকিৎসা বিজ্ঞানে জীববিদ্যার ভূমিকা লেখো।
উত্তর: জীববিদ্যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তি তৈরি করে, যেমন রোগের কারণ নির্ণয়, ওষুধ আবিষ্কার, এবং জিনতত্ত্বের গবেষণা।
২৬. প্রাণীজগতে মানুষের অবস্থান লেখো।
উত্তর:
রাজ্য: অ্যানিমেলিয়া
পর্ব: কর্ডাটা
বর্গ: প্রাইমেটস
গোত্র: হোমিনিডি
গণ: হোমো
প্রজাতি: হোমো সেপিয়েন্স
২৭. কোশরস কী? এর কাজ লেখো।
উত্তর: কোশরস হলো কোশের টনিক ঝিল্লির (Tonoplast) দ্বারা আবৃত তরল পদার্থ, যা বিভিন্ন দ্রবীভূত পদার্থ ধারণ করে।
এটি কোশের আকার ও চাপ বজায় রাখে।
এটি খাদ্য ও বর্জ্য পদার্থ সংরক্ষণ করে।
২৭. যকৃৎকে অন্যতম ‘জৈব রসায়নাগার' বলে কেন?
উত্তর: যকৃৎকে ‘জৈব রসায়নাগার’ বলা হয় কারণ এটি দেহে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এটি বিপাকীয় ক্রিয়াগুলি নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন গ্লুকোজ সংরক্ষণ, বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন এবং প্রোটিন সংশ্লেষণ।
২৮. যোগকলার বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
যোগকলা কোশগুলির মধ্যে ব্যবধান থাকে।
এটি দেহের কাঠামোগত শক্তি প্রদান করে এবং বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
২৯. অক্সিজোম কী ? এর কাজ কী ?
উত্তর:
অক্সিজোম হলো মাইটোকন্ড্রিয়ার অভ্যন্তরীণ ঝিল্লিতে অবস্থিত এক ধরনের শ্বসন এনজাইম কমপ্লেক্স।
এর কাজ হলো কোশীয় শ্বসনের মাধ্যমে ATP উৎপাদন করা।
৩০. ট্যাক্সোনমির গুরুত্ব কী ?
উত্তর: ট্যাক্সোনমি জীবজগতকে শ্রেণিবদ্ধ করে, যাতে তাদের সহজে চিহ্নিত ও অধ্যয়ন করা যায়। এটি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং চিকিৎসা ও কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩১. মস ও ফার্নের একটি সাদৃশ্য ও একটি বৈসাদৃশ্য লেখো।
উত্তর:
সাদৃশ্য: উভয়ই স্পোর দ্বারা বংশবিস্তার করে।
বৈসাদৃশ্য: মসের সত্যিকারের জাইলেম ও ফ্লোয়েম নেই, কিন্তু ফার্নের থাকে।
৩২. জীবদেহে লবণের গুরুত্ব কী ?
উত্তর:
লবণ দেহের জল ও অম্ল-ক্ষার ভারসাম্য বজায় রাখে।
এটি স্নায়ু ও পেশির কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩৩. ব্রায়োফাইটা অন্তর্ভুক্ত উদ্ভিদদের ‘উভচর উদ্ভিদ' বলা হয় কেন?
উত্তর: ব্রায়োফাইটা উদ্ভিদদের ‘উভচর উদ্ভিদ’ বলা হয় কারণ এরা জল ও স্থলে উভয় পরিবেশে বাঁচতে পারে। তবে প্রজননের জন্য এদের জল প্রয়োজন হয়।
৩৪. সিলোম কাকে বলে? একটি প্রাণীর নাম লেখো যার প্রকৃত সিলোম উপস্থিত।
উত্তর: দেহগহ্বর, যা মেসোডার্ম দ্বারা আবৃত থাকে, তাকে সিলোম বলে।
উদাহরণ: কেঁচো (Lumbricus terrestris)।
৩৫. কর্ডাটা পর্বের দুটি প্রধান শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
এদের দেহে জীবনচক্রের কোনো এক পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে।
এদের দেহের পশ্চাদংশে একটি খালি স্নায়ুরজ্জু (dorsal nerve cord) থাকে।
৩৬. গোলকৃমি ও বাঘের বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখো।
উত্তর:
গোলকৃমি: Ascaris lumbricoides
বাঘ: Panthera tigris
৩৭. শ্রেণি কনড্রিকথিস-এর দুটি শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
এদের দেহ কৌরকিলাজিনাস (cartilaginous) অস্থি দিয়ে গঠিত।
এদের ফুলকা ঢাকা থাকে না এবং সরাসরি বাহিরের সংস্পর্শে থাকে।
৩৮. হায়ারার্কিয়াল শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে?
উত্তর: জীবজগৎকে বৃহত্তর থেকে ক্ষুদ্রতর দলে পর্যায়ক্রমে ভাগ করার প্রক্রিয়াকে হায়ারার্কিয়াল শ্রেণিবিন্যাস বলে। এটি রাজ্য থেকে প্রজাতি পর্যন্ত বিভাজিত হয়।
৩৯. অ্যানিলিডা ও আর্থ্রোপোডা পর্বের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | অ্যানিলিডা | আর্থ্রোপোডা |
---|---|---|
দেহগঠন | নরম ও খণ্ডিত দেহ | বহিঃকঙ্কালযুক্ত খণ্ডিত দেহ |
চলন অঙ্গ | ব্রিস্টলস (সিটি) বা প্যারাপোডিয়া | যৌগিক পা ও সন্ধিযুক্ত অঙ্গ |
৪০. আবরণী কলা কোথায় থাকে? এর কাজ কী?
উত্তর:
অবস্থান: এটি উদ্ভিদের পৃষ্ঠে ও প্রাণীদের ত্বকে থাকে।
কাজ: এটি দেহকে রক্ষা করে, অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিকে ঢেকে রাখে এবং পদার্থের বিনিময় নিয়ন্ত্রণ করে।
৪১. লাইসোজোম নিঃসৃত দুটি উৎসেচকের নাম লেখো।
উত্তর:
পেপটিডেজ
লিপেজ
৪২. প্রধান শারীরবৃত্তীয় ভূমিকা লেখো : ম্যাগনেশিয়াম ও সোডিয়ামের।
উত্তর:
ম্যাগনেশিয়াম: ক্লোরোফিল গঠনে সাহায্য করে ও পেশির সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করে।
সোডিয়াম: স্নায়ু সংকেত পরিবহন ও জল-লবণ ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৪২. লাইসোজোমকে 'আত্মঘাতী থলি' বলে কেন?
উত্তর: লাইসোজোমে উপস্থিত হাইড্রোলাইটিক এনজাইম কোশের অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিগ্রস্ত অংশকে ভেঙে ফেলে। কখনও কখনও এটি পুরো কোশকেই ধ্বংস করতে পারে, তাই একে 'আত্মঘাতী থলি' বলা হয়।
৪৩. ভিটামিন B₁₂-কে P-P ফ্যাক্টর বলা হয় কেন?
উত্তর: ভিটামিন B₁₂ (সায়ানোকোবালামিন) প্লাস্টারোপ্রোটেইন (P-P) সংশ্লেষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, তাই একে P-P ফ্যাক্টর বলা হয়।
৪৪. পার্থেনোকার্পি পদ্ধতির প্রয়োগ উল্লেখ করো।
উত্তর: পার্থেনোকার্পি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ফল নিষেক ছাড়াই বিকশিত হয়। এটি বীজবিহীন ফল উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যেমন কলা, আঙুর ও কমলা।
৪৫. দ্বিপদ নামকরণ লেখার নিয়ম কী?
উত্তর:
বৈজ্ঞানিক নাম দুটি অংশে বিভক্ত থাকে—প্রথম অংশ গণের নাম এবং দ্বিতীয় অংশ প্রজাতির নাম।
গণের নামের প্রথম অক্ষর বড় হাতের এবং প্রজাতির নাম ছোট হাতের অক্ষরে লেখা হয়।
৪৬. প্রোটিস্টা রাজ্যের নামকরণ কীভাবে করা হয়েছে?
উত্তর: প্রোটিস্টা রাজ্যের নামকরণ করা হয়েছে গ্রিক শব্দ protos থেকে, যার অর্থ "প্রথম"। কারণ এটি এককোষী ইউক্যারিওটিক জীবদের অন্তর্ভুক্ত করে, যারা উদ্ভিদ, প্রাণী ও ছত্রাকের পূর্বপুরুষ।
৪৭. মানবদেহে রক্তকে ‘প্রাকৃতিক বাফার’ বলা হয় কেন?
উত্তর: রক্তে উপস্থিত বাইকার্বোনেট ও ফসফেট বাফার ব্যবস্থা pH মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখে।
৪৮. প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদ কোশের কোশরস দ্বারা পূর্ণ কেন্দ্রীয় রসায়নিকে (vacuole) ঘিরে থাকা পাতলা প্রোটোপ্লাজমিক স্তরকে প্রাইমরডিয়াল ইউট্রিকল বলে।
৪৯. মানুষের দেহ থেকে যকৃৎ কেটে বাদ দিলে কী সমস্যা সৃষ্টি হবে?
উত্তর:
যকৃৎ রক্ত পরিশোধন করতে পারে না, ফলে বিষাক্ত পদার্থ জমে যাবে।
পাচন ও বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হবে, কারণ যকৃৎ পিত্ত উৎপন্ন করে।
৫০. মাইটোকন্ড্রিয়াকে 'কোশের শক্তিঘর' বলে কেন?
উত্তর: মাইটোকন্ড্রিয়া কোশীয় শ্বসনের মাধ্যমে ATP উৎপাদন করে, যা শক্তির প্রধান উৎস। তাই একে 'কোশের শক্তিঘর' বলা হয়।
৫১. মাছে দেখা যায় এরকম আঁশের নামগুলি লেখো।
উত্তর:
সাইক্লয়েড আঁশ (যেমন—কাতলা)
প্ল্যাকয়েড আঁশ (যেমন—হাঙর)
৫২. নিউক্লিওটাইড ও নিউক্লিওসাইডের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | নিউক্লিওটাইড | নিউক্লিওসাইড |
---|---|---|
গঠন | নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক, ফসফেট এবং চিনির যৌগ থাকে | নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক ও চিনি থাকে, কিন্তু ফসফেট থাকে না |
৫৩. তারামাছ মাছ নয় কেন – যুক্তি দেখাও।
উত্তর:
তারামাছ কর্ডাটা পর্বের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং এতে কশেরুকা নেই।
এটির শ্বাস-প্রশ্বাস ফুলকার মাধ্যমে হয় না, বরং জলনালী ব্যবস্থা দ্বারা সম্পন্ন হয়।
৫৪. ক্লোরোপ্লাস্টিডকে অর্ধনির্ভরশীল অঙ্গাণু বলে কেন?
উত্তর: ক্লোরোপ্লাস্টিডের নিজস্ব DNA, RNA ও রাইবোসোম থাকে, তাই এটি নিজে কিছু প্রোটিন তৈরি করতে পারে। তবে পুরোপুরি স্বাধীন নয়, কারণ অনেক প্রোটিন নিউক্লিয়াস থেকে আসে।
৫৫. কিডনি বা যকৃতের দুটি কাজ লেখো।
উত্তর:
কিডনির কাজ:
-
রক্ত পরিশোধন করে ও অতিরিক্ত জল ও বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করে।
-
দেহের জল ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে।
যকৃতের কাজ:
-
গ্লাইকোজেন সঞ্চয় করে ও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
-
পিত্তরস উৎপন্ন করে যা চর্বি পরিপাকে সহায়তা করে।
৫৬. জাইলেম ও ফ্লোয়েমের একটি গঠনগত পার্থক্য ও একটি কার্যগত পার্থক্য দেখাও।
উত্তর:
পার্থক্য | জাইলেম | ফ্লোয়েম |
---|---|---|
গঠনগত পার্থক্য | মৃত কোশ দ্বারা গঠিত | জীবিত কোশ দ্বারা গঠিত |
কার্যগত পার্থক্য | জল ও খনিজ পরিবহন করে | খাদ্য পরিবহন করে |
৫৭. গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত ঘাম হলে বা একাধিকবার পাতলা পায়খানা হলে ডাক্তারবাবুরা ORS খেতে বলেন কেন?
উত্তর: অতিরিক্ত ঘাম বা পাতলা পায়খানার কারণে দেহ থেকে জল ও লবণ বেরিয়ে যায়, ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। ORS (Oral Rehydration Solution) শরীরের জলের ভারসাম্য ও লবণের মাত্রা পুনরুদ্ধার করে।
৫৮. লিনিয়ান হায়ারার্কির ধাপগুলির নাম লেখো।
উত্তর: লিনিয়ান হায়ারার্কির ধাপগুলি হল:
-
রাজ্য (Kingdom)
-
পর্ব/বিভাগ (Phylum/Division)
-
শ্রেণি (Class)
-
বর্গ (Order)
-
গোত্র (Family)
-
গণ (Genus)
-
প্রজাতি (Species)
৫৯. লাইসোজোমকে ‘আত্মঘাতী থলি' বলে কেন?
উত্তর: লাইসোজোমে উপস্থিত হাইড্রোলাইটিক এনজাইম কোশের অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিগ্রস্ত অংশকে ভেঙে ফেলে। কখনও কখনও এটি পুরো কোশকেই ধ্বংস করতে পারে, তাই একে 'আত্মঘাতী থলি' বলা হয়।
৬০. কনড্রিকথিস ও অস্টিকথিসের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | কনড্রিকথিস | অস্টিকথিস |
---|---|---|
কঙ্কালের গঠন | তরুণাস্থিযুক্ত কঙ্কাল | অস্থিযুক্ত কঙ্কাল |
গ্যাস পরিবহন | ফুলকা ঢাকনা নেই | ফুলকা ঢাকনা উপস্থিত |
৬১. অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড ও অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তর:
-
অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড: লিউসিন
-
অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড: লিনোলিক অ্যাসিড
৬২. উদ্ভিদ রাজ্যের ‘উভচর’ কাদের বলা হয় এবং কেন?
উত্তর: ব্রায়োফাইটা পর্বের উদ্ভিদদের ‘উভচর উদ্ভিদ’ বলা হয়, কারণ তারা জল ও স্থল উভয় পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে। তবে প্রজননের জন্য জল অপরিহার্য।
৬৩. কোয়াসারভেট ও মাইক্রোস্ফিয়ার মডেল বলতে কী বোঝো?
উত্তর:
-
কোয়াসারভেট মডেল: অপারিনের মতে, প্রাথমিক পৃথিবীর সাগরে জৈব অণুগুলোর সমবায় থেকে কোয়াসারভেট তৈরি হয়েছিল, যা প্রাণের উদ্ভবের প্রাথমিক ধাপ।
-
মাইক্রোস্ফিয়ার মডেল: সিডনি ফক্সের মতে, উচ্চ তাপে অ্যামিনো অ্যাসিড গঠিত গ্লোবুলার স্ট্রাকচার, যা কোষের মতো আচরণ করে, তাকে মাইক্রোস্ফিয়ার বলা হয়।
৬৪. জোঁক কোন্ পর্বভুক্ত? এই পর্বের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: জোঁক অ্যানিলিডা পর্বের অন্তর্গত।
বৈশিষ্ট্য:
-
দেহ বহু খণ্ডযুক্ত ও সিটা (setae) অনুপস্থিত।
-
রক্ত সংবহন বন্ধ ও হিরুডিন নামক রাসায়নিক নিঃসরণ করে।
৬৫. DNA ও RNA-এর মধ্যে একটি কার্যগত ও একটি গঠনগত পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | DNA | RNA |
---|---|---|
গঠনগত | দ্বিস্তরী (Double-stranded) | একস্তরী (Single-stranded) |
কার্যগত | জিনগত তথ্য সংরক্ষণ করে | প্রোটিন সংশ্লেষণে অংশগ্রহণ করে |
৬৬. কার্ট হুইল মডেল বলতে কী বোঝো?
উত্তর: কার্ট হুইল মডেল হল প্লাজমোডিয়াম পরজীবীর রিং-আকৃতির ট্রফোজোয়াইট স্টেজের একটি কাঠামো যা ম্যালেরিয়া সংক্রমণের সময় লোহিত রক্তকণিকায় দেখা যায়।
৬৭. অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে তৈরি হয় না এবং খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়, তাকে অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড বলে।
উদাহরণ: লিনোলিক অ্যাসিড ও লিনোলেনিক অ্যাসিড।
৬৮. সারকোলেমা ও নিউরিলেমার মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য লেখো। ক্যালসিফেরলের অভাবে কী রোগ হয়?
উত্তর:
পার্থক্য | সারকোলেমা | নিউরিলেমা |
---|---|---|
অবস্থান | পেশি কোষের পর্দা | নিউরনের শোয়ান কোষের বহিরাবরণ |
ক্যালসিফেরল (ভিটামিন D) এর অভাবে রিকেটস ও অস্টিওমালাসিয়া রোগ হয়।
৬৯. অগ্ন্যাশয়কে ‘মিশ্রগ্রন্থি' বলা হয় কেন?
উত্তর: অগ্ন্যাশয়কে ‘মিশ্রগ্রন্থি’ বলা হয় কারণ এটি বহিঃক্ষর ও অন্তঃক্ষর উভয় ধরনের নিঃসরণ করে। এটি ইনসুলিন ও গ্লুকাগন হরমোন নিঃসরণ করে (অন্তঃক্ষর) এবং পাচক উৎসেচক নিঃসরণ করে (বহিঃক্ষর)।
৭০. ফ্রিনোডার্মা কী? মানবদেহে ভিটামিন-K-এর ভূমিকা লেখো।
উত্তর:
-
ফ্রিনোডার্মা: এটি ভিটামিন A-এর অভাবে হওয়া একটি চর্মরোগ, যেখানে ত্বকে ছোট ছোট খসখসে গুটি তৈরি হয়।
-
ভিটামিন-K-এর ভূমিকা: রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং প্রোট্রোম্বিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৭১. প্ৰজাতি (Species) কাকে বলে? মানুষের গোত্র (Family) উল্লেখ করো।
উত্তর:
-
প্ৰজাতি: একই ধরনের জীব যারা একে অপরের সঙ্গে প্রজনন করে সক্ষম ও উর্বর সন্তান উৎপন্ন করতে পারে।
-
মানুষের গোত্র (Family): হোমিনিডি (Hominidae)।
৭২. লাইসোজোমের একটি বহিঃকোশীয় পরিপাকের উদাহরণ দাও। 80S-এ 'S' অক্ষরটির অর্থ কী?
উত্তর:
-
বহিঃকোশীয় পরিপাকের উদাহরণ: শুক্রাণুর অ্যাক্রোসোমে থাকা এনজাইম ডিম্বাণুর আবরণ ভেদ করতে সাহায্য করে।
-
80S-এ 'S' অর্থ: এটি সুডবার্গ (Svedberg) একক, যা অণুর অবক্ষেপণের হার নির্দেশ করে।
৭৩. আবরণী কলার দুটি গঠনগত বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
-
ঘনভাবে বিন্যস্ত কোষ দ্বারা গঠিত থাকে, কোষগুলোর মধ্যে ফাঁক কম থাকে।
-
কোষের উপরিভাগ সাধারণত মসৃণ বা সিলিয়া ও মাইক্রোভিলি যুক্ত হতে পারে।
৭৪. জাইলেম ও ফ্লোয়েমের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | জাইলেম | ফ্লোয়েম |
---|---|---|
গঠনগত | মৃত কোষ দ্বারা গঠিত | জীবিত কোষ দ্বারা গঠিত |
কার্যগত | জল ও খনিজ পরিবহন করে | খাদ্য পরিবহন করে |
৭৫. ডিম্বাশয়ের পীতগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত দুটি হরমোনের নাম লেখো।
উত্তর: প্রোজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন।
৭৬. পেশিকোশের কোশপর্দার নাম কী? পেশি সংকোচনশীল একটি প্রোটিনের নাম লেখো।
উত্তর:
-
পেশিকোশের কোশপর্দার নাম: সারকোলেমা (Sarcolemma)।
-
পেশি সংকোচনশীল প্রোটিন: অ্যাকটিন (Actin)।
৭৬. নিউক্লিওটাইড কী কী নিয়ে গঠিত?
উত্তর: নিউক্লিওটাইড তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিত—
-
নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক (A, T/U, G, C)
-
পেন্টোজ সুগার (ডিঅক্সিরিবোজ বা রিবোজ)
-
ফসফেট গ্রুপ
৭৭. জীবদেহে অ্যাসিডের ভূমিকা কী?
উত্তর:
-
অ্যাসিড হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে (যেমন, পাকস্থলীতে HCl)।
-
কোষীয় বিপাক ও এনজাইমের ক্রিয়াশীলতায় সাহায্য করে।
৭৮. রাইবোফোরিন কী?
উত্তর: রাফ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের ঝিল্লির সঙ্গে যুক্ত এক ধরনের প্রোটিন যা রাইবোসোমের সংযোজনকে সহায়তা করে।
৭৯. পরিফেরা পর্বের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
-
শরীরে কোষ সংগঠনের স্তর থাকে কিন্তু কোনো সুসংবদ্ধ কলা থাকে না।
-
দেহে অসংখ্য ছিদ্র (Ostia) উপস্থিত থাকে।
-
জলীয় পরিবেশে বসবাস করে এবং সেসাইল প্রকৃতির হয়।
-
পুনর্জনন ক্ষমতা অনেক বেশি।
৮০. প্লীহার অবস্থান কোথায়? সুষুম্নাকাণ্ডের কাজ কী?
উত্তর:
-
প্লীহার অবস্থান: এটি উদরগহ্বরের বাম দিকে, পেটের পিছনের অংশে অবস্থিত।
-
সুষুম্নাকাণ্ডের কাজ: এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ এবং মস্তিষ্ক ও শরীরের অন্যান্য অংশের মধ্যে স্নায়ু সংকেত পরিবহন করে।
৮১. মাইক্রোটিউবিউল কী? এর কাজ লেখো।
উত্তর:
-
মাইক্রোটিউবিউল: কোষকঙ্কালের অংশ, যা টিউবুলিন প্রোটিন দিয়ে তৈরি নলাকার গঠন।
-
এর কাজ:
-
কোষের আকার ও আকৃতি বজায় রাখা।
-
কোষ বিভাজন চলাকালীন স্পিন্ডল তন্তু গঠন করা।
-
৮২. মসকে ‘উভচর উদ্ভিদ' বলে কেন?
উত্তর: মস জল ও স্থলের সংযোগস্থলে বৃদ্ধি পায় এবং বংশবৃদ্ধির জন্য জল প্রয়োজন হয়, তাই একে ‘উভচর উদ্ভিদ’ বলা হয়।
৮৩. ভাজক কলা ও প্যারেনকাইমা কলার দুটি গঠনগত পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | ভাজক কলা | প্যারেনকাইমা কলা |
---|---|---|
কোষ বিভাজন | কোষ বিভাজন সক্রিয় | কোষ বিভাজন কম বা অনুপস্থিত |
প্রাচীরের গঠন | পাতলা ও নমনীয় | তুলনামূলক ঘন |
৮৪. অ্যাভিস শ্রেণির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
-
শরীর পালকে আবৃত থাকে, যা উষ্ণতা বজায় রাখে।
-
সামনের দুটি অঙ্গ রূপান্তরিত হয়ে ডানা গঠন করে, যা উড়ার জন্য উপযোগী।
৮৫. অপচিতি বিপাক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর:
-
অপচিতি বিপাক হল জটিল অণুগুলিকে ভেঙে সরল অণুতে পরিণত করার প্রক্রিয়া, যা শক্তি উৎপন্ন করে।
-
উদাহরণ: গ্লুকোজ ভেঙে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জল তৈরি হওয়া (শ্বসন)।
৮৬. ব্যক্তবীজী উদ্ভিদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
-
এদের বীজ উন্মুক্ত অবস্থায় থাকে, ফলের আবরণ থাকে না।
-
সাধারণত কনিফার জাতীয় উদ্ভিদ, যেমন— দেবদারু, পাইন গাছ।
৮৭. DNA ও RNA-এর পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | DNA | RNA |
---|---|---|
সুগার | ডিঅক্সিরিবোজ | রিবোজ |
ক্ষারক | থাইমিন (T) থাকে | ইউরাসিল (U) থাকে |
আকৃতি | দ্বিগুণ সর্পিল (Double helix) | একক সর্পিল (Single strand) |
৮৮. ভাজক কলা উদ্ভিদদেহে কোথায় অবস্থান করে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:
-
এটি মূল, কাণ্ড ও পাতার বৃদ্ধিশীল অংশে অবস্থান করে।
-
উদাহরণ: অ্যাপিক্যাল মেরিস্টেম (শীর্ষস্থ ভাজক কলা)।
৮৯. এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকিউলামের দুটি কাজ লেখো।
উত্তর:
-
প্রোটিন ও লিপিড সংশ্লেষণে সাহায্য করে।
-
কোষের বিভিন্ন অংশের মধ্যে পদার্থ পরিবহন করে।
৯০. মানবদেহে স্নায়ুকলার অবস্থান লেখো।
উত্তর:
-
স্নায়ুকলা প্রধানত মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড ও স্নায়ুতে অবস্থান করে।
৯১. অ্যাগনাথা ও ন্যাথোস্টোমাটার পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | অ্যাগনাথা | ন্যাথোস্টোমাটা |
---|---|---|
চোয়াল | অনুপস্থিত | উপস্থিত |
উদাহরণ | ল্যাম্প্রে, হ্যাগফিশ | হাঙর, কার্প |
৯২. লিনিয়ান হায়ারার্কির ক্যাটেগরিগুলি উল্লেখ করো। অথবা, ‘মোনেরা’ রাজ্যের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:
লিনিয়ান হায়ারার্কির ক্যাটেগরি:
-
রাজ্য (Kingdom)
-
পর্ব/বিভাগ (Phylum/Division)
-
শ্রেণি (Class)
-
বর্গ (Order)
-
গোত্র (Family)
-
গণ (Genus)
-
প্রজাতি (Species)
মোনেরা রাজ্যের বৈশিষ্ট্য:
-
এককোষী ও প্রোক্যারিওটিক প্রাণী।
-
কোষপ্রাচীর উপস্থিত, যা পেপটিডোগ্লাইকান দিয়ে গঠিত।
-
বিভাজনের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।
-
কিছু অটোট্রফ, কিছু হেটেরোট্রফ।
৯৩. ‘সব মেরুদণ্ডীই কর্ডাটা, কিন্তু সব কর্ডাটা পর্বভুক্ত প্রাণীই মেরুদণ্ডী নয়' – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
-
কর্ডাটা পর্বের প্রাণীদের দেহে জীবনের কোনো এক পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে।
-
মেরুদণ্ডী প্রাণীদের নটোকর্ড পরিণত অবস্থায় মেরুদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।
-
কিছু কর্ডাটার (যেমন— অ্যাম্ফিওক্সাস) মেরুদণ্ড থাকে না, তাই তারা মেরুদণ্ডী নয়।
৯৪. জাইলেম ও ফ্লোয়েম কলার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
পার্থক্য | জাইলেম | ফ্লোয়েম |
---|---|---|
কাজ | জল ও খনিজ পরিবহন করে | খাদ্য পরিবহন করে |
দিক | মূল থেকে পাতার দিকে | পাতার তৈরি খাদ্য সমস্ত অংশে পৌঁছায় |
কোষের অবস্থা | মৃত কোষ দ্বারা গঠিত | জীবিত কোষ দ্বারা গঠিত |
৯৫. মানবদেহে অগ্ন্যাশয় গ্রন্থির গুরুত্ব উল্লেখ করো।
উত্তর:
-
এটি ইনসুলিন ও গ্লুকাগন নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে।
-
এটি পাচক রস উৎপন্ন করে, যা প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট হজমে সহায়তা করে।
৯৬. ‘জোন অফ এক্সক্লুশন' বলতে কী বোঝো? অথবা, ইউক্যারিওট এবং প্রোক্যারিওটদের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
জোন অফ এক্সক্লুশন:
-
এটি সেই অঞ্চল যেখানে কোনো নির্দিষ্ট উপাদান বা কণা প্রবেশ করতে পারে না।
-
সাধারণত পৃষ্ঠ-সংলগ্ন তরল বা কঠিন পদার্থের সংস্পর্শে এমন জোন দেখা যায়।
ইউক্যারিওট ও প্রোক্যারিওট পার্থক্য:
পার্থক্য | ইউক্যারিওট | প্রোক্যারিওট |
---|---|---|
নিউক্লিয়াস | সুগঠিত নিউক্লিয়াস আছে | নিউক্লিয়াস নেই, নিউক্লিওয়েড অঞ্চল থাকে |
কোষপ্রাচীর | কিছুতে কোষপ্রাচীর থাকে | পেপটিডোগ্লাইকানযুক্ত কোষপ্রাচীর থাকে |
কোষীয় অঙ্গাণু | মেমব্রেনযুক্ত অঙ্গাণু উপস্থিত | মেমব্রেনযুক্ত অঙ্গাণু নেই |
উদাহরণ | প্রাণী, উদ্ভিদ, ছত্রাক | ব্যাকটেরিয়া, সায়ানোব্যাকটেরিয়া |
৯৭. দেহে ভিটামিন-A-এর গুরুত্ব উল্লেখ করো।
উত্তর:
-
রাতকানা প্রতিরোধ করে এবং চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টি বজায় রাখে।
-
ত্বক ও শ্লেষ্মা ঝিল্লি সুস্থ রাখে।
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৯৮. ‘কোশপর্দা প্রভেদক ভেদ্য' – কথাটির অর্থ কী? দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা কে? দ্বিপদ নামকরণ লেখার দুটি নিয়মাবলি লেখো।
উত্তর:
-
‘কোশপর্দা প্রভেদক ভেদ্য' মানে কোষঝিল্লি নির্দিষ্ট কিছু পদার্থকে প্রবেশ করতে দেয় এবং কিছু পদার্থকে বাধা দেয়।
-
দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা: ক্যারোলাস লিনিয়াস।
-
দ্বিপদ নামকরণের নিয়ম:
-
নামের প্রথম অংশ গণের নাম, যা বড় হাতের অক্ষরে শুরু হয়।
-
নামের দ্বিতীয় অংশ প্রজাতির নাম, যা ছোট হাতের অক্ষরে লেখা হয়।
-
৯৯. অসটিকথিস ও কনড্রিকথিস-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
পার্থক্য | অসটিকথিস | কনড্রিকথিস |
---|---|---|
কঙ্কাল | অস্থিকঙ্কাল | তরুণাস্থিকঙ্কাল |
আঁশ | সাইক্লয়েড বা টেনয়েড আঁশ | প্ল্যাকয়েড আঁশ |
প্রজনন | ডিম্বজনিত ও কিছু ক্ষেত্রে জীবজনিত | প্রধানত জীবজনিত |
উদাহরণ | রুই, কাতলা | হাঙ্গর, রে মাছ |
১০০. নিউক্লিওটাইড-এর গঠনগত উপাদানগুলি লেখো।
উত্তর:
-
নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক (A, T/U, G, C)
-
পেন্টোজ শর্করা (ডিঅক্সিরাইবোজ বা রাইবোজ)
-
ফসফেট গ্রুপ
১০১. অরনিথিন চক্র কোথায় সম্পন্ন হয়? এই প্রক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয়?
উত্তর:
-
অরনিথিন চক্র প্রধানত যকৃতে সম্পন্ন হয়।
-
এই প্রক্রিয়ায় ইউরিয়া উৎপন্ন হয়, যা রক্তের মাধ্যমে কিডনিতে গিয়ে প্রস্রাব আকারে নির্গত হয়।
১০২. প্রদত্ত বৈশিষ্ট্যগুলির শ্রেণি বা পর্ব উল্লেখ করো –
উত্তর:
-
(a) জল সংবহন তন্ত্র → পরিফেরা পর্ব
-
(b) ছদ্ম সিলোম → নেমাটোডা পর্ব
-
(c) কোয়ানোসাইট কোশ → পরিফেরা পর্ব
-
(d) অবসারণী ছিদ্র-এর আড়াআড়িভাবে অবস্থান → প্লাটিহেলমিনথিস পর্ব
১০৩. পলিরাইবোজোম কাকে বলে?
উত্তর:
-
পলিরাইবোজোম হলো একাধিক রাইবোজোমের একটি গুচ্ছ, যা একসঙ্গে একটি mRNA-এর সাথে যুক্ত থেকে প্রোটিন সংশ্লেষণ করে।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
১. প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক কোশের পার্থক্য:
বৈশিষ্ট্য | প্রোক্যারিওটিক কোশ | ইউক্যারিওটিক কোশ |
---|---|---|
নিউক্লিয়াস | সত্যিকারের নিউক্লিয়াস নেই, নিউক্লিওয়েড অঞ্চলে DNA থাকে | সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে |
কোশাঙ্গ | ঝিল্লিবেষ্টিত কোশাঙ্গ অনুপস্থিত | ঝিল্লিবেষ্টিত কোশাঙ্গ উপস্থিত |
DNA বিন্যাস | বৃত্তাকার DNA | সরল ও সুগঠিত DNA |
কোশপ্রাচীর | সাধারণত উপস্থিত (পেপটিডোগ্লাইকান দ্বারা গঠিত) | উদ্ভিদ কোশে সেলুলোজ ও ফাঙ্গাসে কাইটিন দ্বারা গঠিত |
বিভাজন প্রক্রিয়া | বাইনারি ফিশন দ্বারা বিভাজিত হয় | মাইটোসিস ও মিয়োসিস দ্বারা বিভাজিত হয় |
উদাহরণ | ব্যাকটেরিয়া, সায়ানোব্যাকটেরিয়া | প্রাণী, উদ্ভিদ, ফাঙ্গাস, প্রোটিস্টা |
২. মোনেরা ও প্রোটিস্টার পার্থক্য:
বৈশিষ্ট্য | মোনেরা | প্রোটিস্টা |
---|---|---|
কোশের ধরন | প্রোক্যারিওটিক | ইউক্যারিওটিক |
নিউক্লিয়াস | অনুপস্থিত | উপস্থিত |
কোশের সংখ্যা | এককোশী | এককোশী বা বহুকোশী |
কোশপ্রাচীর | পেপটিডোগ্লাইকান দ্বারা গঠিত | সাধারণত অনুপস্থিত, কিছু ক্ষেত্রে উপস্থিত |
গমনক্ষমতা | সাধারণত অনির্দিষ্ট গতি | ছত্রাক, সিলিয়া বা ফ্ল্যাজেলা দ্বারা চলাচল করে |
উদাহরণ | ব্যাকটেরিয়া, নীল-সবুজ শৈবাল | অ্যামিবা, প্যারামিসিয়াম, ইউগ্লিনা |
৩৫. ‘হট ডাইলিউট সুপ’ বলতে কী বোঝো? জীবনসৃষ্টি সংক্রান্ত ‘কেমোজেনি’-র পর্যায়গুলি রেখাচিত্রের সাহায্যে উল্লেখ করো।
উত্তর:
‘হট ডাইলিউট সুপ’:
প্রাচীন মহাসাগরের উষ্ণ, পানিতে দ্রবীভূত জৈব যৌগসমূহকে বিজ্ঞানী ওপারিন এবং হ্যাল্ডেন ‘হট ডাইলিউট সুপ’ বা ‘উষ্ণ তরল পুষ্টিকর স্যুপ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এই পরিবেশেই জীবনের প্রাথমিক রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি সংঘটিত হয়।
‘কেমোজেনি’-র পর্যায়:
১. জৈব অণুর উৎপত্তি: বায়ুমণ্ডলের মৌলিক গ্যাস (NH₃, CH₄, H₂, H₂O) বজ্রপাতের ফলে জৈব অণুতে রূপান্তরিত হয়।
২. জৈব পলিমারের গঠন: অ্যামাইনো অ্যাসিড, নিউক্লিওটাইড ও শর্করা পলিমার গঠন করে।
৩. প্রোটোবায়োন্টের সৃষ্টি: কোষের মতো গঠন গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে কোষে পরিণত হয়।
৩৬. একাইনোডারমাটাকে শনাক্ত করবে কীভাবে? টেরিডোফাইটা এবং জিমনোস্পার্মের একটি করে উদ্ভিদের বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখো।
উত্তর:
একাইনোডারমাটার শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য:
১. দেহে পাঁচটি সমান অংশবিশিষ্ট রেডিয়াল সিমেট্রি থাকে।
২. জলসংবহন তন্ত্র (Water vascular system) বিদ্যমান।
৩. অধিকাংশ সামুদ্রিক প্রাণী।
৪. বহিঃকঙ্কল সাধারণত ক্যালসিয়ামযুক্ত।
বিজ্ঞানসম্মত নাম:
-
টেরিডোফাইটা: Dryopteris filix-mas (পুরুষ ফার্ন)
-
জিমনোস্পার্ম: Pinus longifolia (পাইন গাছ)
৩৭. চিহ্নিত চিত্রসহ মাইটোকনড্রিয়ার গঠন বর্ণনা করো।
উত্তর:
মাইটোকনড্রিয়ার গঠন:
১. বহিঃঝিল্লি (Outer membrane): মাইটোকনড্রিয়াকে ঘিরে রাখে।
2. অন্তঃঝিল্লি (Inner membrane): এটি ভাঁজযুক্ত, যা ক্রিস্টা তৈরি করে।
3. ক্রিস্টা (Cristae): এটি পৃষ্ঠতল বৃদ্ধি করে, যেখানে শ্বসন সংঘটিত হয়।
4. ম্যাট্রিক্স (Matrix): অভ্যন্তরীণ তরল পদার্থ, যেখানে এনজাইম, ডিএনএ ও রাইবোজোম থাকে।
কাজ:
১. কোষশক্তি উৎপাদন (ATP সংশ্লেষণ)।
২. কোষশ্বাস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি মুক্ত করে।
৩৮. লাইসোজোমের বহুরূপতা বলতে কী বোঝো? কোশপ্রাচীর এবং কোশপর্দার মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করো। সমস্ত ধরনের কোশে পাওয়া যায় এমন একটি কোশীয় অঙ্গাণুর নাম লেখো।
উত্তর:
লাইসোজোমের বহুরূপতা:
লাইসোজোম বিভিন্ন ধরনের হাইড্রোলাইটিক এনজাইম ধারণ করে এবং কোষের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। এগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
১. প্রাথমিক লাইসোজোম: এনজাইম ধারণ করে কিন্তু সক্রিয় নয়।
২. গলজি লাইসোজোম: গলজি তন্ত্র থেকে উৎপন্ন হয়।
৩. অটোফ্যাগিক লাইসোজোম: কোষের অভ্যন্তরীণ অঙ্গাণু হজম করে।
৪. হেটেরোফ্যাগিক লাইসোজোম: বহিঃকোষীয় বস্তু হজম করে।
কোশপ্রাচীর ও কোশপর্দার পার্থক্য:
বৈশিষ্ট্য | কোশপ্রাচীর | কোশপর্দা |
---|---|---|
গঠন | সেলুলোজ, পেকটিন বা কাইটিন দ্বারা গঠিত | লিপিড ও প্রোটিনের দ্বিস্তর |
উপস্থিতি | উদ্ভিদ, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস কোষে থাকে | সমস্ত জীব কোষে থাকে |
স্থিতিস্থাপকতা | অনমনীয় | নমনীয় |
কাজ | রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষা প্রদান | কোষের ভেতর ও বাইরের পদার্থের আদান-প্রদান নিয়ন্ত্রণ |
সমস্ত ধরনের কোশে পাওয়া যায় এমন একটি কোশীয় অঙ্গাণু:
-
রাইবোজোম (Ribosome)
<<<<<<<<<<<<<<🌹 সমাপ্ত 🌹>>>>>>>>>>>>