✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
১. এক ব্যক্তি প্রথমে পূর্বদিকে 500 মিটার, পরে উত্তর দিকে 500 মিটার এবং শেষে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে 1 কিমি গেলেন। এই ব্যাক্তির সরণ কত?
উত্তর:
সরণ নির্ণয়ের জন্য, চূড়ান্ত অবস্থান ও প্রাথমিক অবস্থানের সরল দূরত্ব হিসাব করতে হবে।
প্রথমে পূর্ব দিকে 500 মিটার ও পরে উত্তর দিকে 500 মিটার যাওয়ার ফলে ব্যক্তি মূল বিন্দু থেকে 500√2 (≈ 707.1 মিটার) উত্তর-পূর্ব দিকে চলে যান।
এরপর ব্যক্তি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে 1 কিমি (1000 মিটার) চলে গেলে, তার সরণ হবে এই বিন্দু থেকে চূড়ান্ত অবস্থান পর্যন্ত সরল দূরত্ব।
সরণ নির্ণয়ের জন্য ভেক্টর সংযোজন প্রয়োগ করে হিসাব করলে, চূড়ান্ত সরণ হবে 500 মিটার।
২. কোনো সাধারণ স্কেলের সাহায্যে 1mm পাঠ সঠিকভাবে নেওয়া যায়। এই স্কেলের সাহায্যে কোনো দৈর্ঘ্য মেপে পাওয়া গেল 12.5 cm। শতকরা ত্রুটি কত নির্ণয় করো।
উত্তর:
প্রদত্ত স্কেলের সর্বনিম্ন পাঠযোগ্যতা = 1 mm = 0.1 cm
পরিমাপিত দৈর্ঘ্য = 12.5 cm
সর্বোচ্চ সম্ভাব্য ত্রুটি = 0.1 cm
শতকরা ত্রুটি,
৩. বলের সংযোজনের সামান্তরিক সূত্রটি বিবৃত ও ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
বিবৃতি: "যদি কোনো বস্তুর উপর একসঙ্গে দুইটি বল ক্রিয়াশীল হয় এবং তাদের প্রতিনিধিত্বকারী দুটি ভেক্টর একে অপরের কোণে থাকে, তবে বলদ্বয়ের লব্ধি ওই দুই বলের সমানুপাতিক ভেক্টরগুলির সামান্তরিকের একটি কর্ণ দ্বারা প্রকাশ করা যায়।"
ব্যাখ্যা:
দুটি বল এবং যদি একসঙ্গে বস্তুতে ক্রিয়া করে এবং তাদের মধ্যে কোণ হয়, তাহলে লব্ধি বল হবে:
বলের দিক নির্ণয়ের জন্য,
৪. বলের ঘাত ও ঘাতবলের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
ঘাত (Impulse) | ঘাতবল (Impulsive Force) |
---|---|
কোনো বল যদি স্বল্প সময়ের জন্য বস্তুতে ক্রিয়া করে এবং গতির পরিবর্তন ঘটায়, তবে তাকে ঘাত বলে। | যে বল খুব অল্প সময়ের জন্য ক্রিয়া করে এবং বস্তুর গতি হঠাৎ পরিবর্তন করে, তাকে ঘাতবল বলে। |
ঘাতের পরিমাণ = বল × সময় | এটি স্বল্প সময়ের জন্য কার্যকর হয় কিন্তু মান অনেক বেশি হতে পারে। |
৫. দেখাও যে, নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র থেকে প্রথম গতিসূত্র পাওয়া যায়।
উত্তর:
নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র:
যেখানে, হলো বল, হলো ভর এবং হলো ত্বরণ।
যদি কোনো বস্তুর উপর কোনো বল না লাগে, তাহলে ।
তাহলে,
অর্থাৎ, বস্তু স্থির থাকলে স্থির থাকবে এবং গতি থাকলে একই বেগে চলতে থাকবে। এটি নিউটনের প্রথম গতিসূত্র।
৬. ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রটি বিবৃত ও ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
বিবৃতি: "যদি কোনো বাহ্যিক বল ক্রিয়াশীল না থাকে, তবে কোনো সিস্টেমের মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে।"
ব্যাখ্যা:
ধরো, দুটি বস্তুর ভর এবং , আর সংঘর্ষের পূর্বে তাদের বেগ যথাক্রমে ও । সংঘর্ষের পরে তাদের বেগ ও ।
ভরবেগ সংরক্ষণ সূত্র অনুসারে,
বাহ্যিক বলের অনুপস্থিতিতে, ভরবেগ পরিবর্তন হয় না।
৭. রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের ত্রুটিগুলি লেখো।
উত্তর:
ইলেকট্রনের স্পষ্ট কক্ষপথের অনুপস্থিতি: রাদারফোর্ডের মডেলে বলা হয়েছিল ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘূর্ণায়মান থাকে, তবে এর কক্ষপথ সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট ধারণা দেওয়া হয়নি।
তেজস্ক্রিয়তা ও শক্তি ক্ষয়ের সমস্যা: গতিশীল ইলেকট্রন চার্জযুক্ত কণা, তাই এটি ত্বরণজনিত বিকিরণ করবে এবং ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে নিউক্লিয়াসে পতিত হবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে না।
বর্ণালীর অসঙ্গতি: এই মডেল অনুযায়ী, ইলেকট্রনের বর্ণালী ধারা নিরবিচ্ছিন্ন হতে পারত, কিন্তু পরীক্ষায় দেখা যায় যে পরমাণুর বর্ণালী রেখাচিত্রময়।
৮. একটি মাত্রাবিহীন এককের উদাহরণ দাও। মান ও অভিমুখ উভয়েই আছে এরকম একটি স্কেলার রাশির উদাহরণ দাও।
উত্তর:
মাত্রাবিহীন এককের উদাহরণ: কোণ (radian)।
যে স্কেলার রাশিতে মান ও অভিমুখ উভয়ই থাকে: তাপমাত্রা (যেমন উত্তর দিকে ১০°C)।
৯. কোনো বস্তুর গতিবেগ শূন্য হলেও ত্বরণ থাকতে পারে কি? উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর:
হ্যাঁ, পারে।
উদাহরণ: কোনো বস্তু যদি শূন্য বেগে উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয়, তবে সর্বোচ্চ উচ্চতায় তার গতিবেগ শূন্য হয় কিন্তু সেখানে অভিকর্ষজ ত্বরণ থাকে। অর্থাৎ, ত্বরণ শূন্য নয়।
১০. একটি বস্তু মেঝেতে স্থিরাবস্থায় আছে, বিস্ফোরণের ফলে বস্তুটি সমভরের দুটি টুকরোয় ভেঙে গেল। একটি টুকরো u বেগে উত্তরদিকে গেলে অপর টুকরো কত বেগে কোন্দিকে যাবে? যুক্তিসহ লেখো।
উত্তর:
বস্তুটি স্থির ছিল, অর্থাৎ বিস্ফোরণের আগে মোট ভরবেগ ছিল শূন্য। ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র অনুযায়ী, বিস্ফোরণের পরও মোট ভরবেগ শূন্য থাকবে।
ধরা যাক, দুটি টুকরোর ভর সমান এবং একটি টুকরো উত্তর দিকে বেগে যাচ্ছে।
তাহলে অন্য টুকরোটির ভরবেগ হতে হবে , অর্থাৎ সমান ও বিপরীত দিকে।
অতএব, অপর টুকরোটি যাবে দক্ষিণ দিকে বেগে।
১১. পরমাণুর গঠন সম্পর্কিত রাদারফোর্ড মডেলের ত্রুটিগুলি লেখো।
উত্তর:
১. ইলেকট্রন কক্ষপথে ঘোরার সময় ত্বরিত আকারে গতিশীল হওয়ায়, তা থেকে তড়িৎ চৌম্বক তরঙ্গ নির্গত হতো এবং শক্তি হারিয়ে ইলেকট্রন কেন্দ্রের দিকে পড়ে যেত।
২. এটি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে কেন পরমাণু স্থিতিশীল থাকে।
৩. এটিও ব্যাখ্যা করতে পারেনি যে ইলেকট্রন নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে অবস্থান করে।
১২. একটি মৌলের পরমাণুর N কক্ষে দুটি ইলেকট্রন আছে, মৌলটিকে শনাক্ত করো। ²⁰A⁴⁰ এবং ¹⁹B40 এই পরমাণু দুটির সম্পর্ক কী?
উত্তর:
N কক্ষে দুটি ইলেকট্রন থাকতে হলে, মৌলটির মোট ইলেকট্রন সংখ্যা হবে কমপক্ষে 20। অর্থাৎ মৌলটি হলো ক্যালসিয়াম (Ca) যার পারমাণবিক সংখ্যা 20।
²⁰A⁴⁰ এবং ¹⁹B40 পরমাণু দুটি ভিন্ন মৌলের, কিন্তু ভরসংখ্যা সমান। এরা পরস্পরের আইসোবার।
১৩. গ্রাম সংকেত একক ভর বলতে কী বোঝো? STP-তে 1 মোল O₂ গ্যাসের আয়তন x লিটার হলে, STP-তে 3 মোল SO₂ গ্যাসের আয়তন কত?
উত্তর:
গ্রাম সংকেত একক ভর: কোনো মৌলের পারমাণবিক ভরকে যদি গ্রামে প্রকাশ করা হয়, তাকে বলে গ্রাম সংকেত একক ভর।
STP-তে 1 মোল গ্যাসের আয়তন x লিটার হলে,
3 মোল SO₂ গ্যাসের আয়তন হবে: লিটার।
১৪. কোনো পদার্থের একটি অণুর ভর g হলে, পদার্থটির মোলার ভর নির্ণয় করো।
উত্তর:
Avogadro সংখ্যা =
মোলার ভর = একটি অণুর ভর × Avogadro সংখ্যা
অতএব, মোলার ভর = 162.6 g/mol (প্রায়)।
১৫. একটি বস্তুর ভর 7.8 kg, আয়তন 1000 cm³ হলে, বস্তুটির ঘনত্ব কত?
উত্তর:
ঘনত্ব = ভর / আয়তন
=
অথবা = 7800 kg/m³
১৬. মাপনী চোঙ কাকে বলে? একটি মাপনী চোঙ ও স্টপওয়াচের সাহায্যে কীভাবে কল থেকে জল পড়ার হার নির্ণয় করবে?
উত্তর:
মাপনী চোঙ হল একধরনের পরিমাপক পাত্র যা নির্দিষ্ট পরিমাণ তরলের আয়তন পরিমাপে ব্যবহৃত হয়।
জল পড়ার হার নির্ণয় পদ্ধতি:
মাপনী চোঙে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল (ধরা যাক, 100 ml) পড়তে যে সময় (t সেকেন্ড) লাগে স্টপওয়াচে তা মাপি।
জল পড়ার হার =
১৭. ‘রোলার ঠেলা অপেক্ষা টানা সহজ’ – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
রোলার ঠেলার সময় ভূমির সঙ্গে অধিক ঘর্ষণ সৃষ্টি হয় এবং প্রয়োগকৃত বলের একটি অংশ রোলারকে ওপরের দিকে ঠেলতে ব্যয় হয়। কিন্তু টানার সময় বল ভূমির সাথে কোণ করে প্রয়োগ হয়, ফলে কার্যকর বল কম লাগে। তাই টানা সহজ।
১৮. 100 ডাইন বল 5 সেকেন্ড সময়ব্যাপী 25 g ভরের বস্তুর ওপর ক্রিয়া করলে বস্তুটিতে উৎপন্ন বেগের মান নির্ণয় করো।
উত্তর:
বল F = 100 dyne = N = 0.001 N
ভর m = 25 g = 0.025 kg
সময় t = 5 s
ত্বরণ a = F / m =
বেগ v = at =
বেগ = 0.2 m/s
১৯. সাধারণ তুলাযন্ত্রের সুবেদিতা বলতে কী বোঝায়? সাধারণ তুলার সুবেদিতার শর্তগুলি লেখো।
উত্তর:
সুবেদিতা হল এমন একটি অবস্থা, যখন তুলা সাম্য অবস্থায় পৌঁছালে সুনির্দিষ্ট পরিমাপ দেয়।
শর্তগুলি:
-
উভয় বাহু সমান দৈর্ঘ্যের হতে হবে।
-
তক্তার ওজন দুই পাশ সমানভাবে বিতরণ থাকতে হবে।
-
সূক্ষ্ম ফলক ও সূচ থাকতে হবে।
-
ঘর্ষণ খুব কম হতে হবে।
-
অনুভূমিকভাবে স্থাপন করতে হবে।
২০. রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রটি বিবৃত করো এবং এর গাণিতিক ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর:
বিবৃতি: যদি কোনো বাহ্যিক বল কাজ না করে, তবে একটি বন্ধ ব্যবস্থায় মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে।
গাণিতিক ব্যাখ্যা:
যেখানে ভর, প্রারম্ভিক বেগ এবং চূড়ান্ত বেগ।
২১. একটি বস্তু r সেমি ব্যাসার্ধবিশিষ্ট বৃত্তাকার পথের অর্ধেকটা t সেকেন্ড সময়ে অতিক্রম করে। বস্তুকণাটির সরণ, অতিক্রান্ত পথ, দ্রুতি ও বেগ নির্ণয় করো।
উত্তর:
অর্ধবৃত্তের পরিধি = ,
অতিক্রান্ত পথ =
সরণ = ব্যাসার্ধ =
দ্রুতি =
বেগ =
২২. নিউক্লিয় বল কাকে বলে? এই বলের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
নিউক্লিয় বল হলো সেই বল, যা নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনকে একত্রে ধরে রাখে।
বৈশিষ্ট্য:
-
এটি মৌলিক বলগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী।
-
এটি শুধুমাত্র নিউক্লিয়াসের ভেতর স্বল্প দূরত্বে কাজ করে।
২৩. মোলের সংজ্ঞা দাও। কোন্ বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার মান নির্ণয় করেন?
উত্তর:
মোল: কোনো পদার্থে যতটি কণিকা 12 গ্রাম কার্বন-12 তে থাকে, সেই সংখ্যক কণিকা সমবেষ্টিত পরিমাণকে এক মোল বলে।
অ্যাভোগাড্রো সংখ্যার মান প্রথম নির্ণয় করেন: Jean Perrin
২৪. 50 গ্রাম ভরের কোনো বস্তুর ওপর 2 নিউটন বল প্রয়োগ করলে ত্বরণ কত হবে ?
উত্তর:
ভর = 50 g = 0.05 kg
বল (F) = 2 N
ত্বরণ (a) = F / m = 2 / 0.05 = 40 m/s²
২৫. লম্বন ভুল কী?
উত্তর:
লম্বন ভুল হল এমন একটি পরিমাপক ভুল যা ঘটে যখন কোনো যন্ত্র বা বস্তু পরিমাপ করার সময় চোখটির অবস্থান স্কেলের লম্ব না হয়ে অন্য কোণে থাকে।
২৬. পরমাণু-ক্রমাঙ্ককে মৌলের স্বকীয় ধর্ম বলা হয় কেন?
উত্তর:
পরমাণু-ক্রমাঙ্ক (অর্থাৎ নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা) প্রত্যেক মৌলের একক ও নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য। এটি নির্ধারণ করে মৌলের রাসায়নিক ধর্ম, তাই একে মৌলের স্বকীয় ধর্ম বলা হয়।
২৭. সম আয়তনের x গ্যাস ও H₂ গ্যাসের ভর যথাক্রমে 12.46 গ্রাম এবং 0.89 গ্রাম। x গ্যাসের আণবিক গুরুত্ব কত?
উত্তর:
আণবিক গুরুত্ব = (x গ্যাসের ভর / H₂ গ্যাসের ভর) × H₂ এর আণবিক ভর
= (12.46 / 0.89) × 2 = 14 × 2 = 28
২৮. আংশিক পাতন কাকে বলে ?
উত্তর:
আংশিক পাতন হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যাতে মিশ্রিত দুটি তরলের ফুটনাঙ্কের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে একটিকে অন্য থেকে আলাদা করা হয়।
২৯. কখন কোনো বস্তুকণার ত্বরণ ও বেগের অভিমুখ বিপরীত হয়? নিউটনের প্রথম গতিসূত্রের অপর নাম কী ?
উত্তর:
যখন কোনো বস্তু ধীরগতিতে থামতে থাকে, তখন ত্বরণ ও বেগের অভিমুখ বিপরীত হয়।
নিউটনের প্রথম গতিসূত্রের অপর নাম: জাড্যের সূত্র ।
৩০. পরমাণু ও আয়নের মধ্যে কোনটি অধিক সুস্থিত এবং কেন?
উত্তর:
আয়ন পরমাণুর তুলনায় অধিক সুস্থিত, কারণ আয়ন সাধারণত পূর্ণ ইলেকট্রন বাহিত শক্তিস্তরে পৌঁছে যায় (octet বা duplet পূরণ করে), যা একে রসায়নগতভাবে অধিক স্থায়িত্ব প্রদান করে।
৩১. লিটারের সঙ্গে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস উষ্ণতার উল্লেখ থাকে কেন?
উত্তর:
৪°C তাপমাত্রায় জলের ঘনত্ব সর্বাধিক হয়। এই অবস্থায় ১ লিটার জলের ভর ঠিক ১ কেজি হয়। তাই মাপক নির্ভুল রাখতে ১ লিটার পরিমাপের জন্য ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার উল্লেখ করা হয়।
৩২. তিনটি মৌলিক একক দ্বারা গঠিত একটি স্কেলার এবং একটি ভেক্টর রাশির উদাহরণ দাও।
উত্তর:
স্কেলার রাশি: কাজ (Work) – একক: কেজি·মি²/সে²
ভেক্টর রাশি: বল (Force) – একক: কেজি·মি/সে²
৩৩.সমবেগে চলমান গাড়ির ভিতরে বসে থাকা যাত্রী একটি বলকে সোজা ওপরের দিকে ছুঁড়ে দিলে কিছুক্ষণ পরে বলটি সোজা এসে যাত্রীর হাতে পড়ে কেন?
উত্তর:
যাত্রী ও বল উভয়েই একই বেগে একই দিকে চলমান থাকে। বল ছুঁড়ে দেওয়ার পরেও এটি অনুভূমিক দিকে সেই গতিবেগ বজায় রাখে। ফলে বলটি সরাসরি ওপর-নিচে উঠানামা করলেও অনুভূমিকভাবে যাত্রীর সাথেই চলে এবং তার হাতে ফিরে আসে।
৩৪.Ca এবং Ca²⁺-এর মধ্যে কে বেশি সুস্থিত এবং কেন?
উত্তর:
Ca²⁺ আয়ন Ca পরমাণুর তুলনায় বেশি সুস্থিত, কারণ এটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে স্থিতিশীল গ্যাসবর্ণ ইলেকট্রন বিন্যাস (আর্গনের মত) অর্জন করে।
৩৫.M³⁺ আয়নে 10টি ইলেকট্রন এবং 14টি নিউট্রন আছে। M মৌলটির ইলেকট্রন বিন্যাস লেখো এবং ভরসংখ্যা নির্ণয় করো।
উত্তর:
M³⁺-এর ইলেকট্রন সংখ্যা = 10,
তাই মৌলটির পরমাণুতে ইলেকট্রন সংখ্যা = 13 (কারণ ৩টি ইলেকট্রন হারিয়েছে)
ইলেকট্রন বিন্যাস: 2, 8, 3
ভরসংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা (13) + নিউট্রন সংখ্যা (14) = 27
৩৬.25°C তাপমাত্রায় 136 g কোনো লবণ 500 g জলে দ্রবীভূত হলে একটি সম্পৃক্ত দ্রবণ উৎপন্ন হয়। এই তাপমাত্রায় লবণটির দ্রাব্যতা নির্ণয় করো।
উত্তর:
দ্রাব্যতা = (লবণের ভর / জলের ভর) × 100
= (136 / 500) × 100 = 27.2 g/100g জল
৩৭.লীনতাপের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর:
লীনতাপ হল সেই পরিমাণ তাপ যা কোনো পদার্থের অবস্থা পরিবর্তনের সময় (গলন বা বাষ্পীভবন) তার তাপমাত্রা না বাড়িয়ে শোষিত বা নিঃসৃত হয়।
৩৮.শিশিরাঙ্ক কী?
উত্তর:
শিশিরাঙ্ক হল সেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা যেখানে বাতাসে বিদ্যমান জলীয়বাষ্প সম্পৃক্ত হয়ে শিশির আকারে ঘনীভূত হতে শুরু করে।
৩৯. একটি ভালো তুলাযন্ত্রের কী কী গুণ থাকা প্রয়োজন? আলোকবর্ষ একটি মূল একক না লব্ধ একক?
উত্তর:
ভালো তুলাযন্ত্রের গুণাবলি:
– সূক্ষ্ম স্কেল ও সূক্ষ্ম সুই থাকতে হবে
– নির্ভুল ও সংবেদনশীল হতে হবে
– সহজে সমানুপাতিক ও শূন্য পাঠ নিশ্চিত করতে সক্ষম
আলোকবর্ষ একটি লব্ধ একক।
৪০.2 kg ভরের একটি বস্তুকণা 8 m/s বেগ নিয়ে একটি মসৃণ তলের ওপর গতিশীল আছে। 4 s-এ বস্তুটিকে স্থির অবস্থায় আনতে কত বল প্রয়োগ করতে হবে?
উত্তর:
v = 0, u = 8 m/s, t = 4 s
a = (v – u)/t = (0 – 8)/4 = –2 m/s²
F = m × a = 2 × (–2) = –4 N (নেতিবাচক চিহ্ন বলটি বিপরীত দিকে প্রয়োগ করা হয়েছে বোঝাতে)
উত্তর:
গড় দ্রুতি = (2uv)/(u + v)
৪২. STP-তে ২২৪ সেমি³ একটি গ্যাসের ভর ০.৪৪ গ্রাম হলে গ্যাসটির আণবিক ভর কত?
উত্তর: STP-তে ১ মোল গ্যাসের আয়তন ২২,৪০০ সেমি³। তাই,
১ মোল গ্যাসের ভর = (০.৪৪ গ্রাম × ২২,৪০০ সেমি³) / ২২৪ সেমি³ = ৪৪ গ্রাম/মোল।
৪৩.STP-তে ১১.২ লিটার CO₂ থেকে ১০²³ অণু অপসারণ করলে কতগুলি অণু পড়ে থাকে?
উত্তর: STP-তে ১ মোল গ্যাসের আয়তন ২২.৪ লিটার এবং এতে ৬.০২২ × ১০²³টি অণু থাকে। তাই,
১১.২ লিটার CO₂-তে অণুর সংখ্যা = (৬.০২২ × ১০²³ অণু × ১১.২ লিটার) / ২২.৪ লিটার = ৩.০১১ × ১০²³ অণু।
অপসারিত অণুর সংখ্যা = ১০²³ অণু।
অতএব, অবশিষ্ট অণুর সংখ্যা = ৩.০১১ × ১০²³ অণু - ১০²³ অণু = ২.০১১ × ১০²³ অণু।
৪৪.মোলার আয়তন কাকে বলে?
উত্তর: মোলার আয়তন হল কোনো পদার্থের ১ মোলের আয়তন। STP-তে, ১ মোল গ্যাসের আয়তন ২২.৪ লিটার।
৪৫. অতি নিম্নচাপেই ক্যাথোড রশ্মি উৎপন্ন হয় কেন?
উত্তর: উচ্চ চাপে গ্যাস বিদ্যুৎ পরিবাহিতায় বাধা সৃষ্টি করে। নিম্নচাপে গ্যাসের ঘনত্ব কমে যায়, ফলে ইলেকট্রনগুলি সহজে অণু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্যাথোড রশ্মি তৈরি করতে পারে।
৪৬.α-কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষায় সোনার পাত ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তর: সোনা অত্যন্ত পাতলা এবং নমনীয় ধাতু, যা মাত্র কয়েকটি পরমাণুর স্তর নিয়ে গঠিত। এটি α-কণাগুলিকে সহজে ভেদ করতে দেয় এবং পরমাণুর গঠন সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে।
৪৭.স্থির কক্ষপথ কাকে বলে?
উত্তর: স্থির কক্ষপথ হল নির্দিষ্ট শক্তিস্তরের কক্ষপথ যেখানে ইলেকট্রন ঘূর্ণায়মান থাকলেও শক্তি বিকিরণ করে না এবং স্থিতিশীল থাকে।
৪৮.রেখা বর্ণালির উৎপাদন কীভাবে ব্যাখ্যা করা হয়?
উত্তর: ইলেকট্রন একটি উচ্চ শক্তিস্তর থেকে নিম্ন শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হলে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ফোটন নির্গত হয়, যা রেখা বর্ণালি তৈরি করে। প্রতিটি মৌলের জন্য এই রেখাগুলি স্বতন্ত্র।
৪৯. রোলার ঠেলার চেয়ে টানা সুবিধাজনক কেন?
উত্তর: রোলার টানার সময় বলের একটি অংশ উর্ধ্বমুখী হয়, যা রোলারের উপরকার বল কমায় এবং ঘর্ষণ হ্রাস করে। ঠেলার সময় বলের একটি অংশ নিম্নমুখী হয়, যা রোলারের উপরকার বল বাড়ায় এবং ঘর্ষণ বৃদ্ধি করে।
৫০.একটি গাড়ি ব্রেক কষে ৬ মি/সে² মন্দন তৈরি করে ও ২ সেকেন্ড পর স্থির হয়। এই সময় গাড়িটি কতটা দূরত্ব অতিক্রম করে?
উত্তর: প্রাথমিক বেগ (u) = ৬ মি/সে, চূড়ান্ত বেগ (v) = ০ মি/সে, সময় (t) = ২ সেকেন্ড।
দূরত্ব (s) = ut + ½ at² = (৬ মি/সে × ২ সে) + ½ × (-৬ মি/সে²) × (২ সে)² = ১২ মিটার - ১২ মিটার = ১২ মিটার।
৫২. তোমার বইয়ের ২৫ থেকে ৮৬ নং পাতা পর্যন্ত বেধ ৫ মিমি হলে, প্রতিটি পাতার বেধ কত?
উত্তর: পাতার সংখ্যা = ৮৬ - ২৫ + ১ = ৬২।
প্রতিটি পাতার বেধ = ৫ মিমি / ৬২ = ০.০৮০৬ মিমি।
৫৩.মাপনী চোঙ দ্বারা একটি পাথরখণ্ডের ঘনত্ব কীভাবে মাপবে?
উত্তর: প্রথমে মাপনী চোঙে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল নাও এবং তার আয়তন নোট করো। এরপর পাথরখণ্ডটি জলে নিমজ্জিত করো এবং নতুন আয়তন নোট করো। পাথরখণ্ডের আয়তন = নতুন আয়তন - প্রাথমিক আয়তন। এরপর পাথরখণ্ডের ভর মেপে, ঘনত্ব = ভর / আয়তন সূত্রে ঘনত্ব নির্ণয় করো।
৫৪.রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র থেকে নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র প্রতিষ্ঠা করো।
উত্তর: রৈখিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র অনুযায়ী, দুটি বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষের আগে ও পরে মোট ভরবেগ অপরিবর্তিত থাকে। যদি একটি বস্তু অন্যটির উপর বল প্রয়োগ করে, তবে দ্বিতীয় বস্তুটি সমান ও বিপরীতমুখী বল প্রথমটির উপর প্রয়োগ করে, যা নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের প্রতিফলন।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
১. 92U235-এ ইলেকট্রন সংখ্যা কত? এই পরমাণুতে আরও 3টি নিউট্রন বেশি থাকলে তাকে কীভাবে লেখা হবে? উক্ত পরমাণু দুটির সম্পর্ক কী?
উত্তর:
ইউরেনিয়াম-235 পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা 92, অর্থাৎ এতে 92টি প্রোটন এবং স্বাভাবিকভাবে 92টি ইলেকট্রন থাকে।
পরমাণুর নিউট্রন সংখ্যা নির্ণয়:
যদি এতে আরও 3টি নিউট্রন যুক্ত হয়, তাহলে নতুন পরমাণুর ভর সংখ্যা হবে:
এটি 92U238 দ্বারা প্রকাশ করা হবে।
উভয় পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা সমান হওয়ার জন্য এরা পরস্পরের আইসোটোপ।
২. একটি ট্রেন মোট দূরত্বের দুই তৃতীয়াংশ দূরত্ব 40 কিমি/ঘণ্টা বেগে ও বাকি এক তৃতীয়াংশ দূরত্ব 30 কিমি/ঘণ্টা গতিবেগে অতিক্রম করে। ট্রেনটির গড় গতিবেগ কত?
উত্তর:
গড় গতিবেগ নির্ণয়ের সূত্র:
ধরো, মোট দূরত্ব D।
প্রথম অংশের জন্য:
দূরত্ব = ,
বেগ = 40 কিমি/ঘণ্টা,
সময় = ঘণ্টা।
দ্বিতীয় অংশের জন্য:
দূরত্ব = ,
বেগ = 30 কিমি/ঘণ্টা,
সময় = ঘণ্টা।
মোট সময়:
ল.সা.গু 180 ব্যবহার করে,
সুতরাং, গড় গতিবেগ:
উত্তর:
মহাকর্ষীয় ধ্রুবক
G =
এখন, এককের মাত্রা বসাই:
F (বল) এর মাত্রা =
r (দূরত্ব) এর মাত্রা =
m (ভর) এর মাত্রা =
তাহলে,
অতএব, G-এর মাত্রা হল:
৩. জলে অদ্রাব্য কোনো কঠিন বস্তুর ঘনত্ব, আয়তন মাপক চোঙ ও সাধারণ তুলাযন্ত্রের সাহায্যে কীভাবে নির্ণয় করবে?
উত্তর:
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি: সাধারণ তুলাযন্ত্র, মাপক চোঙ, জল, সূক্ষ্ম সুতো
পদ্ধতি:
১. কঠিন বস্তুটি শুকনো অবস্থায় ওজন করো – এটি হবে তার ভর (m)।
২. একটি মাপক চোঙে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল নাও এবং তার প্রাথমিক জলস্তর দেখে রাখো।
৩. বস্তুটিকে সূতো দিয়ে জলে ডুবিয়ে দাও যাতে এটি পুরোপুরি ডুবে যায়। নতুন জলস্তর পড়ো।
৪. জলস্তরের পার্থক্য হলো বস্তুর আয়তন (V)।
৫. ঘনত্ব নির্ণয় করো:
এভাবে অদ্রাব্য কঠিন বস্তুর ঘনত্ব নির্ণয় করা যায়।
৪. 100 গ্রাম ভরের একটি ক্রিকেট বল 144 km/hr বেগে ব্যাটসম্যানের দিকে গেল। ব্যাটসম্যান, ব্যাটের সাহায্যে বলটিকে আবার করে 216 km/hr বেগে বিপরীত দিকে ফেরৎ পাঠাল। ব্যাট ও বলের সংঘাতকাল 0.1s হলে, ব্যাটসম্যান বলটির ওপর ব্যাটে সাহায্যে কত বল প্রয়োগ করেছিল?
উত্তর:
প্রথমে এককে রূপান্তর করি:
144 km/h =
216 km/h =
যেহেতু বলটি বিপরীত দিকে পাঠানো হয়েছে, তাই চূড়ান্ত বেগ হবে
প্রাথমিক ভর
প্রাথমিক বেগ
চূড়ান্ত বেগ
সময়
বল
বল = 100 N, বিপরীত দিকে প্রয়োগ হয়েছে।
৫. নিউক্লিয় বল বলতে কী বোঝো? নিউক্লিয় বলের একটি বৈশিষ্ট্য লেখো। y²⁻ আয়নে 10টি ইলেকট্রন আছে। মৌলটির পরমাণু-ক্রমাঙ্ক কত?
উত্তর:
নিউক্লিয় বল: নিউক্লিয় বল হলো সেই বল যা পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটন ও নিউট্রনকে একত্রে ধরে রাখে। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং স্বল্প দূরত্বে কাজ করে।
বৈশিষ্ট্য: এটি মৌলিক বলগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী, তবে খুব স্বল্প পরিসরে (১০⁻¹⁵ মিটার) কাজ করে।
y²⁻ আয়নে 10টি ইলেকট্রন আছে। অর্থাৎ, নিরপেক্ষ অবস্থায় এর ইলেকট্রন সংখ্যা ছিল 8।
সুতরাং, মৌলটির পরমাণু-ক্রমাঙ্ক = 8 (অর্থাৎ, অক্সিজেন)।
৬. সাধারণ তুলাযন্ত্র ও মাপনী চোঙ ব্যবহার করে একটি অসম আকৃতির কঠিন বস্তুর ঘনত্ব কিভাবে নির্ণয় করবে?
উত্তর:
অসম আকৃতির কঠিন বস্তুর ঘনত্ব নির্ণয়ের জন্য নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে:
(ক) ভর নির্ণয়:
সাধারণ তুলাযন্ত্র ব্যবহার করে কঠিন বস্তুর ভর (m) নির্ণয় করো।
(খ) আয়তন নির্ণয়:
একটি মাপনী চোঙে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল নিয়ে সেটির উচ্চতা লক্ষ্য করো।
এরপর বস্তুটি আস্তে করে জলে ডুবিয়ে দাও।
জলের স্তর যতটা উপরে উঠল, সেই পরিবর্তনই বস্তুর আয়তন (V)।
(গ) ঘনত্ব নির্ণয়:
ঘনত্ব (ρ) = ভর (m) / আয়তন (V)
এইভাবে ঘনত্ব নির্ণয় করা যায়।
<<<<<<<<<<<<<🌹 সমাপ্ত 🌹>>>>>>>>>>>>>