✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
📝 1. আপেক্ষিক আর্দ্রতা কাকে বলে?
✅ উত্তর: আপেক্ষিক আর্দ্রতা হল বায়ুর মধ্যে উপস্থিত জলের বাষ্পের পরিমাণ এবং নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বায়ু যতটুকু বাষ্প ধারণ করতে পারে, তার অনুপাত শতকরায় প্রকাশ করা। এটি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
📝 2. শিলাবৃষ্টি কাকে বলে?
✅ উত্তর: মেঘের মধ্যে অতি শীতল জলবিন্দু ও বরফকণার সংমিশ্রণে বৃহৎ শিলার মতো বরফ তৈরি হয়ে মাটিতে পড়লে তাকে শিলাবৃষ্টি বলে। এটি সাধারণত বজ্রগর্ভ মেঘে ঘটে।
📝 3. হ্রদ অঞ্চলের পঙ্গুহ্রদের নামগুলি লেখো। এই হ্রদগুলিকে কোন্ নদী যুক্ত করেছে?
✅ উত্তর: হ্রদ অঞ্চলের পঙ্গুহ্রদগুলি হলো – লেক সুপিরিয়র, লেক হিউরন, লেক ইরি, লেক অন্টারিও ও লেক মিশিগান। এই হ্রদগুলিকে সেন্ট লরেন্স নদী যুক্ত করেছে, যা আটলান্টিক মহাসাগরে মিশেছে।
📝 4. কোন্ অঞ্চলকে 'মৃত্যু উপত্যকা' বলে এবং কেন?
✅ উত্তর: উত্তর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের মধ্য প্রান্তে অবস্থিত অঞ্চলকে ‘মৃত্যু উপত্যকা’ (Death Valley) বলে। এখানে উষ্ণতম তাপমাত্রা (৫৬.৭°C পর্যন্ত) রেকর্ড করা হয়েছে, এবং অতিরিক্ত শুষ্কতা ও অনাবৃষ্টির কারণে জীবনধারণ প্রায় অসম্ভব।
📝 5. শীতকালে উত্তর আমেরিকার মহাদেশের উত্তরের নদী গুলো নৌ পরিবহনযোগ্য নয় কেন?
✅ উত্তর: শীতকালে উত্তর আমেরিকার উত্তরের নদীগুলি জমে বরফে পরিণত হয়। ফলে জলপথে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অতিরিক্ত তুষারপাতও পরিবহণে বাধা সৃষ্টি করে।
📝 6. লরেন্সীয় মালভূমি সম্পর্কে যা জানো লেখো।
✅ উত্তর:
লরেন্সীয় মালভূমি উত্তর আমেরিকার প্রাচীন ভূমির অংশ, যা কানাডার পূর্বভাগে অবস্থিত।
এটি শিলাচ্যুত, খনিজসমৃদ্ধ এবং হ্রদে পূর্ণ একটি মালভূমি।প্রচুর খনিজ ও বনসম্পদ থাকায় এখানে খনি শিল্প ও বনভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠেছে।
📝 7. কর্ডিলেরা বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর:কর্ডিলেরা বলতে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল ঘেঁষে বিস্তৃত পর্বতশ্রেণিকে বোঝানো হয়।
এটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম অংশজুড়ে বিস্তৃত পর্বতমালার সমষ্টি।
এই পর্বতমালায় রকি, আন্দিজ ও অন্যান্য অনেক পর্বতশ্রেণি অন্তর্ভুক্ত।
📝 8. কোন মেঘকে বজ্র মেঘ বলে এবং কেন?
✅ উত্তর: কিউমুলোনিম্বাস মেঘকে বজ্র মেঘ বলা হয়।
এই মেঘ আকারে বিশাল, উচ্চতা অনেক বেশি এবং এর থেকে বজ্রবিদ্যুৎ, বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়।
📝 9. পঞ্চ হ্রদ কী?
✅ উত্তর:উত্তর আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সীমান্তে অবস্থিত পাঁচটি বৃহৎ হ্রদকে পঞ্চ হ্রদ বলে।
এগুলি হল – সুপিরিয়র, হিউরন, অন্টারিও, ইরী ও মিশিগান।
📝 10. কাকে এবং কেন পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি বলা হয়?
✅ উত্তর:উত্তর আমেরিকার প্রেইরি অঞ্চলকে পৃথিবীর রুটির ঝুড়ি (Bread Basket of the World) বলা হয়। কারণ এই অঞ্চলে প্রধানত গম উৎপন্ন হয় এবং তা বিশ্বব্যাপী রপ্তানি হয়।
উপযুক্ত জলবায়ু, যন্ত্রচালিত কৃষি এবং উর্বর মৃত্তিকা এর জন্য দায়ী।
📝 11. টীকা লেখ: ঘূর্ণবাতের চক্ষু।
✅ উত্তর:ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত শান্ত ও শান্তিপূর্ণ অঞ্চলকে ঘূর্ণবাতের চক্ষু (Eye of the Cyclone) বলা হয়। এখানে বায়ুচাপ অত্যন্ত নিম্ন হলেও বায়ুপ্রবাহ প্রায় থাকে না। চক্ষুর চারপাশেই সবচেয়ে প্রবল ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয়।
📝 12. ঘূর্ণবাত কাকে বলে?
✅ উত্তর:ঘূর্ণবাত হল নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারদিকে বায়ুর ঘূর্ণায়মান প্রবাহ। এটি দিক পরিবর্তন করে ঘূর্ণায়মানভাবে কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বায়ু প্রবাহিত করে। এর ফলে প্রচণ্ড ঝড়, বৃষ্টিপাত ও ধ্বংসাত্মক প্রভাব দেখা যায়।
📝 13. উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে পঞ্চহ্রদের দেশ বলা হয় কেন?
✅ উত্তর:উত্তর আমেরিকার কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পাঁচটি বিশাল হ্রদ অবস্থিত — সুপিরিয়র, হিউরন, অন্টারিও, ইরি ও মিশিগান।
এই পাঁচটি হ্রদ একসঙ্গে “পঞ্চহ্রদ” নামে পরিচিত।
এদের বিশালতা ও গুরুত্বপূর্ণ ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থানের জন্যই এই মহাদেশকে পঞ্চহ্রদের দেশ বলা হয়।
📝 14. মৃত্যু উপত্যকা কাকে বলে?
✅ উত্তর:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের একটি মরুভূমি অঞ্চলকে মৃত্যু উপত্যকা (Death Valley) বলা হয়। এখানে পৃথিবীর অন্যতম উষ্ণতম ও শুষ্কতম আবহাওয়া বিরাজ করে। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৫৬.৭°C পর্যন্ত পৌঁছতে পারে বলে এখানে বসবাস প্রায় অসম্ভব।
📝 15. শিশিরাঙ্ক কাকে বলে?
✅ উত্তর:শিশিরাঙ্ক হল সেই তাপমাত্রা যেখানে বাতাস সম্পূর্ণ পরিমাণে জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে। এই তাপমাত্রায় বাতাসে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির, কুয়াশা বা মেঘ তৈরি করে।
এটি আর্দ্রতার মাত্রা নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচক।
📝 16. অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর:বায়ুমণ্ডল থেকে জলীয়বাষ্পের কঠিন বা তরল রূপে (যেমন: বৃষ্টি, তুষার, কুয়াশা ইত্যাদি) পৃথিবীপৃষ্ঠে পতনকে অধঃক্ষেপণ বলে।
এটি জলচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
এর মাধ্যমে জল ভূ-পৃষ্ঠে ফিরে আসে।
📝 17. চিনুক কি?
✅ উত্তর:চিনুক হল কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের রকি পর্বতের পূর্ব ঢালে বইতে থাকা একটি উষ্ণ ও শুকনো স্থানীয় বায়ু। এটি বরফ গলাতে সাহায্য করে বলে “বরফখেকো বায়ু” নামেও পরিচিত।
চিনুক কৃষিকাজের জন্য উপকারী কারণ এটি শীতকালে তাপমাত্রা হ্রাসের ক্ষতি কমায়।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
📝 1. উদাহরণসহ বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করো।
✅ উত্তর: বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল গঠিত হয় যখন আর্দ্র বায়ু পর্বতের এক পাশে উঠে ঠান্ডা হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এরপর শুকনো বায়ু পর্বতের অন্য পাশে নামে। ফলে পর্বতের অপর পাশে বৃষ্টির অভাব হয়। এই অঞ্চলেই বৃষ্টিচ্ছায় তৈরি হয়। উদাহরণ: আন্ধিজ পর্বতের পশ্চিমে অ্যাটাকামা মরুভূমি।
📝 2. নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রতিদিন বিকেলবেলা বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হয় কেন?
✅ উত্তর: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য ঠিক মাথার উপর থাকায় প্রচণ্ড গরম পড়ে। এতে জলীয় বাষ্প দ্রুত উপরে উঠে ঘন মেঘ তৈরি করে। বিকেলবেলায় সেই মেঘ থেকে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়া প্রতিদিন ঘটে বলে নিয়মিত বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টিকে চিরহরিৎ বৃষ্টি বলা হয়।
📝 3. গোধূলি অঞ্চল কাকে বলে এবং কেন?
✅ উত্তর: গোধূলি অঞ্চল হল মধ্য অক্ষাংশীয় অঞ্চল, যেখানে উষ্ণ ও শীতল জলবায়ুর মিশ্রণ দেখা যায়। দিন ও রাতের পার্থক্য খুব বেশি নয়। এই অঞ্চলের জলবায়ু মনোরম ও কৃষির জন্য উপযুক্ত। এখানকার ঘাস ও গবাদি পশুপালন বিখ্যাত। তাই এই অঞ্চলকে “গোধূলি অঞ্চল” বলা হয়।
📝 4. হ্রদ অঞ্চল পশুপালনে উন্নত কেন?
✅ উত্তর: হ্রদ অঞ্চলে প্রচুর জল সরবরাহ ও ঘাসের প্রাচুর্য রয়েছে। তৃণভোজী পশুর জন্য এটি আদর্শ। এখানকার সমভাবাপন্ন জলবায়ু পশুপালনের জন্য উপযোগী। এই অঞ্চলে দুগ্ধশিল্পেরও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। ফলে হ্রদ অঞ্চল পশুপালনে উন্নত।
📝 5. দক্ষিণ আমেরিকার নদীগুলির যেকোনো তিনটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
✅ উত্তর:
১. দক্ষিণ আমেরিকার নদীগুলি দীর্ঘ ও বিস্তৃত প্রবাহ বিশিষ্ট।
২.এই নদীগুলি সারাবছর জলপ্রবাহ বজায় রাখে, বিশেষত আমাজন নদী বিশ্বের জলের সবচেয়ে বড় উৎস।
৩.অধিকাংশ নদী বিশাল জঙ্গলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং হাইড্রোইলেকট্রিক শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
📝 6. সিরাস মেঘ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
✅ উত্তর:
সিরাস মেঘ আকাশের সর্বোচ্চ স্তরে গঠিত পাতলা, সাদা ও তুলোর মতো মেঘ। এগুলি সাধারণত ৬,০০০ থেকে ১২,০০০ মিটার উচ্চতায় দেখা যায়। এই মেঘে জলবিন্দুর পরিবর্তে বরফকণা থাকে।
সিরাস মেঘ আবহাওয়ার পরিবর্তনের পূর্বাভাস দেয়। এগুলি সূর্যাস্তের সময় লালচে বা কমলা রঙ ধারণ করে সুন্দর দৃশ্য সৃষ্টি করে।
📝 7. কিউমুলোনিম্বাস মেঘ সম্পর্কে আলোচনা কর।
✅ উত্তর:কিউমুলোনিম্বাস মেঘ হচ্ছে অতি উচ্চ ও ঘন বৃষ্টি বহনকারী মেঘ। এটি নিচু স্তর থেকে গঠন শুরু করে অনেক উচ্চতায় বিস্তৃত হয়।
এই মেঘ বজ্রবিদ্যুৎ, ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়। গ্রীষ্মকালে এই মেঘ দ্রুত গঠিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। একে "বজ্রপাতের মেঘ" বলেও অভিহিত করা হয়।
📝 8. দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের সম্পর্কে আলোচনা কর।
✅ উত্তর:দক্ষিণ আমেরিকার চিলি দেশের মধ্যভাগে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়।
এই অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও উষ্ণ এবং শীতকাল আর্দ্র ও মৃদু হয়। বছরে সাধারণত ২৫০ থেকে ৭৫০ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়, যা শীতকালে বেশি ঘটে।
এই জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান উদ্ভিদ হল ঝোপঝাড় ও কাঁটাযুক্ত ছোট গাছ। ‘চ্যাপ্যারাল’ ধরনের উদ্ভিদও এখানে জন্মে, যা খরা সহনশীল। আঙ্গুর, জলপাই ও সাইট্রাস ফল চাষের জন্য এই অঞ্চল বিশেষভাবে উপযোগী।
📝 9. বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
✅ উত্তর:যে অঞ্চলে পার্বত্য ঢালের বাতাস উঠে গিয়ে মেঘ হয়ে বৃষ্টি হয় এবং অপর ঢালে শুকনো গরম বাতাস নামে, সেই শুকনো অংশকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত খুবই কম হয়।
পার্বত্য বাধার কারণে বায়ুর আর্দ্রতা নিঃশেষিত হয়ে যায় বলে এমন হয়।
উদাহরণ: হিমালয়ের পুব ঢালে প্রচুর বৃষ্টি হলেও পশ্চিম ঢালে (লাদাখ অঞ্চল) বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে।
📝 10. আমাজন নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কেন?
✅ উত্তর:আমাজন নদীর মোহনায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি কারণ এর প্রবাহ খুবই তীব্র এবং মোহনায় স্রোতের গতি বেশি। নদীটি তার গতি ও পরিমাণে প্রবল বলে নদীবাহিত পলি জমে উঠতে পারে না।
এ ছাড়া মোহনা অতিমাত্রায় প্রশস্ত হওয়ায় পলি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পলি জমে একত্রিত হয়ে দ্বীপ তৈরি করতে পারে না। তাই এখানে বদ্বীপ নয়, মোহনা অঞ্চল গঠন হয়েছে।
📝 11. পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয় কোন অরণ্য অঞ্চলকে? চাঁদোয়া বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর:পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয় দক্ষিণ আমাজন অরণ্য অঞ্চলকে, কারণ এটি পৃথিবীর প্রায় ২০% অক্সিজেন উৎপন্ন করে। এই অরণ্য বিশাল এলাকা জুড়ে ঘন বৃক্ষরাজিতে আচ্ছাদিত, যা বাতাস বিশুদ্ধ করে এবং জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এখানকার গাছপালার বিস্তার এত ঘন যে সূর্যালোক মাটিতে পৌঁছায় না।
এই ধরনের ঘন অরণ্যকে চাঁদোয়া বলা হয়।
চাঁদোয়া মূলত বিভিন্ন স্তরের গাছের পত্রপল্লব একসঙ্গে মিলিত হয়ে ছায়াময় পরিবেশ তৈরি করে।
📝 12. আমাজন পৃথিবীর বৃহত্তম নদী কেন?
✅ উত্তর:আমাজন নদী জলের বহনক্ষমতার দিক থেকে পৃথিবীর বৃহত্তম নদী। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৪০০ কিমি হলেও এটি প্রশস্ত এবং গভীর নদী।
এটি প্রায় ১১০০-র বেশি উপনদী নিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রবাহিত।
বিশেষ করে বৃষ্টিবহুল আমাজন অরণ্য থেকে বিশাল পরিমাণ জল সংগ্রহ করে। প্রতিদিন কোটি কোটি কিউবিক মিটার জল আটলান্টিক মহাসাগরে বহন করে।
📝 13. দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ক্রান্তীয় অঞ্চলের পশ্চিম প্রান্তে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে কেন?
✅ উত্তর:এই অঞ্চলে আন্দিজ পর্বতমালার পশ্চিম ঢালে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি না হওয়ায় আর্দ্রতা পৌঁছায় না। এর ফলে পশ্চিম ঢাল শুষ্ক থাকে এবং মরুভূমি সৃষ্টি হয়। এছাড়া এখান দিয়ে প্রবাহিত হাম্বোল্ট ঠাণ্ডা স্রোত বাষ্পীয়ীভবন বাধা দেয়। বাতাসে জলীয়বাষ্পের অভাব মরু পরিস্থিতি তৈরি করে। এই কারণে আটাকামা মরুভূমি বিশ্বের অন্যতম শুষ্কতম অঞ্চল।
📝 14. ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ও নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের তিনটি পার্থক্য লেখ।
✅ উত্তর:১.ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত গঠিত হয় সমুদ্রপৃষ্ঠে, নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত স্থল ও জলভাগে।
২.ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত কেন্দ্রমুখী, নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত কেন্দ্রবিমুখী।
৩.ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত সাধারণত গ্রীষ্মে হয়, নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত শীতে বেশি ঘটে।
৪.ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত কম চাপে জন্ম নেয়, অন্যটি দুই ভিন্ন বায়ুপ্রবাহের সংঘর্ষে হয়।
৫.পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বেশি দেখা যায়, নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত উত্তর আটলান্টিকে বেশি।
📝 15. ঘূর্ণবাত ও প্রতিপ ঘূর্ণবাতের তিনটি পার্থক্য লেখ।
✅ উত্তর:১. ঘূর্ণবাত নিম্নচাপ কেন্দ্রে তৈরি হয়, প্রতিপ ঘূর্ণবাত উচ্চচাপ কেন্দ্রে হয়।
২.ঘূর্ণবাতে বাতাস কেন্দ্রমুখী, প্রতিপ ঘূর্ণবাতে বাতাস কেন্দ্রবিমুখী।
৩.ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত ও ঝড় আনে, প্রতিপ ঘূর্ণবাত শুষ্ক ও শান্ত আবহাওয়া সৃষ্টি করে।
৪.ঘূর্ণবাতে মেঘ জমে, প্রতিপ ঘূর্ণবাতে মেঘ ছেঁটাতে থাকে।
৫.ঘূর্ণবাত বেশি বিপজ্জনক, প্রতিপ ঘূর্ণবাত কম ক্ষতিকর।
📝 16. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের বিবরণ দাও।
✅ উত্তর:শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটে যখন আর্দ্র বায়ু পর্বতের ঢালে উঠে ঠাণ্ডা হয়ে সংবাহিত হয়।
বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পেয়ে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি হয়।
এটি সাধারণত পাহাড় বা পর্বতের ধারে দেখা যায়।
পূর্ব ঢালে বৃষ্টি হলেও পশ্চিম ঢাল শুষ্ক থাকে—একে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে।
এই প্রকার বৃষ্টি ভারতের পশ্চিমঘাট, আন্দেস ও রকি পর্বতের পূর্ব ঢালে দেখা যায়।
📝 17. অ্যানাবেটিক ও ক্যাটাবেটিক বায়ু কাকে বলে?
✅ উত্তর:অ্যানাবেটিক বায়ু হল গরম বায়ু যা পাহাড়ি ঢালে উপরের দিকে উঠে যায়।
এটি দিনে সূর্য উত্তাপে গঠিত হয়।
ক্যাটাবেটিক বায়ু হল ঠান্ডা ভারী বায়ু যা রাতের দিকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নামে।
এটি ঠান্ডা অঞ্চল বা শীতল রাত্রিতে সৃষ্টি হয়।
এই দুই বায়ুর প্রভাবে পাহাড়ি অঞ্চলে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন হয়।
📝 18. পম্পাস অঞ্চল কে দক্ষিণ আমেরিকার শস্য ভান্ডার বলা হয় কেন?
✅ উত্তর:পম্পাস অঞ্চল উর্বর মাটি, মধ্যভাগে অবস্থিত ও উপযুক্ত জলবায়ুর জন্য চাষের উপযোগী।এখানে গম, ভুট্টা, বার্লি ইত্যাদি খাদ্যশস্য প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। এ অঞ্চল সমতল এবং কৃষিযন্ত্র চালানো সহজ।
পশুপালনও উন্নত, যা সারের জোগান ও চাষে সহায়তা করে। এই সব কারণে একে দক্ষিণ আমেরিকার শস্যভান্ডার বলা হয়।
📝 19. হ্রদ অঞ্চলের শিল্প উন্নতির তিনটি কারণ লেখ।
✅ উত্তর: ১. প্রচুর জল ও জলবিদ্যুৎ পাওয়া যায় যা শিল্পে ব্যবহার হয়।
২.লোহার আকরিক ও খনিজ পদার্থের প্রাচুর্য।
৩.ভালো পরিবহণ ব্যবস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় বাণিজ্যিক সুবিধা।
৪.বিশাল জনবসতি ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক শক্তি।
৫.কৃষি ও খনিজ সম্পদ শিল্পকে সহায়তা করে।
📝 20. সেলভা অরণ্যে চির গোধূলি অঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে কেন?
✅ উত্তর:
সেলভা অঞ্চলে গাছপালা এত ঘন এবং উঁচু যে সূর্যালোক মাটিতে পৌঁছায় না। বিভিন্ন স্তরের গাছের পাতা একে অপরকে ঢেকে দেয়। এই কারণে দিনের বেলাতেও নিচু স্তরে আলো কম থাকে। এই পরিস্থিতিকে চির গোধূলি অঞ্চল বলা হয়। এটি মূলত আমাজন অরণ্য অঞ্চলে দেখা যায়।
<<<<<<<<<<<<<<🌹 সমাপ্ত 🌹>>>>>>>>>>>>

