✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
১। শীতকালে গায়ে কম্বল চাপা দিলে গরম লাগে কেন?
উঃ কম্বল তাপের ভাল নিরোধক। এটি শরীর থেকে নির্গত তাপকে বাইরে যেতে দেয় না এবং বাইরের ঠান্ডা বাতাস শরীরের সংস্পর্শে আসতে বাধা দেয়। ফলে শরীরের চারপাশে একটি উষ্ণ পরিবেশ তৈরি হয় এবং গরম লাগে।
২। শিল্পাঞ্চলে শীতকালে ঘন কুয়াশা দেখা যায় কেন?
উঃ শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকার ফলে বাতাসে উপস্থিত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করে। শিল্পাঞ্চলে বাতাসে ধোঁয়া, ধুলা ও কণিকা বেশি থাকার কারণে এই কণিকাগুলি জলবিন্দুর ঘনীভবনের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে, ফলে ঘন কুয়াশা সৃষ্টি হয়।
৩। CuO + H₂ → Cu + H₂O - জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটে প্রদত্ত বিক্রিয়ার সাহায্যে ব্যাখ্যা করো।
উঃ এই বিক্রিয়ায় CuO (কপার অক্সাইড) হাইড্রোজেন দ্বারা বিজারিত হয়ে Cu (তামা) হয়ে যায় — এটি একটি বিজারণ (reduction) প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে H₂ অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয়ে H₂O (জল) তৈরি করে — এটি একটি জারণ (oxidation) প্রক্রিয়া।
অতএব, এই বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটে, একে বলা হয় রেডক্স (redox) বিক্রিয়া।
৪। পার্থক্য লেখো : গলন ও কঠিনীভবন।
উঃ
বিষয় | গলন | কঠিনীভবন |
---|---|---|
সংজ্ঞা | কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হওয়াকে গলন বলে। | তরল পদার্থ কঠিনে পরিণত হওয়াকে কঠিনীভবন বলে। |
তাপের ভূমিকা | তাপ শোষণ করে ঘটে। | তাপ বিকর্ষণ করে ঘটে। |
উদাহরণ | বরফ গলে জল হওয়া। | জল জমে বরফ হওয়া। |
৫। পার্থক্য লেখো : তড়িবিশ্লেষ্য পদার্থ ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ।
উঃ
বিষয় | তড়িবিশ্লেষ্য পদার্থ | তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ |
---|---|---|
সংজ্ঞা | যে পদার্থ তড়িৎ প্রবাহে আয়নায়িত হয়ে জড়িত পদার্থে বিভাজিত হয় তাকে তড়িবিশ্লেষ্য পদার্থ বলে। | যে পদার্থ তড়িৎ প্রবাহে কোনো পরিবর্তন ঘটায় না তাকে তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ বলে। |
বৈশিষ্ট্য | আয়নযুক্ত ও তড়িৎ পরিবাহী। | আয়নহীন বা তড়িৎ অপরিবাহী। |
উদাহরণ | NaCl দ্রবণ, H₂SO₄ দ্রবণ। | চিনি দ্রবণ, বিশুদ্ধ জল। |
৬। 10g জলের উষ্ণতা 25°C থেকে 45°C বাড়াতে কত পরিমাণ তাপ প্রয়োগ করতে হবে?
উঃ
প্রদত্ত:
• জলর পরিমাণ, m = 10g
• প্রাথমিক তাপমাত্রা = 25°C
• চূড়ান্ত তাপমাত্রা = 45°C
• জলের আপেক্ষিক তাপ, c =1 cal/g·°C
তাপের পরিমাণ,
Q = mcΔT = 10 × 1 × (45 – 25)
= 10 × 1 × 20
= 200 cal.
৭। থার্মোফ্লাস্কে গরম তরল রাখলে তা অনেকক্ষণ গরম থাকে কেন?
উঃ
থার্মোফ্লাস্ক একটি তাপ নিরোধক পাত্র। এতে ভিতরের এবং বাইরের স্তরের মধ্যে ভ্যাকুয়াম থাকে, যা তাপ পরিবাহিতা, বিকিরণ এবং সঞ্চালন প্রতিরোধ করে।
ফলে, গরম তরল থেকে বাইরের দিকে তাপ অপচয় কম হয় এবং তরল অনেকক্ষণ পর্যন্ত গরম থাকে।
নিচে প্রশ্নগুলো গাঢ় (bold) করে দেওয়া হলো:
৮। বস্তু কর্তৃক গৃহীত বা বর্জিত তাপের মান কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে লেখো।
উত্তর: বস্তু কর্তৃক গৃহীত বা বর্জিত তাপের মান প্রধানত নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে:
- ভরের পরিমাণ যত বেশি, তত বেশি তাপ গ্রহণ বা বর্জন করা সম্ভব।
- বস্তুর আপেক্ষিক তাপ যত বেশি, তত বেশি তাপ গ্রহণ বা বর্জন করা সম্ভব।
- বস্তুর তাপমাত্রা যত বেশি বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়, তত বেশি তাপ গ্রহণ বা বর্জন করা হয়।
৯। ১০০°C উষ্ণতার ২ গ্রাম জলকে ১০০°C উষ্ণতার ২ গ্রাম জলীয় বাষ্পে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় তাপের মান কত?
উত্তর:১০০°C তাপমাত্রায় ১ গ্রাম জলকে বাষ্পে রূপান্তর করতে ৫৩৭ ক্যালরি তাপের প্রয়োজন হয়। একে বাষ্পীভবনের লীন তাপ বলা হয়। তাই, ২ গ্রাম জলকে বাষ্পে রূপান্তর করতে ২ গ্রাম × ৫৩৭ ক্যালরি/গ্রাম = ১০৭৪ ক্যালরি তাপের প্রয়োজন হবে।
১০। নিচের বিক্রিয়াটিতে দেখাও যে, জারণ ও বিজারণ একইসঙ্গে ঘটে এবং বিক্রিয়াটিতে জারক ও বিজারক পদার্থ দুটি শনাক্ত করো:
উত্তর:
এই বিক্রিয়ায়,
-
CuO → Cu: অক্সিজেন হারানোর ফলে এটি বিজারিত হয়েছে।
-
NH₃ → N₂: হাইড্রোজেন হারানোর ফলে এটি জারিত হয়েছে।
অতএব, একই সঙ্গে জারণ ও বিজারণ ঘটছে।
জারক পদার্থ: CuO
বিজারক পদার্থ: NH₃
১১। তড়িৎলেপন কাকে বলে? রুপোর তৈরি গয়নার ওপর সোনার প্রলেপ দিতে হলে ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে কী কী ব্যবহৃত হয়?
উত্তর:
তড়িৎলেপন (Electroplating) হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে এক ধাতুর পাতলা স্তর অন্য ধাতুর উপর বসানো হয়।
রুপোর গয়নার ওপর সোনার প্রলেপ দিতে হলে:
-
ক্যাথোড: রুপোর তৈরি গয়না (যার উপর প্রলেপ বসবে)
-
অ্যানোড: সোনার পাত বা টুকরা
-
দ্রবণ: সোনার লবণের দ্রবণ (যেমন: AuCl₃)
১২। অনুঘটক কাকে বলে? একটি ঋণাত্মক অনুঘটকের উদাহরণ দাও।
উত্তর:
অনুঘটক এমন একটি পদার্থ যা রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার পরিবর্তন করে, কিন্তু নিজে অপরিবর্তিত থাকে।
যদি অনুঘটক বিক্রিয়ার গতি কমিয়ে দেয়, তবে তাকে ঋণাত্মক অনুঘটক বলা হয়।
ঋণাত্মক অনুঘটকের উদাহরণ: অ্যাসিটামাইড (CH₃CONH₂), যা নাইট্রিক অ্যাসিড তৈরির বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত হলে বিক্রিয়ার গতি হ্রাস করে।১৩। সিয়ন ও স্টক কী?
উত্তর: সিয়ন (Scion): জোড় কলম পদ্ধতিতে যে উদ্ভিদের শাখা অন্য একটি উদ্ভিদের সাথে জোড়া দেওয়া হয়, সেই শাখাকে সিয়ন বলে।
উত্তর: কার্প (Carp): কার্প হলো এক ধরনের মাছ, যা সাধারণত মিষ্টি জলে বসবাস করে. এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য মাছ এবং বিভিন্ন দেশে এর চাষ করা হয়। যেমন-রুই,কাতলা,মৃগেল ইত্যাদি।
১৫। পার্থক্য লেখো : জৈব সার ও অজৈব সার
উত্তর:
বিষয় | জৈব সার | অজৈব সার |
---|---|---|
উৎস | প্রাকৃতিক উদ্ভিজ ও প্রাণিজ উপাদান। | রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত। |
পুষ্টি উপাদান | ধীরে ধীরে সরবরাহ করে। | দ্রুত পুষ্টি সরবরাহ করে। |
পরিবেশ প্রভাব | পরিবেশবান্ধব। | অতিরিক্ত ব্যবহারে মাটির ক্ষতি হতে পারে। |
দাম | তুলনামূলক সস্তা। | তুলনামূলক ব্যয়বহুল। |
১৬। পার্থক্য লেখো : জারণ ও বিজারণ
উত্তর:
বিষয় | জারণ (Oxidation) | বিজারণ (Reduction) |
---|---|---|
সংজ্ঞা | ইলেকট্রন হারানো বা অক্সিজেন গ্রহণ। | ইলেকট্রন গ্রহণ বা অক্সিজেন বর্জন। |
উদাহরণ | Fe → Fe²⁺ + 2e⁻ | Cu²⁺ + 2e⁻ → Cu |
হাইড্রোজেন | হারায় | গ্রহণ করে |
১৭। পার্থক্য লেখো : মেজর কার্প ও মাইনর কার্প
উত্তর:
বিষয় | মেজর কার্প | মাইনর কার্প |
---|---|---|
পরিচিতি | বাণিজ্যিকভাবে বেশি চাষ হয়। | তুলনামূলক কম চাষ হয়। |
উদাহরণ | রুই, কাতলা, মৃগেল | পুঁটি, বাতাসি |
চাহিদা | বেশি। | তুলনামূলক কম। |
১৮। তড়িবিশ্লেষণ কাকে বলে? একটি তীব্র তড়িবিশ্লেষ্যের উদাহরণ দাও।
উত্তর:
তড়িবিশ্লেষণ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে কোনো যৌগকে তার গঠক মৌলে বিভক্ত করা হয়।
তীব্র তড়িবিশ্লেষণের উদাহরণ:
জল (H₂O)-এর তড়িবিশ্লেষণে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপন্ন হয়।
১৯। মধুর পুষ্টিগুণ লেখো।
উত্তর:
-
মধুতে প্রধানত গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে।
-
এতে ভিটামিন বি, সি, খনিজ পদার্থ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
-
প্রাকৃতিক শক্তির উৎস হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়।
-
হজমে সহায়ক এবং জীবাণুনাশক গুণও রয়েছে।
২০। বরফ গলনের লীনতাপ ৮০ cal/g বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: এর অর্থ হলো, ০°C তাপমাত্রায় ১ গ্রাম বরফকে জলে রূপান্তর করতে ৮০ ক্যালরি তাপের প্রয়োজন হয়, অথচ বরফ ও জলের উষ্ণতা একই থাকে।
২১। ডেঙ্গু রোগের বাহক ও রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর নাম লেখো।
উত্তর:
-
বাহক: এডিস মশা (Aedes aegypti)
-
জীবাণু: ডেঙ্গু ভাইরাস (ফ্লাভিভাইরাস)
২২। জলে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের দ্রবীভূত হওয়া যে তাপগ্রাহী পরিবর্তন তা কী করে বুঝবে?
উত্তর:
যখন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড জলেতে দ্রবীভূত হয়, তখন আশেপাশের থেকে তাপ শোষণ করে। ফলে দ্রবণের তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যায়, যা থেকে বোঝা যায় এটি একটি তাপগ্রাহী পরিবর্তন।
২৩। কার্প কাদের বলে?
উত্তর:কার্প (Carp): কার্প হলো এক ধরনের মাছ, যা সাধারণত মিষ্টি জলে বসবাস করে. এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য মাছ এবং বিভিন্ন দেশে এর চাষ করা হয়। যেমন-রুই,কাতলা,মৃগেল ইত্যাদি।
২৪। নিবিড় মিশ্র মাছ চাষ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:
নিবিড় মিশ্র মাছ চাষ হলো একটি পদ্ধতি যেখানে একটি পুকুরে একাধিক প্রজাতির মাছ যেমন — রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি একসঙ্গে চাষ করা হয় এবং খাদ্য ও বাসস্থান ব্যবস্থাপনায় নিবিড় মনোযোগ দেওয়া হয় যাতে মাছ উৎপাদন সর্বাধিক হয়।
২৫। শিল্পে অনুঘটকের দুটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর:
১। হ্যাবার প্রক্রিয়ায় নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন গ্যাস থেকে অ্যামোনিয়া উৎপাদনে লোহা (Fe) অনুঘটক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২। সালফিউরিক অ্যাসিড উৎপাদনে ভ্যানাডিয়াম পেন্টঅক্সাইড (V₂O₅) অনুঘটক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
২৬। টীকা লেখো : ডিপ-লিটার পদ্ধতি।
উত্তর:
ডিপ-লিটার পদ্ধতি হল একটি আধুনিক মুরগি পালন পদ্ধতি, যেখানে ঘরের মেঝেতে প্রায় ৬–৮ ইঞ্চি পুরু শুকনো খড়, কাঠের গুঁড়ো বা ধানের তুষ বিছিয়ে রাখা হয়। এই বিছানাকে পর্যায়ক্রমে উলটে দেওয়া হয় যাতে তা শুষ্ক থাকে এবং জীবাণুমুক্ত থাকে। এর মাধ্যমে মুরগির বিষ্ঠা ও লিটারের মাধ্যমে সার তৈরি হয় এবং রোগ সংক্রমণও কম হয়। এটি খরচ কম এবং স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি।
২৭। যক্ষ্মা রোগের উপসর্গ লেখো।
উত্তর:
যক্ষ্মা (Tuberculosis) রোগের সাধারণ উপসর্গগুলো হল:
-
দীর্ঘদিন ধরে শুকনো কাশি (৩ সপ্তাহের বেশি)
-
জ্বর ও রাত্রিকালীন ঘাম
-
ওজন হ্রাস
-
বুকে ব্যথা ও রক্তসহ কাশি
-
দুর্বলতা ও ক্ষুধামন্দা
২৮। কালাজ্বরের অপর নাম কী? এই রোগের লক্ষণ লেখো।
উত্তর:
-
কালাজ্বরের অপর নাম: ভিসারাল লিশমানিয়াসিস (Visceral Leishmaniasis)
-
রোগের লক্ষণ:
-
দীর্ঘস্থায়ী জ্বর
-
ওজন হ্রাস
-
পেট ফুলে যাওয়া (যকৃত ও প্লীহার বৃদ্ধি)
-
তীব্র দুর্বলতা
-
ত্বক কালচে হওয়া (যেখান থেকে "কালাজ্বর" নামটি এসেছে)
-
২৯। ০°C উষ্ণতায় ১০ গ্রাম বরফকে গলিয়ে জলে পরিণত করে, সেই জলের উষ্ণতা ১০°C বৃদ্ধি করতে কত পরিমাণ তাপের প্রয়োজন?
উত্তর:
প্রথম ধাপে বরফ গলাতে প্রয়োজনীয় তাপ:
= বরফের ভর × লীনতাপ = 10g × 80 cal/g = 800 cal
দ্বিতীয় ধাপে সেই ১০ গ্রাম জলকে ১০°C পর্যন্ত গরম করতে প্রয়োজনীয় তাপ:
= ভর × নির্দিষ্ট তাপ × উষ্ণতা পরিবর্তন
= 10g × 1 cal/g°C × 10°C = 100 cal
মোট তাপ = 800 + 100 = 900 ক্যালোরি
৩০। তাপমোচী পরিবর্তন ও তাপগ্রাহী পরিবর্তন কী?
উত্তর:
-
তাপমোচী পরিবর্তন (Exothermic Change): যেসব রাসায়নিক বা ভৌত পরিবর্তনের সময় তাপ উৎপন্ন হয়, তাকে তাপমোচী পরিবর্তন বলে। যেমন: জ্বলন, নিউট্রালাইজেশন।
-
তাপগ্রাহী পরিবর্তন (Endothermic Change): যেসব পরিবর্তনের সময় তাপ শোষিত হয়, তাকে তাপগ্রাহী পরিবর্তন বলে। যেমন: বরফ গলা, অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড দ্রবীভবন।
৩১। খাবার সোডা ও অক্সালিক অ্যাসিডের মিশ্রণে জল যোগ করলে CO₂ গ্যাস উৎপন্ন হয়, কিন্তু ওই মিশ্রণে কেরোসিন যোগ করলে CO₂ উৎপন্ন হয় না কেন?
উত্তর:
জল একটি ধ্রুবক দ্রাবক, যা খাদ্য সোডা (NaHCO₃) ও অক্সালিক অ্যাসিডকে দ্রবীভূত করে এবং রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে সাহায্য করে। এই বিক্রিয়াতেই CO₂ উৎপন্ন হয়।
কিন্তু কেরোসিন একটি জৈব দ্রবণ এবং এতে ওই দুটি পদার্থ দ্রবীভূত হয় না, ফলে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে না এবং CO₂ গ্যাসও উৎপন্ন হয় না।
৩২। 2Na + H₂ → 2NaH - প্রদত্ত বিক্রিয়াটির ইলেকট্রনীয় পদ্ধতিতে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
ইলেকট্রনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা:
-
Na → Na⁺ + e⁻ → জারণ (ইলেকট্রন হারিয়েছে)
-
H₂ + 2e⁻ → 2H⁻ → বিজারণ (ইলেকট্রন গ্রহণ করেছে)
অতএব, এখানে সোডিয়াম জারণ ঘটায় (বিজারক), এবং হাইড্রোজেন বিজারণ ঘটায় (জারক)।
৩৩। তড়িৎলেপন কী? লোহার ওপর নিকেলের প্রলেপ দেওয়ার জন্য ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে কী কী ব্যবহার করবে?
উত্তর:
তড়িৎলেপন হল এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বিদ্যুৎপ্রবাহের সাহায্যে এক ধাতুর ওপর অন্য ধাতুর পাতলা স্তর বসানো হয়।
লোহার ওপর নিকেলের প্রলেপ দেওয়ার জন্য:
-
ক্যাথোড: লোহার বস্তু (যার উপর প্রলেপ দেওয়া হবে)
-
অ্যানোড: বিশুদ্ধ নিকেলের পাত
-
ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ: নিকেল সালফেট বা নিকেল ক্লোরাইডের দ্রবণ
৩৪। পরিবহণ ও পরিচলন পদ্ধতির মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
বিষয় | পরিবহণ (Transportation) | পরিচলন (Convection) |
---|---|---|
সংজ্ঞা | পরিবহণে তাপ বা পদার্থ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় কোনো মাধ্যমের সাহায্যে। | পরিচলনে তাপ বা পদার্থ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় তরল বা গ্যাসের মাধ্যমে, যার ফলে উত্তপ্ত অংশগুলি উঠে যায় এবং ঠান্ডা অংশ নিচে চলে আসে। |
প্রক্রিয়া | পদার্থের সরাসরি স্থানান্তর হয়। | তরল বা গ্যাসের ভর স্থানান্তরের মাধ্যমে তাপ চলে যায়। |
৩৫। ১০০ ক্যালরি তাপ যোগ করে ১০ গ্রাম জলের উষ্ণতা কত পরিমাণ বাড়ানো যাবে তা, সেলসিয়াস স্কেলে নির্ণয় করো।
উত্তর:
উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য তাপের সূত্র:
যেখানে,
Q = তাপ (100 ক্যালরি)
m = জলের ভর (10 গ্রাম)
c = জলের নির্দিষ্ট তাপ (1 cal/g°C)
= উষ্ণতা বৃদ্ধি
তাহলে,
অতএব, ১০০ ক্যালরি তাপ যোগ করলে জলের উষ্ণতা ১০°C বাড়ানো যাবে।
৩৬। একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ার উদাহরণ সহযোগে দেখাও যে, ‘জারণ-বিজারণ যুগপৎ ঘটে’।
উত্তর:
উদাহরণ:
3CuO + 2NH₃ ⟶ 3Cu + N₂ + 3H₂O
এই বিক্রিয়ায়:
-
CuO → Cu : তামা অক্সাইড বিজারণ ঘটে (অক্সিজেন ত্যাগ করে তামা তৈরি হয়)
-
NH₃ → N₂ : অ্যামোনিয়া জারণ ঘটে (হাইড্রোজেন ত্যাগ করে নাইট্রোজেন তৈরি হয়)
অতএব, একই বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ উভয়ই ঘটছে — একে বলে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া।
৩৭। জলের তড়িবিশ্লেষণে ক্যাথোডে ও অ্যানোডে সংগঠিত রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি লেখো।
উত্তর:
জলের তড়িবিশ্লেষণে:
-
ক্যাথোড (ঋণাত্মক ধ্রুব):
2H₂O + 2e⁻ ⟶ H₂ + 2OH⁻ (হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন) -
অ্যানোড (ধনাত্মক ধ্রুব):
2H₂O ⟶ O₂ + 4H⁺ + 4e⁻ (অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন)
৩৮। প্রকৃতির নিজস্ব তড়িৎপ্রবাহ আমরা সাধারণ অবস্থায় বুঝতে পারি না কেন?
উত্তর:
প্রকৃতির মধ্যে যেমন মেঘে মেঘে বা মাটির সঙ্গে তড়িৎপ্রবাহ চলতে থাকে, তা সাধারণত কমমাত্রার হয় বা সমভাবে বিভাজিত থাকে। এই কারণেই তা আমাদের অনুভবের বাইরে থাকে।
শুধুমাত্র অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক চার্জ সঞ্চিত হলে (যেমন: বজ্রপাতের সময়), সেটি হঠাৎ প্রবাহিত হয় এবং তখনই তা বোঝা যায়।
৩৯। 100°C-এর 5g গরম জল, 4g ভরের একটি বস্তুর তাপমাত্রা 10°C থেকে বাড়িয়ে কত তাপমাত্রায় নিয়ে যাবে?
(d দেওয়া: s = 0.2 cal/g·°C)
উত্তর:
তাপ হস্তান্তরের সূত্র:
তাপ হারানো = তাপ লাভ
→ গরম জলের তাপ হারানো = ঠান্ডা বস্তুর তাপ লাভ
-
গরম জলের তাপ হারানো:
Q = m × c × ΔT = 5g × 1 × (100 − θ) = 5(100 − θ) -
বস্তুর তাপ লাভ:
Q = m × s × ΔT = 4g × 0.2 × (θ − 10) = 0.8(θ − 10)
তাপ হারানো = তাপ লাভ
⇒ 5(100 − θ) = 0.8(θ − 10)
⇒ 500 − 5θ = 0.8θ − 8
⇒ 500 + 8 = 5θ + 0.8θ
⇒ 508 = 5.8θ
⇒ θ = 508 / 5.8 ≈ 87.59°C
বস্তুর তাপমাত্রা হবে আনুমানিক ৮৭.৬°C।
৪০। বজ্রনিরোধকের কার্যনীতি সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর:
বজ্রনিরোধক একটি ধাতব রড যা উঁচু ভবনের ওপর স্থাপন করা হয় এবং মাটির সাথে সংযুক্ত থাকে। বজ্রপাত হলে এই রড বজ্রবিদ্যুত্কে নিরাপদে মাটিতে প্রেরণ করে, ফলে ভবন রক্ষা পায়।
এর মাধ্যমে তড়িৎ প্রবাহ কম প্রতিরোধে সরাসরি মাটিতে পৌঁছে যায় — এটাই বজ্রনিরোধকের কার্যপ্রণালী।
৪১। পেস্টের রাসায়নিক দমন পদ্ধতির দুটি অসুবিধা লেখো।
উত্তর:
পরিবেশ দূষণ: রাসায়নিক পেস্টিসাইডের অতিরিক্ত ব্যবহার মাটি, জল ও বায়ু দূষিত করে, যা পরবর্তীতে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রাকৃতিক শত্রুর ক্ষতি: রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করলে মাটিতে বা গাছে থাকা প্রাকৃতিক শত্রু (যেমন পোকামাকড় বা প্রাণী) ধ্বংস হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে কৃষির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৪২। সিয়ন কী? চায়ে উপস্থিত পলিফেনল-এর উপকারি ভূমিকা লেখো।
উত্তর:
সিয়ন (Scion) হলো একটি গাছের এক অংশ যা অন্য একটি গাছের সাথে সংযুক্ত করা হয় গুণগতভাবে উন্নত ফলন বা গুণের জন্য। এটি সাধারণত গাছের শাখা বা ডাল হতে পারে, যা রুটস্টক-এর উপর লাগানো হয়।
পলিফেনল চায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের ক্ষতিকারক র্যাডিক্যালগুলির সাথে লড়াই করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ত্বকের স্বাস্থ্যও উন্নত করে।
৪৩। মৌমাছি মোম দিয়ে কী করে? পলিকালচার কী?
উত্তর: মৌমাছি মোম মূলত মৌচাক তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। মৌমাছিরা এই মোম দিয়ে তাদের মৌচাকের সেলগুলি তৈরি করে, যাতে তারা মধু সংরক্ষণ করতে পারে এবং ডিম রাখতে পারে।
পলিকালচার হলো একাধিক প্রজাতির গাছ বা পশু একই এলাকায় পালন করা। এর মাধ্যমে কৃষকরা একাধিক পণ্য উৎপাদন করতে পারেন এবং জীববৈচিত্র্য বজায় রাখতে পারেন, যা পরিবেশের জন্য উপকারী।
৪৪। একটি টেস্টটিউবে জলযুক্ত কিউপ্রিক নাইট্রেটের নীল কেলাস নেওয়া হল এবং টেস্টটিউবকে উত্তপ্ত করা হল। কী ঘটবে লেখো।
উত্তর:
কিউপ্রিক নাইট্রেট (Cu(NO₃)₂) উত্তপ্ত হলে এটি তাপগ্রাহী বিক্রিয়া ঘটে, যার ফলে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO₂) গ্যাস নির্গত হয় এবং কিউপ্রিক অক্সাইড (CuO) উৎপন্ন হয়। এই সময় টেস্টটিউবে নীল কেলাসের পরিবর্তে কালো কেলাস (কিউপ্রিক অক্সাইড) দেখা যাবে।
বিক্রিয়া:
Cu(NO₃)₂ → CuO + 2NO₂ + O₂
৪৫। নীচের বিক্রিয়াগুলিতে কোনটিতে জারণ ও কোটিতে বিজারণ হয়েছে লেখো।
(a) N₂ + 3H₂ → 2NH₃
(b) ZnO + C → Zn + CO
উত্তর:
(a) N₂ + 3H₂ → 2NH₃
-
জারণ: হাইড্রোজেন (H₂) এখানে জারণ ঘটছে, কারণ এটি ইলেকট্রন হারাচ্ছে।
-
বিজারণ: নাইট্রোজেন (N₂) বিজারণ ঘটছে, কারণ এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করছে।
(b) ZnO + C → Zn + CO
-
জারণ: কার্বন (C) এখানে বিজারণ ঘটছে, কারণ এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করছে।
-
বিজারণ: জিঙ্ক (Zn) জারণ ঘটছে, কারণ এটি ইলেকট্রন হারাচ্ছে।
৪৬। ২০°C উষ্ণতার ৫০ গ্রাম জল ৬০°C উষ্ণতায় পৌঁছাতে কত পরিমাণ তাপ গ্রহণ বা বর্জন করবে? (জলের আপেক্ষিক তাপ = 1 cal/g°C)
উত্তর:
তাপ সূত্র:
এখানে,
-
m = 50g
-
c = 1 cal/g°C
-
= 60°C - 20°C = 40°C
তাহলে,
অতএব, ২০০০ ক্যালরি তাপ গ্রহণ করতে হবে।
৪৭। বজ্রপাতের সময় ঘরের দেয়াল, ধাতুনির্মিত কাঠামো বা রেলিং স্পর্শ করা বিপজ্জনক কেন?
উত্তর:
বজ্রপাতের সময় ঘরের দেয়াল, ধাতুনির্মিত কাঠামো বা রেলিং স্পর্শ করা বিপজ্জনক কারণ বজ্রপাতের মাধ্যমে তীব্র তড়িৎ প্রবাহ মাটি বা অন্য যেকোনো ধাতব বস্তুতে প্রবাহিত হয়। এই কাঠামোতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে, তা স্পর্শ করলে শরীরে বৈদ্যুতিক শক লাগতে পারে, যা মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
৪৮। শীতকালে প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে শুকনো চুল আঁচড়ালে চিরুনিতে কোন্ ধরনের আধান জমে? এই চিরুনিটিকে ছোটো ছোটো কাগজের টুকরোর কাছে ধরলে দেখা যায় কাগজের টুকরো আকৃষ্ট হয়। এই ঘটনাকে কী বলে?
উত্তর:
শীতকালে প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চিরুনিতে ঋণাত্মক আধান জমে। এটি ঘটে কারণ চিরুনির উপাদান চুল থেকে ইলেকট্রন নিয়ে নেয়, যার ফলে চিরুনিতে ঋণাত্মক আধান তৈরি হয়। এই আধান কাগজের টুকরোকে আকৃষ্ট করে, কারণ কাগজে ধনাত্মক আধান থাকে। এই ঘটনাকে বলা হয় তড়িৎ আবেশ (Electrification)।
৪৯।একটি 200 g ভরের তামার পাত্রে তাপ প্রয়োগ করে উষ্ণতা 50°C থেকে 90°C পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে কত পরিমাণ তাপ প্রয়োগ করতে হবে? (তামার আপেক্ষিক তাপ = 0.09 cal.g⁻¹°C⁻¹)
উত্তর:
তাপের সূত্র হলো:
এখানে,
-
m = 200 g
-
c = 0.09 cal/g°C
-
= 90°C - 50°C = 40°C
তাহলে,
অতএব, 720 ক্যালরি তাপ প্রয়োগ করতে হবে।
৫০। 0.05 kg ভরের কোনো পদার্থের উষ্ণতা 4K বৃদ্ধির জন্য 50 cal তাপের প্রয়োজন হয়। পদার্থটির আপেক্ষিক তাপের মান নির্ণয় করো।
উত্তর:
৫১. গ্যালভানাইজেশন কাকে বলে?
উত্তর:
গ্যালভানাইজেশন হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে লোহার বা ইস্পাতের উপরে দস্তা (zinc) লেপ দেওয়া হয়, যাতে এটি মরচে ধরতে না পারে। এটি সাধারণত গরম দস্তা ব্যবহার করে করা হয়, যাতে লোহা পরিবেশগত ক্ষতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।
৫২. লোহার মরচে ধরা আটকানোর দুটি উপায় লেখো।
উত্তর:
১.গ্যালভানাইজেশন: লোহার উপর দস্তা লেপ দিলে মরচে ধরা আটকানো যায়।
২.পেইন্টিং: লোহার উপর পেইন্ট লাগিয়ে দিলে আর্দ্রতা বা বাতাসের সংস্পর্শে আসা বন্ধ হয় এবং মরচে ধরার প্রবণতা কমে।
৫৩. CuO + H₂ → Cu + H₂O - এই বিক্রিয়াটিতে জারণ, বিজারণ, জারক দ্রব্য ও বিজারক দ্রব্য চিহ্নিত করো।
উত্তর:
-
জারণ: হাইড্রোজেন (H₂) জারণ ঘটছে, কারণ এটি ইলেকট্রন হারাচ্ছে।
-
বিজারণ: কপার (CuO) বিজারণ ঘটছে, কারণ এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করছে।
-
জারক দ্রব্য: কপার অক্সাইড (CuO)
-
বিজারক দ্রব্য: হাইড্রোজেন (H₂)
৫৪. স্ফুটন কাকে বলে?
উত্তর:
স্ফুটন হলো একটি তরলের গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া, যখন তার উষ্ণতা তার স্ফুটনাঙ্ক (boiling point) পৌঁছায়। এই সময় তরলটি দ্রুত গ্যাসে পরিণত হয় এবং বাষ্প তৈরি হয়।
৫৫. গরমকালে ঘামে ভেজা শরীরে হাওয়ার সামনে দাঁড়ালে আরাম লাগে কেন?
উত্তর:
গরমকালে ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কারণ ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে শরীরের তাপ শোষণ করে। যখন হাওয়া শরীরের উপর প্রবাহিত হয়, এটি ঘামের বাষ্পীভবন প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে, ফলে শরীরের তাপমাত্রা কমে এবং শীতল অনুভূতি হয়, যা আরামদায়ক।
৫৬. মৌমাছির জীবনচক্রের ধাপগুলি কী কী?
উত্তর:
মৌমাছির জীবনচক্রের ধাপগুলি হলো:
১.ডিম: মৌমাছির জীবন চক্র শুরু হয় ডিম থেকে।
২.লার্ভা: ডিম থেকে লার্ভা বের হয়।
৩.পিউপা: লার্ভা থেকে পিউপা অবস্থায় পরিণত হয়।
৪.পূর্ণাঙ্গ মৌমাছি: পিউপা থেকে পূর্ণাঙ্গ মৌমাছি (শ্রমিক, রানি, বা পুরুষ) বের হয়।
৫৭. হেপাটাইটিস কী ঘটিত মারণ রোগ? বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস কবে পালিত হয়?
উত্তর:
হেপাটাইটিস হলো যকৃৎ (লিভার) এর প্রদাহজনিত একটি রোগ, যা বিভিন্ন ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হতে পারে (যেমন হেপাটাইটিস A, B, C, D, E)। এটি জীবাণুর কারণে সংক্রমিত হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত মারণ হতে পারে।
বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস প্রতি বছর 28 জুলাই পালিত হয়, যাতে মানুষকে হেপাটাইটিসের প্রতি সচেতন করা হয় এবং এটি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
৫৮. অ্যামোনিয়াম সালফেট যৌগ জলীয় দ্রবণে কী কী আয়ন উৎপন্ন করে লেখো।
উত্তর:
অ্যামোনিয়াম সালফেট (NH₄)₂SO₄ যখন জলীয় দ্রবণে দ্রবিত হয়, তখন এটি নিম্নলিখিত আয়ন উৎপন্ন করে:
১.অ্যামোনিয়াম আয়ন (NH₄⁺)
২. সালফেট আয়ন (SO₄²⁻)
৫৯. ZnO + C → Zn + CO প্রদত্ত বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ বিক্রিয়া চিহ্নিত করে জারক ও বিজারক পদার্থের নাম ও সংকেত লেখো।
উত্তর:
এই বিক্রিয়ায়,
-
জারণ: ZnO (জিঙ্ক অক্সাইড) জারণ ঘটে কারণ এটি ইলেকট্রন হারাচ্ছে। এটি জারক পদার্থ।
-
বিজারণ: C (কার্বন) বিজারণ ঘটে কারণ এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করছে। এটি বিজারক পদার্থ।
৫৯. বরফ গলনের লীনতাপ 80 cal/g-এর অর্থ কী?
উত্তর:
বরফ গলানোর লীনতাপ 80 cal/g এর অর্থ হলো, প্রতি গ্রাম বরফ গলানোর জন্য 80 ক্যালোরি তাপ প্রয়োজন। অর্থাৎ, এক গ্রাম বরফ গলানোর জন্য 80 ক্যালোরি তাপের প্রয়োজন হবে।
৬০. কুয়াশা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর: কুয়াশা সৃষ্টি হয় যখন বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে ক্ষুদ্র জলবিন্দুতে ঘনীভূত হয় এবং মাটির কাছাকাছি স্তরে ঝুলে থাকে। এটি মূলত শীতল আবহাওয়ায় ও আর্দ্রতা বেশি থাকলে ঘটে।
৬১. দু-খণ্ড বরফকে একইসঙ্গে চাপ দিলে জোড়া লাগে কেন?
উত্তর: বরফের ওপর চাপ দিলে চাপের ফলে স্থানীয়ভাবে গলনাঙ্ক কমে যায় এবং বরফ আংশিকভাবে গলে জল হয়। চাপ তুলে দিলে তা পুনরায় জমে যায় এবং বরফের খণ্ড দুটি জোড়া লাগে। একে বলে "pressure melting and regelation"।
৬২. জারণ-বিজারণ একসঙ্গে ঘটে – উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: জারণ-বিজারণ একটি যৌগিক প্রক্রিয়া যেখানে এক পদার্থ ইলেকট্রন হারায় (জারণ) এবং অন্য পদার্থ ইলেকট্রন গ্রহণ করে (বিজারণ)।
উদাহরণ:
3CuO + 2NH₃ → 3Cu + N₂ + 3H₂O
এখানে,
-
CuO → Cu (Cu²⁺ → Cu: বিজারণ)
-
NH₃ → N₂ (NH₃: জারণ)
অতএব, একই বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটেছে।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
১। SI-তে আপেক্ষিক তাপের একক কী? 150 g জলের উষ্ণতা 30°C থেকে স্ফুটনাঙ্কে বৃদ্ধি করতে হলে কী পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হবে?
উঃ
👉 SI-তে আপেক্ষিক তাপের একক হলো J/kg·K।
👉 জলের স্ফুটনাঙ্ক = 100°C, প্রাথমিক উষ্ণতা = 30°C
তাপমাত্রার পরিবর্তন = 100°C – 30°C = 70°C
জলের আপেক্ষিক তাপ = 4.2 J/g·°C
তাপের পরিমাণ, Q = mcΔT = 150 × 4.2 × 70 = 44,100 J
২। বজ্রনাদ আসলে কী? একই মেঘের বিভিন্ন অংশের মধ্যে বজ্রপাত হতে পারে কি? বজ্রপাতের সময় নিরাপদ স্থানগুলি কি কি?
উঃ
👉 বজ্রনাদ হলো বজ্রপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক ও তীব্র শব্দ, যা বায়ুর দ্রুত বিস্তারের ফলে হয়।
👉 হ্যাঁ, একই মেঘের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তড়িৎ বিভবের তারতম্য থাকলে বজ্রপাত হতে পারে।
👉 বজ্রপাতের সময় নিরাপদ স্থানগুলি হল:
• বাড়ির ভিতরে থাকা।
• ধাতব গাড়ির ভিতরে থাকা।
• খোলা মাঠ, গাছপালা ও জলীয় বস্তু থেকে দূরে থাকা।
• বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি স্পর্শ না করা।
৩। মরচে পড়ার শর্ত লেখো। লোহার তৈরি বস্তুর ওপর তামার প্রলেপ দেওয়ার পদ্ধতিকে কী বলে? গলিত NaCl-এর মধ্যে তড়িৎ প্রবাহের ফলে তড়িদ্বারে ঘটা বিক্রিয়াগুলি লেখো।
উঃ
👉 মরচে পড়ার শর্ত:
• অক্সিজেনের উপস্থিতি।
• জলের উপস্থিতি (আর্দ্রতা)।
👉 লোহার ওপর তামার প্রলেপ দেওয়ার পদ্ধতিকে বলা হয় তড়িৎ-লেপন (Electroplating)।
👉 গলিত NaCl-এ তড়িৎ প্রবাহের ফলে তড়িদ্বারে বিক্রিয়াগুলি:
• অ্যানোডে: 2Cl⁻ → Cl₂ + 2e⁻
• ক্যাথোডে: Na⁺ + e⁻ → Na
৪। অনুঘটকের বৈশিষ্ট্য লেখো। তাপগ্রাহী ও তাপমোচী পরিবর্তনের একটি পার্থক্য লেখো। ক্যাটায়ন কাকে বলে?
উঃ
👉 অনুঘটকের বৈশিষ্ট্য:
• বিক্রিয়ার গতি বাড়ায় বা কমায়।
• বিক্রিয়া শেষে অপরিবর্তিত থাকে।
• ছোট পরিমাণে ব্যবহৃত হলেও কার্যকর।
• সক্রিয়ীকরণ শক্তিকে প্রভাবিত করে।
👉 তাপগ্রাহী ও তাপমোচী পরিবর্তনের পার্থক্য:
পরিবর্তনের ধরন | তাপগ্রাহী | তাপমোচী |
---|---|---|
তাপের ভূমিকা | তাপ শোষণ করে। | তাপ নির্গত করে। |
👉 ক্যাটায়ন হলো ধনাত্মক আধানযুক্ত আয়ন, যা ইলেকট্রন হারিয়ে তৈরি হয়। উদাহরণ: Na⁺, Ca²⁺
৫। পার্থক্য লেখো : রবি ফসল ও খারিফ ফসল।
উঃ
বিষয় | রবি ফসল | খারিফ ফসল |
---|---|---|
বপনের সময় | শীতকালে (অক্টোবর-নভেম্বর) | বর্ষাকালে (জুন-জুলাই) |
কাটার সময় | বসন্তকালে (মার্চ-এপ্রিল)। | শরৎকালে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর)। |
জল প্রয়োজন | তুলনামূলকভাবে কম। | তুলনামূলকভাবে বেশি। |
উদাহরণ | গম, সরষে। | ধান, ভুট্টা। |
৬। শস্য আবর্তন বলতে কী বোঝো?
উঃ
শস্য আবর্তন হল একটি কৃষি পদ্ধতি যেখানে একই জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ধরনের শস্য চাষ করা হয়।
এটি মাটির উর্বরতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ-পোকামাকড়ের প্রভাব কমায়।
উদাহরণ: এক বছর ডাল চাষ, পরের বছর ধান বা গম চাষ।
৭। ময়লা জলে মাছ চাষের সুবিধা কী?
উঃ
ময়লা জলে জৈব পদার্থ বেশি থাকায় মাছের জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপন্ন হয়, যেমন: প্ল্যাঙ্কটন।
এতে মাছের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে এবং অতিরিক্ত খাদ্য যোগ করার প্রয়োজন হয় না।
এটি পরিবেশবান্ধব এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।
৮। অজৈব সার কী? NPK কী?
উঃ
👉অজৈব সার হলো রাসায়নিকভাবে প্রস্তুত সার, যা উদ্ভিদের দ্রুত বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ: ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম সালফেট, সুপার ফসফেট।
👉NPK হলো এক ধরনের মিশ্র অজৈব সার, যাতে তিনটি প্রধান পুষ্টি উপাদান থাকে:
• N = নাইট্রোজেন – পাতা ও কাণ্ড বৃদ্ধিতে সহায়ক।
• P = ফসফরাস – মূল গঠন ও ফুল-ফল ধরতে সহায়ক।
• K = পটাশিয়াম – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও গুণমান উন্নত করে।
৯। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয় এমন একটি আয়নীয় যৌগের নাম ও সংকেত লেখো। যৌগটি জলীয় দ্রবণে কী কী আয়ন দেয়?
উঃ
আয়নীয় যৌগ: সাধারণ লবণ (Sodium chloride)
সংকেত: NaCl
জলীয় দ্রবণে NaCl ভেঙে দেয়:
NaCl → Na⁺ + Cl⁻
১০। FeO + H₂ → Fe + H₂O বিক্রিয়াটিতে জারক ও বিজারক পদার্থ চিহ্নিত করো। তাপগ্রাহী পরিবর্তন বলতে কী বোঝায় ?
উঃ
• FeO → Fe : Fe হারিয়েছে অক্সিজেন, অর্থাৎ বিজারণ হয়েছে।
• H₂ → H₂O : H₂ পেয়েছে অক্সিজেন, অর্থাৎ জারণ হয়েছে।
→ এই বিক্রিয়ায়:
• FeO হলো জারক পদার্থ (oxidizing agent)
• H₂ হলো বিজারক পদার্থ (reducing agent)
তাপগ্রাহী পরিবর্তন:
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বাইরের উৎস থেকে তাপ শোষণ করতে হয়, তাকে তাপগ্রাহী (endothermic) পরিবর্তন বলে।
উদাহরণ: বরফ গলন, NH₄Cl দ্রবণে মেশানো ইত্যাদি।
১১। তড়িদ্বিশ্লেষণের তিনটি ব্যবহার লেখো।
উঃ
১. ধাতুর উপর অন্য ধাতুর প্রলেপ দেওয়া (যেমন: তড়িৎ-আবরণ)
২. ধাতু বিশুদ্ধকরণ (যেমন: তামার বিশুদ্ধকরণ)
৩. যৌগকে তার মূল ধাতু ও অধাতুতে বিভাজন (যেমন: NaCl → Na ও Cl₂)
১২। বজ্রনিরোধক কী ? বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়?
উঃ
• বজ্রনিরোধক: বজ্রনিরোধক একটি যন্ত্র বা ব্যবস্থা যা বাড়ি, কোনো বিশেষ স্থানকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি সাধারণত ধাতব লোহা বা তামার একটি তারের ব্যবস্থা থাকে, যা বজ্রপাতকে মাটিতে প্রবাহিত করে এবং তার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
• বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত:
- বাড়ির ভিতরে থাকা
- ধাতব বস্তু থেকে দূরে থাকা
- গাড়ির ভিতরে থাকা (ধাতব গাড়ি নিরাপদ)
• বজ্রপাতের সময় কী করা উচিত নয়:
- গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়া
- খোলা মাঠে থাকা
- জলাশয়ের কাছে থাকা
- বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বা তারগুলি স্পর্শ করা
১৩। পার্থক্য লেখো : (a) খারিফ ফসল ও রবি ফসল, (b) মেজর কার্প ও মাইনর কার্প।
উঃ
(a) খারিফ ফসল ও রবি ফসল
বিষয় | খারিফ ফসল | রবি ফসল |
---|---|---|
বপনের সময় | বর্ষাকালে (জুন-জুলাই) | শীতকালে (অক্টোবর-নভেম্বর) |
কাটার সময় | শরৎকালে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর)। | বসন্তকালে (মার্চ-এপ্রিল)। |
জল প্রয়োজন | অধিক। | কম। |
উদাহরণ | ধান, ভুট্টা। | গম, সরষে। |
(b) মেজর কার্প ও মাইনর কার্প
বিষয় | মেজর কার্প | মাইনর কার্প |
---|---|---|
আকার | বড় আকারের মাছ। | ছোট আকারের মাছ। |
উদাহরণ | রুই কাতলা। | মৃগেল, পুঁটি। |
খাদ্য | শাকসবজি, জলজ উদ্ভিদ। | শাকসবজি, জলজ অণুজীব। |
১৪। কার্প বলতে কী বোঝায়? উদাহরণসহ মেজর কার্পের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর:
কার্প বলতে মিঠা জলের মাছদের বোঝায়, যেগুলো খাদ্যোপযোগী ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মেজর কার্পের উদাহরণ:
-
রুই (Labeo rohita)
-
কাতলা (Catla catla)
-
মৃগেল (Cirrhinus mrigala)
মেজর কার্পের বৈশিষ্ট্য:
-
দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
-
বিভিন্ন স্তরের জলস্তরে খাদ্য গ্রহণ করে (উপর, মধ্য ও নিচ)।
-
মিশ্র মাছ চাষে উপযোগী।
-
স্বাদে উৎকৃষ্ট ও বাজারে চাহিদাসম্পন্ন।
১৫। ম্যালেরিয়া রোগ কোন্ মশা ছড়ায়? এই রোগের দুটি লক্ষণ লেখো।
উত্তর:
-
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী Anopheles মশার কামড়ে, যা Plasmodium নামক পরজীবী বহন করে।
ম্যালেরিয়ার দুটি লক্ষণ:
১। জ্বর, যা ঘাম ও কাঁপনসহ বারবার আসে
২। মাথাব্যথা, বমি ভাব এবং দুর্বলতা
১৬। গভীর রাতে শিশির পড়ে কেন?
উত্তর:
গভীর রাতে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কমে যায় এবং মাটির উপরিভাগ ও গাছপালার পাতা শীতল হয়ে যায়। ফলে বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্প ওই ঠান্ডা পৃষ্ঠে সংবহন প্রক্রিয়ায় ঘনীভূত হয়ে ছোট ছোট জলের কণার (বিন্দুর) আকারে জমে — একে শিশির পড়া বলে।
১৭। গলিত সোডিয়াম ক্লোরাইডের তড়িবিশ্লেষণে ক্যাথোডে ও অ্যানোডে কী কী পদার্থ উৎপন্ন হয়, তা বিক্রিয়াসহ লেখো।
উত্তর:
গলিত NaCl-এর তড়িবিশ্লেষণে
-
ক্যাথোডে উৎপন্ন হয়: সোডিয়াম (Na)
-
অ্যানোডে উৎপন্ন হয়: ক্লোরিন (Cl₂)
বিক্রিয়া:
NaCl(l) → Na⁺ + Cl⁻
ক্যাথোড: Na⁺ + e⁻ → Na (জারণ হ্রাস – বিজারণ)
অ্যানোড: 2Cl⁻ → Cl₂ + 2e⁻ (জারণ বৃদ্ধি – জারণ)
১৮। বজ্রনিরোধক কী? এটির গঠন বর্ণনা করো।
উত্তর:
বজ্রনিরোধক হল একটি যন্ত্র, যা উঁচু ভবন বা স্থাপনার ওপর বজ্রপাত থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
গঠন:
-
এটি একটি তীক্ষ্ণ মাথাওয়ালা ধাতব রড (সাধারণত তামা বা লোহা দিয়ে তৈরি)
-
রডটি বাড়ির সর্বোচ্চ স্থানে বসানো হয়
-
এটি একটি পুরু তামার তারের মাধ্যমে মাটির গভীরে সংযুক্ত থাকে
বজ্রপাত হলে বজ্রবিদ্যুৎ এই রডের মাধ্যমে সরাসরি মাটিতে চলে যায় এবং ভবনের ক্ষতি হয় না।
১৯। তড়িৎলেপন কী? রুপোর ওপর সোনার প্রলেপ দিতে গেলে অ্যানোড ও ক্যাথোড হিসেবে কী কী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর:
তড়িৎলেপন হল এক প্রক্রিয়া যাতে বিদ্যুৎপ্রবাহের সাহায্যে এক ধাতুর ওপর আরেক ধাতুর পাতলা প্রলেপ বসানো হয়।
রুপোর ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়ার জন্য:
-
ক্যাথোড: রুপোর বস্তু (যার উপর প্রলেপ দেওয়া হবে)
-
অ্যানোড: বিশুদ্ধ সোনার পাত
-
ইলেক্ট্রোলাইট দ্রবণ: সোনার লবণের দ্রবণ (যেমন – Gold chloride solution)
২০। ‘জৈব সার অজৈব সারের চেয়ে ভালো’ – বক্তব্যটির যথার্থতা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
জৈব সার প্রাকৃতিক উপাদান যেমন গবাদিপশুর গোবর, পচা পাতা, উদ্ভিজ ও প্রাণিজ বর্জ্য থেকে প্রস্তুত হয়। এটি মাটির গঠন উন্নত করে, জীবাণু বৃদ্ধি করে এবং দীর্ঘমেয়াদি উর্বরতা বজায় রাখে।
অন্যদিকে, অজৈব সার দ্রুত ফল দেয় ঠিকই, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারে মাটির গঠন নষ্ট হয় ও পরিবেশদূষণ ঘটে।
সুতরাং, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষির জন্য জৈব সার অধিকতর উপকারী। এই জন্য বলা হয় — "জৈব সার অজৈব সারের চেয়ে ভালো"।
২১। ডিপ-লিটার পদ্ধতিতে কীভাবে মুরগি পালন করা হয়?
উত্তর:
ডিপ-লিটার পদ্ধতিতে মুরগি পালন করার সময় মাটির ওপর ৬–৮ ইঞ্চি পুরু শুকনো খড়, কাঠের গুঁড়ো, ধানের তুষ ইত্যাদি বিছানো হয়। এই স্তর মুরগির বিষ্ঠার সঙ্গে মিশে সার হয়ে যায় এবং ঘন ঘন পরিষ্কার না করেও ৫–৬ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
পদ্ধতির সুবিধা:
-
মুরগি রোগমুক্ত থাকে
-
উষ্ণ পরিবেশ বজায় থাকে
-
সার উৎপন্ন হয়
-
খরচ কম ও কার্যকর পদ্ধতি
২২। তরলের স্ফুটনাঙ্ক কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর:
তরলের স্ফুটনাঙ্ক (boiling point) প্রধানত নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে:
১. চাপ (pressure): চাপ বাড়লে স্ফুটনাঙ্ক বাড়ে এবং চাপ কমলে স্ফুটনাঙ্ক কমে।
২.তরলের প্রকৃতি (Nature of the liquid): তরলের রাসায়নিক গঠন ও আণবিক সংযোজনের কারণে তার স্ফুটনাঙ্ক নির্ধারিত হয়।
৩.অন্যান্য দ্রব্যের উপস্থিতি: কিছু দ্রব্য তরলের স্ফুটনাঙ্ক পরিবর্তন করতে পারে, যেমন দ্রবীভূত পদার্থ তরলের স্ফুটনাঙ্ক বাড়াতে বা কমাতে পারে।
২৩। ‘বজ্রনাদ শুনলে বজ্রাহত হওয়ার ভয় থাকে না’ — ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
বজ্রনাদ হল বজ্রপাতের সময় সৃষ্ট শব্দ। বজ্রনাদ শোনার সময় বজ্রপাত ইতিমধ্যেই ঘটেছে, তবে বজ্রপাতের সঙ্গে আমাদের সরাসরি সম্পর্কিত হওয়ার জন্য আরও কিছু সময় প্রয়োজন, যেমন বজ্রপাতের স্থানে পৌঁছানোর সময়, আমরা বজ্রাহত হই। কারণ, শব্দের গতি আলো বা বৈদ্যুতিক প্রবাহের তুলনায় অনেক ধীর, তাই বজ্রনাদ শোনার পরেও আমাদের বজ্রাহত হওয়ার সময় থাকে না।
২৪। তাপমোচী ও তাপগ্রাহী পরিবর্তন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:
-
তাপমোচী পরিবর্তন (Endothermic change): এমন একটি পরিবর্তন যেখানে কোনো পদার্থ তাপ শোষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, বরফ গলে জল হয়ে যাওয়া একটি তাপমোচী পরিবর্তন।
-
তাপগ্রাহী পরিবর্তন (Exothermic change): এমন একটি পরিবর্তন যেখানে কোনো পদার্থ তাপ নির্গত করে। উদাহরণস্বরূপ, আগুনে কাঠ পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া একটি তাপগ্রাহী পরিবর্তন।
২৫। কীভাবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে ডিমপোনা তৈরি করা হয়?
উত্তর:
কৃত্রিম পদ্ধতিতে ডিমপোনা (artificial incubation) তৈরি করতে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা হয়:
১.ডিম সংগ্রহ: প্রথমে প্রজননযোগ্য মোরগ এবং মুরগির ডিম সংগ্রহ করা হয়।
২.ডিমের সঞ্চয়: ডিমগুলি একটি সঠিক তাপমাত্রায় (প্রায় ৩৭.৫°C) রাখা হয়।
৩.আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ: সঠিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে হয় (৫০-৬৫%) যাতে ডিমের ভেতরে যথাযথ পরিবেশ তৈরি হয়।
৪.ডিম ঘোরানো: ডিমগুলো প্রতিদিন ৩-৪ বার ঘোরানো হয় যাতে ভ্রুণের সঠিক বৃদ্ধি হয়।
৫.ডিম ফোটানো: ২১ দিন পর ডিম থেকে পোনা বের হয় এবং সেগুলি শীতল এবং নিরাপদ পরিবেশে রাখা হয়।
২৬। শীতকালে গায়ে কম্বল চাপা দিয়ে ঘুমালে আরাম লাগে কেন?
উত্তর:
শীতকালে কম্বল চাপা দিয়ে ঘুমালে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য হয়। কম্বল শরীরের তাপ ধরে রাখে এবং বাইরের ঠান্ডা বাতাস থেকে শরীরকে রক্ষা করে, ফলে শরীরের তাপমাত্রা স্থির থাকে এবং এটি শারীরিক আরাম দেয়।
২৭। রাজকীয় জেলি কী?
উত্তর:
রাজকীয় জেলি (Royal Jelly) হলো একটি মিষ্টি সাদা তরল যা মৌমাছির বিশেষ গ্ল্যান্ড থেকে নিঃসৃত হয়। এটি মধুমাখী মৌমাছির ক্ষুদ্র জীবনকাল বৃদ্ধি এবং রানি মৌমাছির বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টিকর উপাদান। রাজকীয় জেলি বিশেষত রানী মৌমাছির বিকাশ এবং ডিম পাড়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
২৮। বজ্রপাতের সময় বাড়ির মধ্যে এবং বাড়ির বাইরে থাকলে কী কী করা উচিত নয়?
উত্তর:
বজ্রপাতের সময় বাড়ির মধ্যে:
১.বিদ্যুত্ বা টেলিফোনের সংযোগে না থাকা: বজ্রপাতের সময় ফোন বা টেলিভিশন ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ বিদ্যুৎ প্রবাহ বজ্রপাতের মাধ্যমে বাহিত হতে পারে।
২.ধাতব বস্তু স্পর্শ করা: বিদ্যুতের শক থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ধাতব বস্তু (যেমন সিঙ্ক, নল) স্পর্শ করা উচিত নয়।
বাড়ির বাইরে:
১.উঁচু স্থানে দাঁড়ানো: উঁচু জায়গায় বা এককভাবে দাঁড়ানো বিপজ্জনক, কারণ বজ্রপাত সেখানেই পড়ে।
২.বজ্রপাতের সময় জলধারায় অবস্থান করা: জলাধার বা জলাশয়ে থাকা খুব বিপজ্জনক, কারণ পানি তড়িৎ প্রবাহের ভাল পরিবাহী।
২৯। পোড়াচুনে জল দিলে কলিচুন তৈরি হওয়া ছাড়াও প্রচুর স্টিম তৈরি হয়। এর কারণ ব্যাখ্যা করো। অনুঘটকের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর:
পোড়াচুনে জল দিলে কলিচুন তৈরি হওয়ার কারণ হলো, চুনের (CaO) সাথে জল মিশে গিয়ে দ্রুত হাই드্রেট হয় এবং বিশাল পরিমাণ তাপ নির্গত হয়। এর ফলে জল দ্রুত উবে যায় এবং প্রচুর স্টিম তৈরি হয়।
তাপের এই প্রভাবে চুনের হাইড্রেশন প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হয়।
অনুঘটকের বৈশিষ্ট্য:
১. ক্রিয়াশীলতা: অনুঘটক বিক্রিয়া শুরুর সময় তাপ বা শক্তি যোগ করতে সাহায্য করে কিন্তু নিজে পরিবর্তিত হয় না।
২.নির্বাচন: এটি একটি নির্দিষ্ট বিক্রিয়া বা পদার্থের জন্য নির্বাচন করা হয়।
৩.পুনরায় ব্যবহারযোগ্যতা: একবার ব্যবহার করা হলে এটি পুনরায় ব্যবহার করা যায়।
৪.সংকোচন ও গতি: এটি বিক্রিয়া গতি বৃদ্ধি করে কিন্তু এর নিজস্ব শক্তি বা পণ্য তৈরি হয় না।
৩০। আমের জোড়কলম পদ্ধতিতে 'সিয়ন' কাকে বলে? একটি দেশি মাইনর কার্পের নাম লেখো। রানি মৌমাছির কাজ কী?
উত্তর:
-
সিয়ন (Scion) হলো গাছের একটি উন্নত শাখা বা ডাল, যা অন্য গাছের মূল অংশ (রুটস্টক) এর সাথে যুক্ত করা হয়। এটি গাছের ভালো গুণাবলী (যেমন ফলন বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
-
দেশি মাইনর কার্পের নাম: মৃগেল (Mrigal carp)
-
রানি মৌমাছির কাজ: রানি মৌমাছি পুরো মৌচাকের প্রজনন কাজ পরিচালনা করে। এটি শুধুমাত্র ডিম পাড়ে এবং মৌমাছি কলোনি বৃদ্ধি করে।
৩০. জারণের সময় জারক দ্রব্য নিজে বিজারিত হয় এবং বিজারণের সময় বিজারক দ্রব্য নিজে জারিত হয় উপযুক্ত উদাহরণ সহযোগে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:
জারণ ও বিজারণ প্রক্রিয়া হলো একে অপরকে পরিপূরক। যখন একটি পদার্থ জারণ ঘটায়, তখন সেই পদার্থ ইলেকট্রন হারায় এবং জারক পদার্থ হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে, বিজারণের সময় একটি পদার্থ ইলেকট্রন গ্রহণ করে এবং বিজারক পদার্থ হিসেবে কাজ করে।
উদাহরণ:
CuO + H₂ → Cu + H₂O
এই বিক্রিয়ায়,
-
জারণ: হাইড্রোজেন (H₂) জারণ ঘটে কারণ এটি দুটি ইলেকট্রন হারাচ্ছে।
-
বিজারণ: কপার অক্সাইড (CuO) বিজারণ ঘটে কারণ এটি দুটি ইলেকট্রন গ্রহণ করছে।
৩১. তড়িদবিশ্লেষণ বলতে কী বোঝায়? তড়িদবিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার নীতি লেখো।
উত্তর:
তড়িদবিশ্লেষণ (Electrolysis) হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে বৈদ্যুতিক প্রবাহ ব্যবহার করে কোনো পদার্থকে দুটি বা তার অধিক অংশে ভাঙা হয়। এটি মূলত একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া, যেখানে বৈদ্যুতিক শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
তড়িদবিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার নীতি:
-
একটি দ্রবণ বা গলিত পদার্থে বৈদ্যুতিক প্রবাহ চালনা করা হয়।
-
ক্যাথোডে (নেগেটিভ পোল) ইলেকট্রন গ্রহণ করে পদার্থ গঠন হয়।
-
অ্যানোডে (পজিটিভ পোল) ইলেকট্রন ক্ষতি হয় এবং অন্য পদার্থের রূপান্তর ঘটে।
৩২. বজ্রনিরোধক কীভাবে বজ্রপাত থেকে বাড়ি এবং বাড়ির মধ্যেকার বৈদ্যুতিক সরঞ্জামকে রক্ষা করে তা সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর:
বজ্রনিরোধক হলো একটি যন্ত্র বা ব্যবস্থা যা বজ্রপাতের সময় বাড়ির উপর পড়া বৈদ্যুতিক শক্তিকে নিরাপদভাবে মাটিতে প্রবাহিত করে। এটি বাড়ির ছাদে একটি ধাতব রড বা তারের মাধ্যমে বজ্রপাতের শক্তি মাটিতে প্রবাহিত করে, ফলে বাড়ির কাঠামো এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলোর ক্ষয় রোধ করা হয়। বজ্রনিরোধক বৈদ্যুতিক সার্কিটে অতিরিক্ত শক্তি প্রবাহ বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামকে সুরক্ষা প্রদান করে।
৩৩. চায়ের গুণাগুণ সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর:
চা একটি জনপ্রিয় পানীয়, যার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। চায়ের গুণাগুণের মধ্যে রয়েছে:
১.অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ: চায়ে উপস্থিত ক্যাটেচিন ও ফ্ল্যাভোনয়েডস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে।
২.হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য: চা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩.মস্তিষ্কের কার্যকারিতা: চায়ে উপস্থিত ক্যাফেইন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং মনোযোগ ও সতর্কতা বৃদ্ধি করে।
৪.হজমে সহায়ক: চা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
৫.ওজন নিয়ন্ত্রণ: চায়ের কিছু ধরনের উপাদান, যেমন সবুজ চা, ওজন কমাতে সহায়ক।
৩৪. মহামারিকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী? কলেরা রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার নাম কী?
উত্তর:
মহামারিকে সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়:
১.প্রাথমিক মহামারি (Endemic): যেটি একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণভাবে বিদ্যমান থাকে।
২.অস্থায়ী মহামারি (Epidemic): যেটি কোনো একটি অঞ্চলে হঠাৎ করে দ্রুতভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
৩.বিশ্বব্যাপী মহামারি (Pandemic): যেটি একাধিক দেশে বা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
কলেরা রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার নাম:
কলেরা রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার নাম হলো Vibrio cholerae(ভিব্রিও কেরি)।
৩৫. জোড়কলম পদ্ধতিটি বর্ণনা করো। মাইনর কার্পের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
জোড়কলম পদ্ধতি হলো একটি উদ্ভিদ প্রজনন পদ্ধতি যেখানে দুটি আলাদা উদ্ভিদ (যেগুলি সাধারণত একই প্রজাতির) একে অপরের শাখা বা অংশ একত্রিত করে গাছের একটি যৌথ অংশ তৈরি করা হয়। এই পদ্ধতিতে, মূল গাছের এক অংশের সাথে নতুন গাছের এক অংশ যুক্ত করা হয়, এবং এটি সঠিকভাবে আঠালো, ফলপ্রসূ ও শক্তিশালী গাছ তৈরি করে।
মাইনর কার্পের দুটি বৈশিষ্ট্য:
১. উপাদান: মাইনর কার্পে ছোট আকৃতির মাছ, সাধারণত ওজন কম এবং বৃদ্ধি ধীর।
২.প্রজনন ক্ষমতা: মাইনর কার্পের প্রজনন ক্ষমতা ভালো, এবং তারা অল্প সময়ে বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম।
৩৬. লোহার পাইপের ওপর জিংকের প্রলেপ দিতে হলে ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে কী কী ব্যবহার করতে হবে?
উত্তর:
লোহার পাইপের ওপর জিংকের প্রলেপ দেওয়ার জন্য তড়িৎলেপন (Electroplating) পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে,
-
ক্যাথোড হিসেবে লোহার পাইপ ব্যবহৃত হবে, কারণ এটি সেখানে ধাতু (জিংক) প্রাপ্ত করবে।
-
অ্যানোড হিসেবে জিংক ধাতু ব্যবহৃত হবে, যেখানে থেকে জিংক ইলেকট্রন হারিয়ে ক্যাথোডে জমা হবে।
তড়িৎবিশ্লেষণের দুটি ব্যবহার:
১. ধাতু নিষ্কাশন: তড়িৎবিশ্লেষণের মাধ্যমে তামা, অ্যালুমিনিয়াম, সোনা ইত্যাদি ধাতু নিষ্কাশন করা যায়।
২.অলঙ্কার তৈরির জন্য ধাতু প্রলেপ দেওয়া: বিভিন্ন ধাতু যেমন সোনার প্রলেপ, রূপার প্রলেপ ইত্যাদি তৈরি করতে তড়িৎবিশ্লেষণ ব্যবহার করা হয়।
৩৭. বজ্রপাত ও বজ্রনাদ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:
-
বজ্রপাত: বজ্রপাত হলো আকাশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বা তীব্র বৈদ্যুতিক প্রবাহের কারণে আকাশের সাথে পৃথিবী বা দুইটি মেঘের মধ্যে বিদ্যুৎ চমকানো বা শক দেওয়া। এটি একধরনের বৈদ্যুতিক আঘাত।
-
বজ্রনাদ: বজ্রপাতের সময় সৃষ্ট তীব্র শব্দকে বজ্রনাদ বলা হয়, যা বাতাসের দ্রুত প্রসারণের কারণে সৃষ্টি হয়। এটি মূলত বজ্রপাতের ফলস্বরূপ শকওয়েভের শব্দ।
৩৮. লঘু সালফিউরিক অ্যাসিডমিশ্রিত ফেরাস সালফেট দ্রবণে অক্সিজেন গ্যাস চালনা করলে কী ঘটবে সমীকরণসহ লেখো।
উত্তর:
ফেরাস সালফেট (FeSO₄) দ্রবণে লঘু সালফিউরিক অ্যাসিড মিশ্রিত করলে এবং সেখানে অক্সিজেন গ্যাস চালনা করলে ফেরিক সালফেট উৎপন্ন হয়।
প্রতিক্রিয়া:
পরীক্ষাগারে অক্সিজেন প্রস্তুতিতে MnO₂ ব্যবহারের ভূমিকা:
MnO₂ (ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড) অক্সিজেন গ্যাস প্রস্তুতিতে একটি ক্যাটালিস্ট হিসেবে কাজ করে। এটি পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট (KMnO₄) থেকে অক্সিজেন গ্যাস মুক্ত করতে সাহায্য করে, কিন্তু এটি নিজে পরিবর্তিত হয় না।
৩৯. মুরগি পালনে লিটার কী?
উত্তর:
মুরগি পালনে লিটার হলো একটি পণ্য বা পদার্থ যা মুরগির খাঁচায় বা পোলট্রির ফ্লোরে বিছানো হয়। এটি মুরগির মলের শোষণ, নীচে পানি জমা না হওয়া এবং মুরগির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক। লিটার হিসেবে সাধারণত সরিষার খোল, শুকনো পাতা, কাঠকুঁচি ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
৪০. পূর্ণাঙ্গ মাছ তৈরির ধাপগুলি কী কী?
উত্তর:
পূর্ণাঙ্গ মাছ তৈরির ধাপগুলি সাধারণত নিম্নলিখিত:
১.ডিম সংগ্রহ: মা মাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করা।
২.(বীর্য) সংগ্রহ: পুরুষ মাছ থেকে স্পারম(বীর্য )সংগ্রহ করা।
৩.নিষেক: ডিম এবং স্পারম একত্রিত করা, যাতে নিষিক্ত ডিম তৈরি হয়।
৪.নিষিক্ত ডিমের যত্ন নেওয়া: নিষিক্ত ডিম থেকে মাছের পোনা বের হওয়া পর্যন্ত তাদের সঠিক তাপমাত্রা ও যত্ন নেওয়া।
৫.পোনা পরিচর্যা: পোনা বড় হওয়ার জন্য সঠিক পরিবেশ এবং খাদ্য প্রদান করা।
৬.মাছের বড় হওয়া: পোনা বড় হয়ে পূর্ণাঙ্গ মাছ হয়ে ওঠে।
৭.মাছ সংগ্রহ: পূর্ণাঙ্গ মাছ সংগ্রহ করা।