✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
📝1. ‘মেটারনিখের যুগ' বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: ইউরোপে 1815 সালের ভিয়েনা কংগ্রেস থেকে 1830 সালের বিপ্লব পর্যন্ত সময়কে ‘মেটারনিখের যুগ’ বলা হয়। অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেটারনিখ ইউরোপে রাজতন্ত্র রক্ষা ও উদারবাদ দমন করেছিলেন।
📝2. ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান কটি নীতি ছিল ও কী কী?
✅উত্তর: ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান তিনটি নীতি ছিল। রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা এবং বিপ্লবী ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমন।
📝3. ফ্রান্সে কবে, কার নেতৃত্বে ‘দ্বিতীয় সাম্রাজ্য' প্রতিষ্ঠিত হয়? কবে এর পতন ঘটে?
✅উত্তর: ফ্রান্সে 1852 খ্রিস্টাব্দে লুই নেপোলিয়নের নেতৃত্বে দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। 1870 সালে ফ্রাঙ্কো-প্রুশীয় যুদ্ধে পরাজয়ের পর এর পতন ঘটে।
📝4. রাসপুটিন কে ছিলেন?
✅উত্তর: রাসপুটিন ছিলেন এক রহস্যময় সন্ন্যাসী যিনি জার নিকোলাস দ্বিতীয়ের দরবারে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। বিশেষত সম্রাজ্ঞী আলেক্সান্দ্রার ওপর তাঁর বড় প্রভাব ছিল।
📝5. অক্টোবর ঘোষণাপত্র কী?
✅উত্তর: 1905 খ্রিস্টাব্দের বিপ্লব দমনের জন্য জার নিকোলাস দ্বিতীয় অক্টোবর ঘোষণাপত্র জারি করেন। এতে সীমিত সাংবিধানিক অধিকার ও দুমা গঠনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
📝6. 'এপ্রিল থিসিস' কী?
✅উত্তর: 1917 সালে নির্বাসন থেকে ফিরে লেনিন এপ্রিল থিসিস ঘোষণা করেন। এতে যুদ্ধ বন্ধ, ভূমি কৃষকদের হাতে হস্তান্তর ও সমাজতান্ত্রিক শাসনের কথা বলা হয়।
📝7. ‘সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড' বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: 28 জুন 1914 সালে বসনিয়ার সেরাজেভো শহরে অস্ট্রিয়ার যুবরাজ ফ্রাঞ্জ ফার্ডিনান্ডকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হয়ে ওঠে।
📝8. ‘রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি' (1939 খ্রিস্টাব্দ)-এর শর্ত কী ছিল?
✅উত্তর: এই চুক্তিতে রাশিয়া ও জার্মানি একে অপরকে আক্রমণ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। গোপন শর্তে পোল্যান্ডকে দুই ভাগে ভাগ করার পরিকল্পনা করা হয়।
📝9. তোষণ নীতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য কতটা দায়ী ছিল?
✅উত্তর: ব্রিটেন ও ফ্রান্স হিটলারের আগ্রাসন মেনে নিয়ে তোষণ নীতি গ্রহণ করে। এতে হিটলার আরও সাহসী হয় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুতে এটি বড় ভূমিকা রাখে।
📝10. ‘ডি-ডে' বা 'মুক্তি দিবস' সম্পর্কে কী জান?
✅উত্তর: 6 জুন 1944 খ্রিস্টাব্দে মিত্রশক্তি ফ্রান্সের নরম্যান্ডি উপকূলে অবতরণ করে। এই দিনটি ডি-ডে নামে পরিচিত এবং ইউরোপ মুক্তির সূচনা ঘটে।
📝11. জাতিসংঘের প্রধান উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য কী ছিল?
✅উত্তর: জাতিসংঘের মূল লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা। পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবাধিকার রক্ষা ও সহযোগিতা বাড়ানোও এর উদ্দেশ্য।
📝12. ‘আটলান্টিক সনদ' কী?
✅উত্তর: 1941 সালে চার্চিল ও রুজভেল্ট আটলান্টিক সনদ ঘোষণা করেন। এতে গণতান্ত্রিক অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং শান্তিরক্ষার নীতি উল্লেখ ছিল।
📝13. 'ভেটো' কী?
✅উত্তর: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের বিশেষ ক্ষমতাকে ভেটো বলা হয়। এ ক্ষমতায় তারা কোনো প্রস্তাব এককভাবে বাতিল করতে পারে।
✅উত্তর: ফ্রান্সে প্রথম সংবিধান 1791 খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়। এ সংবিধান রচনায় জাতীয় গণপরিষদ (National Assembly)-এর মুখ্য ভূমিকা ছিল।
📝15. বাস্তিল কী? কবে এর পতন ঘটেছিল?
✅উত্তর: বাস্তিল ছিল ফ্রান্সের একটি কারাগার যা রাজশক্তির প্রতীক ছিল। 1789 সালের 14 জুলাই বাস্তিল দুর্গ পতিত হয়।
📝16. ট্রাফালগারের যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়?
✅উত্তর: ট্রাফালগারের যুদ্ধ 1805 খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়। এটি ফরাসি ও স্পেনীয় নৌবাহিনী বনাম ব্রিটিশ নৌবাহিনীর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল।
📝17. ‘সিভিল কোড’ কত খ্রিস্টাব্দে ‘কোড নেপোলিয়ন' নামে পরিচিত হয়? ‘কোড নেপোলিয়ন'-এর মূল কথা কী?
✅উত্তর: 1804 খ্রিস্টাব্দে ‘সিভিল কোড’ ‘কোড নেপোলিয়ন’ নামে পরিচিত হয়। এর মূল কথা ছিল সমতা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম্পত্তির অধিকার সংরক্ষণ।
📝18. ভিয়েনা সম্মেলনের দুটি গুরুত্ব আলোচনা করো।
✅উত্তর: 1815 খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন ইউরোপে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। এছাড়া ইউরোপে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করা হয়।
📝19. ‘মুক্তিদাতা জার’ কাকে এবং কেন বলা হয় ?
✅উত্তর: রাশিয়ার আলেকজান্ডার দ্বিতীয়কে ‘মুক্তিদাতা জার’ বলা হয়। কারণ তিনি 1861 সালে ভূমিদাস প্রথা বিলোপ করেন।
📝20. কী উদ্দেশ্যে সুয়েজ খাল খনন করা হয় ?
✅উত্তর: ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ সহজ করার জন্য সুয়েজ খাল খনন করা হয়। এটি 1869 সালে চালু হয়।
📝21. কোন্ সন্ধির মাধ্যমে অহিফেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে ?
✅উত্তর: অহিফেন যুদ্ধের পরিসমাপ্তি 1842 সালের নানকিং সন্ধির মাধ্যমে হয়। এতে চীনকে ব্রিটিশদের কাছে হংকং ছেড়ে দিতে হয়।
📝22. ভূমিদাসদের মুক্তির ঘোষণাপত্রে কী বলা হয়েছিল ?
✅উত্তর: 1861 সালের ঘোষণাপত্রে রাশিয়ার ভূমিদাসদের মুক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে তাদের জমির মালিকানা পুরোপুরি দেওয়া হয়নি।
📝23. কবে, কাদের মধ্যে ‘রোম-বার্লিন-টোকিও’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ? এই চুক্তিভুক্ত জোটের নাম কী ছিল ?
✅উত্তর: 1940 সালে জার্মানি, ইতালি ও জাপানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ জোটকে ‘অক্ষশক্তি’ বলা হয়।
📝24. 1939 খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া কেন জার্মানির সঙ্গে 'রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি' স্বাক্ষরে আগ্রহী হয় ?
✅উত্তর: জার্মান আক্রমণ এড়াতে ও সামরিক প্রস্তুতির সময় পাওয়ার জন্য রাশিয়া এ চুক্তি স্বাক্ষরে আগ্রহী হয়। এটি স্টালিনের কৌশলগত পদক্ষেপ ছিল।
📝25. ‘হেরেনফোক তত্ত্ব' কী?
✅উত্তর: হেরেনফোক তত্ত্ব ছিল হিটলারের বর্ণবাদী ধারণা। এতে বলা হয় জার্মান জাতি শ্রেষ্ঠ, আর অন্যান্য জাতি নিকৃষ্ট।
📝26. লিগ কভেনান্ট বা লিগের চুক্তিপত্র কী ?
✅উত্তর: লিগ কভেনান্ট ছিল আন্তর্জাতিক জাতিপুঞ্জের সংবিধান। এতে জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য, কাঠামো ও কার্যপদ্ধতি নির্ধারিত হয়।
📝27. আটলান্টিক সনদ কী ?
✅উত্তর: আটলান্টিক সনদ 1941 সালে চার্চিল ও রুজভেল্ট প্রকাশ করেন। এতে গণতন্ত্র রক্ষা, অস্ত্র হ্রাস ও স্বাধীনতার নীতি ঘোষিত হয়।
📝28. মন্তেস্কুর লেখা একটি গ্রন্থের নাম ও মূল বক্তব্য কী ছিল?
✅উত্তর: মন্তেস্কু ‘দ্য স্পিরিট অব লজ’ (The Spirit of Laws) গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এতে তিনটি শাখায় শাসনব্যবস্থা ভাগ করে ক্ষমতার ভারসাম্যবিধি (separation of powers) প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
📝29. থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কী?
✅উত্তর: থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া হলো ফরাসি বিপ্লবের পর রেডিক্যাল জাকোবিন শাসনের পতনের পর গণতান্ত্রিক ও প্রথাগত শাসনের পুনরায় উত্থান। এটি বিপ্লবের চরমপন্থী নীতি হ্রাস করেছিল।
📝30. ডাইরেক্টরি শাসনব্যবস্থা কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
✅উত্তর: থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়ার পর 1795 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ডাইরেক্টরি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি পাঁচজন ডিরেক্টরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত হত।
📝31. কোন্ যুদ্ধকে জাতিপুঞ্জের যুদ্ধ বলা হয় এবং কেন?
✅উত্তর: প্রথম বিশ্বযুদ্ধকে জাতিপুঞ্জের যুদ্ধ বলা হয়। কারণ এতে বহু দেশ ও মহাদেশের সেনাবাহিনী সরাসরি জড়িত ছিল।
📝32. জাতি-রাষ্ট্র বলতে কী বোঝায়?
✅উত্তর: জাতি-রাষ্ট্র হলো এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে একক জাতি বা প্রধান জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিচয় প্রতিষ্ঠিত থাকে। এটি সাধারণত জাতিগত, ভাষাগত বা সাংস্কৃতিক মিলের উপর ভিত্তি করে গঠিত।
📝33. প্যান-জার্মানইজম বা সর্বজার্মানবাদ কী?
✅উত্তর: প্যান-জার্মানইজম হলো জার্মানিদের ঐক্যবদ্ধ করার ও বিস্তৃত অঞ্চলে জার্মান প্রভাব বিস্তার করার নীতি। এটি বিশেষত 19শ শতকের জার্মান জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।
📝34. কারখানা প্রথা বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: কারখানা প্রথা হলো শ্রমিকদের বড় বড় কারখানায় নিয়মিত সময়সূচি ও মেশিন ব্যবহার করে উৎপাদন কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা। এটি শিল্পবিপ্লবের সময় শ্রমিক ও উৎপাদন পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্য ছিল।
📝35. হুভার মোরাটোরিয়াম বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: হুভার মোরাটোরিয়াম হলো 1931 খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি হার্ভে হুভারের ঘোষিত ঋণ মওকুফ ও স্থগিত নীতি। এটি মহামন্দার সময় অর্থনৈতিক চাপ কমানোর চেষ্টা ছিল।
📝36. হেরেনফোক তত্ত্ব কী?
✅উত্তর: হেরেনফোক তত্ত্ব হলো জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের জাতিগত ও সামাজিক চরিত্র গঠনে প্রভাব ফেলে, এমন একটি ধারণা। এটি 19শ শতকের জলবায়ু-বিশ্লেষণমূলক দর্শনের অংশ।
📝37. অপারেশন বারবারোসা বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: অপারেশন বারবারোসা হলো 1941 খ্রিস্টাব্দে নাৎসি জার্মানির সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত আক্রমণ। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযানগুলোর মধ্যে একটি।
📝38. ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতিটির ধারণা কী?
✅উত্তর: ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি হলো 1939 খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি, যেখানে মিত্র দেশগুলো মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পারবে শুধুমাত্র নগদ অর্থ দিয়ে। এতে ক্রেতারা সরাসরি সামরিক সামগ্রী পাবে এবং মার্কিন অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ সীমিত থাকবে।
📝39. UNO/রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্কথন কীভাবে বর্ণিত হয়?
✅উত্তর: রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্কথন হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ। এটি 1945 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়।
📝40. অছি পরিষদ কী?
✅উত্তর: অছি পরিষদ হলো আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক সংঘাত সমাধানের জন্য গঠিত এক পরামর্শক সংস্থা। এটি জাতিসংঘের মতো কার্যক্রম পরিচালনা করে, তবে সীমিত সদস্য ও ক্ষমতা রয়েছে।
📝41. ফ্রান্সে অভিজাতরা কেন বিদ্রোহ করে?
✅উত্তর: ফ্রান্সের অভিজাত শ্রেণি রাজকীয় করের বোঝা ও বিশেষ সুবিধা হারানোর আশঙ্কায় বিদ্রোহ করে। তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ও সামাজিক প্রভাব পুনরুদ্ধারের জন্য রাজবিরোধী অবস্থান নেয়।
📝42. শিল্পবিপ্লব কীভাবে উপনিবেশ সৃষ্টি করে?
✅উত্তর: শিল্পবিপ্লবের ফলে ইউরোপীয় দেশগুলির কাঁচামাল ও বাজারের প্রয়োজন বাড়ে। এই চাহিদা মেটাতেই তারা এশিয়া ও আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করে।
📝43. ফ্রান্সে ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারপত্রটি কীসের অনুকরণে রচিত হয়?
✅উত্তর: ফ্রান্সের অধিকারপত্রটি 1776 সালের আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রের আদলে রচিত হয়। এতে স্বাধীনতা, সমতা ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
📝44. সাঁকুলো বলতে কাদের বোঝায়?
✅উত্তর: সাঁকুলো ছিল ফ্রান্সের দরিদ্র কৃষক ও শ্রমজীবী জনগোষ্ঠী। তারা ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি ছিল।
📝45. নেপোলিয়ন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ চার্লসের সঙ্গে কেন ফন্টেন ব্যু (1807 খ্রিস্টাব্দে) চুক্তি স্বাক্ষর করেন?
✅উত্তর: নেপোলিয়ন এই চুক্তি করেন পর্তুগালে আক্রমণ ও ব্রিটিশ বাণিজ্য অবরোধ কার্যকর করতে। স্পেনের সহযোগিতা লাভের জন্য তিনি এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেন।
📝46. সন্ত্রাসের রাজত্ব বলতে কী বোঝায়?
✅উত্তর: ফরাসি বিপ্লব চলাকালীন রোবসপিয়ারের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এক কঠোর দমনমূলক শাসনব্যবস্থাকে সন্ত্রাসের রাজত্ব বলা হয়। এই সময় হাজার হাজার মানুষ গিলোটিনে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল।
📝47. ‘লিপজিগের যুদ্ধ’ বা ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ’ কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়?
✅উত্তর: 1813 সালে ফ্রান্সের নেপোলিয়ন ও রাশিয়া, প্রুশিয়া, অস্ট্রিয়া ও ইংল্যান্ডের যৌথ বাহিনীর মধ্যে এই যুদ্ধ হয়। এতে নেপোলিয়নের পরাজয় ঘটে ও তার শক্তির অবসান শুরু হয়।
📝48. কোন্ কোন্ প্রাকৃতিক সুযোগ সুবিধার জন্য ইংল্যান্ডে দ্রুত শিল্পবিপ্লব ঘটে?
✅উত্তর: ইংল্যান্ডে প্রচুর কয়লা, লোহা ও নৌবাহনযোগ্য নদী শিল্পবিপ্লবের মূল সহায়ক ছিল। এছাড়া অনুকূল জলবায়ু ও স্থিতিশীল রাজনীতি শিল্পোন্নয়নে সহায়তা করে।
📝49. চিনে ‘অতিরাষ্ট্রিক অধিকার’ বলতে কী বোঝায়?
✅উত্তর: ইউরোপীয় শক্তিগুলিকে চিনে বিশেষ বাণিজ্য ও প্রশাসনিক অধিকার প্রদানকে অতিরাষ্ট্রিক অধিকার বলা হয়। এর ফলে চিন নিজের ভূখণ্ডে বিদেশি শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি।
📝50. সেডানের যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল এবং এর ফল কী হয়েছিল?
✅উত্তর: 1870 সালে ফ্রান্স ও প্রুশিয়ার মধ্যে সেডানের যুদ্ধ হয়। এতে ফ্রান্স পরাজিত হয় এবং নেপোলিয়ন তৃতীয় বন্দী হন, ফলে দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
📝51. তৃতীয় বিশ্ব বলতে কী বোঝায়?
✅উত্তর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অ-জোটভুক্ত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিকে তৃতীয় বিশ্ব বলা হয়। এই দেশগুলো সাধারণত অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে ছিল।
📝52. আন্তর্জাতিকতাবাদ বলতে কী বোঝায়?
✅উত্তর: আন্তর্জাতিকতাবাদ এমন একটি মতবাদ, যা দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা, শান্তি ও সমানাধিকারের পক্ষে অবস্থান নেয়। এটি জাতীয়তাবাদের সংকীর্ণতা দূর করে বিশ্বসংহতির লক্ষ্যে কাজ করে।
📝53. ‘বুর্জোয়াজি’ বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: ‘বুর্জোয়াজি’ বলতে ফ্রান্সের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে বোঝায়, যারা বাণিজ্য, শিল্প ও শিক্ষার মাধ্যমে ধনসম্পদ অর্জন করেছিল। এই শ্রেণিই ফরাসি বিপ্লবের মূল চালিকা শক্তি ছিল।
📝54. ডেনিস দিদেরোঁ ছাড়া বিশ্বকোষ রচনার সদস্য আর কারা ছিলেন?
✅উত্তর: দিদেরোঁর পাশাপাশি দালেমবেয়ার, রুশো, ভলতেয়ার ও মন্টেস্কু প্রমুখ বিশ্বকোষ রচনায় অংশ নেন। তাঁরা বিজ্ঞান, দর্শন ও সমাজ সংস্কারমূলক প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন।
📝55. ফ্রান্সের প্রথম লিখিত সংবিধান কোনটি? ‘মানুষ ও নাগরিকদের অধিকারপত্র’ ঘোষিত হয় কবে?
✅উত্তর: ফ্রান্সের প্রথম লিখিত সংবিধান ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে গৃহীত হয়। ‘মানুষ ও নাগরিকদের অধিকারপত্র’ ঘোষিত হয় ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে।
📝56. থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কী?
✅উত্তর: ১৭৯৪ সালের জুলাই মাসে রোবসপিয়ারের পতনের ঘটনাকে থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া বলা হয়। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসের রাজত্বের অবসান ঘটে এবং উদার শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
📝57. ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফরাসি মহিলারা কী কী অধিকার লাভ করে?
✅উত্তর: ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে মহিলারা সম্পত্তি অধিকার, বিবাহ বিচ্ছেদ ও শিক্ষা লাভের অধিকার অর্জন করে। যদিও রাজনৈতিক অধিকার তারা তখনও পায়নি।
📝58. নেপোলিয়ন ফ্রান্সে কোন্ শাসন প্রবর্তন করেন? নতুন সংবিধান অনুযায়ী যে আইনসভা গঠিত হয়, তার কী কী শাখা ছিল?
✅উত্তর: নেপোলিয়ন ফ্রান্সে কনসুলেট শাসন প্রবর্তন করেন। নতুন সংবিধান অনুযায়ী আইনসভা ছিল চার ভাগে—কনসুলেট, ট্রাইব্যুনেট, লেজিসলেটিভ বডি ও সেনেট।
📝59. ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ কবে হয়েছিল? এই সময় ব্রিটিশ নৌসেনাপতি কে ছিলেন?
✅উত্তর: ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে ব্রিটিশ নৌসেনাপতি ছিলেন অ্যাডমিরাল লর্ড নেলসন।
📝60. শতদিবসের রাজত্বের পূর্বে নেপোলিয়নকে কোন্ দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়েছিল? নেপোলিয়ন কোন্ দ্বীপে মারা যান?
✅উত্তর: নেপোলিয়নকে শতদিবসের পূর্বে এলবা দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত অবস্থায় মারা যান।
📝61. ‘বিগ ফোর’ কারা?
✅উত্তর: ‘বিগ ফোর’ বলতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইতালির নেতাদের বোঝায়। তাঁরা ভার্সাই চুক্তির প্রধান রূপকার ছিলেন।
📝62. কে ‘সেফটি ল্যাম্প’ আবিষ্কার করেন? এটি আবিষ্কারের ফলে কী সুবিধা হয়?
✅উত্তর: ‘সেফটি ল্যাম্প’ আবিষ্কার করেন স্যার হামফ্রি ডেভি। এর ফলে খনিতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমে গিয়ে শ্রমিকদের জীবন নিরাপদ হয়।
📝63. প্রুধোঁ ‘সম্পত্তি কী’ গ্রন্থে সম্পত্তি সম্পর্কে কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন? তাঁকে ‘নৈরাজ্যবাদের জনক’ বলা হয় কেন?
✅উত্তর: প্রুধোঁ তাঁর ‘সম্পত্তি কী’ গ্রন্থে বলেন—“সম্পত্তি একপ্রকার চুরি”। তিনি সরকারের নিয়ন্ত্রণবিরোধী স্বাধীন সমাজের কথা বলেছিলেন, তাই তাঁকে ‘নৈরাজ্যবাদের জনক’ বলা হয়।
📝64. ‘হে ডকট্রিন’ প্রস্তাবে কী বলা হয়েছিল?
✅উত্তর: 1823 সালের ‘হে ডকট্রিন’-এ বলা হয়, ইউরোপীয় দেশগুলো আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এটি মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি স্থাপন করে।
📝65. ‘ত্রিশক্তি মৈত্রী’ কোন্ কোন্ দেশের মধ্যে গড়ে ওঠে?
✅উত্তর: ‘ত্রিশক্তি মৈত্রী’ গঠিত হয় জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ও ইতালির মধ্যে। এটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপের শক্তির ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
📝66. রাশিয়ায় সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক ওয়ার্কার্স পার্টি কবে গঠিত হয়? এই দলটি কী কী ভাগে ভাগ হয়?
✅উত্তর: রাশিয়ান সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক ওয়ার্কার্স পার্টি ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়। এটি পরবর্তীতে বলশেভিক ও মেনশেভিক—এই দুই দলে বিভক্ত হয়।
📝67. নির্বাচনে জেতার পর কে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন? এই প্রজাতন্ত্রের ব্যর্থতাগুলি কোথায় প্রচারিত হয়?
✅উত্তর: নির্বাচনে জেতার পর ফ্রিডরিখ এবার্ট ভাইমার প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন। এর ব্যর্থতাগুলি নাৎসি পার্টির প্রচারমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।
📝68. পার্ল হারবার ঘটনাটি কবে, কার নেতৃত্বে ঘটে?
✅উত্তর: পার্ল হারবার আক্রমণ ঘটে ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর। জাপানি নৌবাহিনীর নেতা অ্যাডমিরাল ইয়ামামোটোর নেতৃত্বে এই আক্রমণ পরিচালিত হয়।
📝69. ‘জাতিসংঘ’ বা ‘লিগ অব নেশনস’-এর মুখ্য অঙ্গ কী কী?
✅উত্তর: লিগ অব নেশনস-এর মুখ্য অঙ্গ ছিল—সাধারণ সভা, পরিষদ ও সচিবালয়। এগুলো আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতা রক্ষার উদ্দেশ্যে কাজ করত।
📝70. কত বছর পরে এস্টেট জেনারেলের অধিবেশন আহুত হয়েছিল? এই সভায় ভোটদানের পদ্ধতি কীরূপ ছিল?
✅উত্তর: ফ্রান্সে প্রায় ১৭৫ বছর পর ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে এস্টেট জেনারেলের অধিবেশন আহুত হয়। এখানে প্রতিটি শ্রেণি আলাদাভাবে ভোট দিত, ফলে তৃতীয় শ্রেণি বঞ্চিত থাকত।
📝71. স্যাডোয়ার যুদ্ধ কবে ও কাদের মধ্যে হয়েছিল?
✅উত্তর: স্যাডোয়ার যুদ্ধ ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে প্রুশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বিসমার্কের নেতৃত্বে প্রুশিয়া বিজয়ী হয়।
📝72. কে, কবে, কোথায় ইয়ং ইতালি দল গঠন করেন?
✅উত্তর: ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে জিউসেপি মাজিনি ফ্রান্সের মার্সেই শহরে ‘ইয়ং ইতালি’ দল গঠন করেন। এর লক্ষ্য ছিল ইতালির একীকরণ ও স্বাধীনতা অর্জন।
📝73. ওয়াটারলুর যুদ্ধে কে নেপোলিয়নকে পরাজিত করেছিলেন?
✅উত্তর: ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ওয়াটারলুর যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাপতি ডিউক অব ওয়েলিংটন নেপোলিয়নকে পরাজিত করেন। এই পরাজয়ে নেপোলিয়নের রাজনৈতিক জীবন চিরতরে শেষ হয়।
📝74. সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড কী?
✅উত্তর: ১৯১৪ সালের ২৮ জুন সার্ব জাতীয়তাবাদী যুবক গ্যাভরিলো প্রিন্সিপ অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রান্জ ফার্ডিনান্ডকে হত্যা করেন। এই ঘটনাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা ঘটায়।
📝75. কবে, কোথায় ‘আটলান্টিক চার্টার’ স্বাক্ষরিত হয়?
✅উত্তর: ১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট ব্রিটেনের উইনস্টন চার্চিল ও আমেরিকার ফ্র্যাঙ্কলিন রুজভেল্ট ‘আটলান্টিক চার্টার’ স্বাক্ষর করেন। এটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের এক জাহাজে সম্পন্ন হয়।
📝76. থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কী?
✅উত্তর: ১৭৯৪ সালের জুলাই মাসে ফ্রান্সে রোবসপিয়ারের পতনের ঘটনাকে থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া বলা হয়। এর মাধ্যমে জ্যাকোবিন শাসনের অবসান ঘটে এবং নতুন ডাইরেক্টরি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
📝77. ফরাসি বিপ্লবকালে ফ্রান্সের রাজা কে ছিলেন? কত খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয় ?
✅উত্তর: ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের রাজা ছিলেন ষোড়শ লুই। তাঁকে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে গিলোটিনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
📝78. ‘টেনিস কোর্টের শপথ’ কী ?
✅উত্তর: ১৭৮৯ সালের ২০ জুন তৃতীয় শ্রেণির প্রতিনিধিরা টেনিস কোর্টে জাতীয় পরিষদ গঠনের শপথ নেন। এটি ফরাসি বিপ্লবের সূচনার প্রতীক ছিল।
📝79. ‘কোড নেপোলিয়ন’ কী ?
✅উত্তর: নেপোলিয়নের সময়ে প্রণীত ফ্রান্সের দেওয়ানি আইনকে ‘কোড নেপোলিয়ন’ বলা হয়। এটি ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে কার্যকর হয় ও নাগরিক অধিকারের ভিত্তি স্থাপন করে।
📝80. 'Big Four' বলতে কাদের বোঝায় ?
✅উত্তর: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণকারী চার রাষ্ট্রনেতাকে 'Big Four' বলা হয়। তাঁরা হলেন— আমেরিকার উইলসন, ইংল্যান্ডের লয়েড জর্জ, ফ্রান্সের ক্লেমেন্সো ও ইতালির অরল্যান্ডো।
📝81. ‘পোড়ামাটি নীতি’ কী ?
✅উত্তর: রাশিয়ার সেনারা নেপোলিয়নের আক্রমণের সময় পশ্চাদপসরণ করে নিজেরাই জমি ও গ্রাম পুড়িয়ে দেয়। এই কৌশলকে বলা হয় ‘পোড়ামাটি নীতি’, যা শত্রুকে রসদহীন করত।
📝82. কার্লসভাড ডিক্রি কেন জারি করা হয় ?
✅উত্তর: ১৮১৯ সালে অস্ট্রিয়ার মেটারনিখ জার্মানিতে উদারপন্থী ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমন করার জন্য কার্লসভাড ডিক্রি জারি করেন। এই ডিক্রির মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বন্ধ করা হয়।
📝83. জোলভেরাইন কী ?
✅উত্তর: জোলভেরাইন ছিল প্রুশিয়ার উদ্যোগে ১৮৩৪ সালে গঠিত একটি শুলকমুক্ত বাণিজ্যসংঘ। এটি জার্মানির অর্থনৈতিক ঐক্য সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
📝84. কারখানা (ফ্যাক্টরি) প্রথা কী ?
✅উত্তর: শিল্পবিপ্লবের ফলে মেশিননির্ভর বৃহৎ উৎপাদন প্রণালিকে কারখানা প্রথা বলা হয়। এতে শ্রমিকরা নির্দিষ্ট স্থানে সংগঠিতভাবে কাজ করত।
📝85. আফ্রিকাকে ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ’ বলা হয় কেন ?
✅উত্তর: ইউরোপীয়দের কাছে আফ্রিকার অভ্যন্তরভাগ দীর্ঘদিন অজানা ছিল। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক রহস্যে আবৃত থাকার জন্য একে ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ’ বলা হয়।
📝86. কে, কবে সেফটি ল্যাম্প আবিষ্কার করেন ?
✅উত্তর: ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে স্যার হামফ্রি ডেভি সেফটি ল্যাম্প আবিষ্কার করেন। এটি খনি শ্রমিকদের গ্যাস বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা করত।
📝87. ‘হুভার মোরাটোরিয়াম’ বলতে কী বোঝো ?
✅উত্তর: ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট হুভার যুদ্ধক্ষতিপূরণ ও ঋণ পরিশোধ এক বছরের জন্য স্থগিত রাখার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবকেই ‘হুভার মোরাটোরিয়াম’ বলা হয়।
📝88. মহামন্দা কী ?
✅উত্তর: ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে মহামন্দা বলা হয়। এতে বিশ্বজুড়ে উৎপাদন, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের মারাত্মক অবনতি ঘটে।
📝89. রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষজোট কী ?
✅উত্তর: ইতালি, জার্মানি ও জাপানের মধ্যে ১৯৩৭ সালে গঠিত সামরিক ও রাজনৈতিক জোটকে রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষজোট বলা হয়। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তির কেন্দ্র ছিল।
📝90. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে শুরু হয় এবং কবে শেষ হয় ?
✅উত্তর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়। এটি ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর জাপানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়।
📝91. জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
✅উত্তর: জাতিসংঘের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বশান্তি রক্ষা ও যুদ্ধ প্রতিরোধ করা। এছাড়াও, মানবাধিকার সংরক্ষণ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করাই এর লক্ষ্য।
📝92. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলির নাম লেখো।
✅উত্তর: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হলো— যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। এদের প্রত্যেকেরই ‘ভেটো’ ক্ষমতা রয়েছে।
📝93. দৈব রাজতন্ত্রের ধারণা কী ?
✅উত্তর: দৈব রাজতন্ত্র হলো এমন এক ধারণা যেখানে রাজাকে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে গণ্য করা হয়। এর মতে রাজাধিকার ঈশ্বরপ্রদত্ত, তাই প্রজাদের রাজবিরোধিতা করা পাপ বলে বিবেচিত হয়।
📝94. মানুষ ও নাগরিকদের অধিকারের ঘোষণাপত্রে কী বলা হয়েছিল?
✅উত্তর: ১৭৮৯ সালে ঘোষিত এই ঘোষণাপত্রে স্বাধীনতা, সাম্য, সম্পত্তির অধিকার ও ন্যায়বিচারের নীতি প্রস্তাব করা হয়। এতে বলা হয়, “মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন ও অধিকারে সমান।”
📝95. কোড নেপোলিয়ন কেন প্রণয়ন করা হয়েছিল ?
✅উত্তর: ফ্রান্সে আইনের ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও সামন্ত প্রথার অবসান ঘটাতে নেপোলিয়ন ১৮০৪ সালে কোড নেপোলিয়ন প্রণয়ন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল নাগরিক অধিকার ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
📝96. মহাদেশীয় ব্যবস্থায় নেপোলিয়নের ব্যর্থতার দুটি কারণ লেখো ।
✅উত্তর: ব্রিটেনের শক্তিশালী নৌবাহিনীর কারণে ইউরোপে তার বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু, ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনৈতিক ক্ষোভ ও বিরোধিতার ফলে এই ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়।
📝97. ইউরোপীয় শক্তি সমবায় গঠনের উদ্দেশ্য কী ছিল ?
✅উত্তর: ইউরোপীয় শক্তি সমবায় বা Concert of Europe গঠিত হয়েছিল ফ্রান্সের মতো বিপ্লব প্রতিরোধের জন্য। এর উদ্দেশ্য ছিল রাজতন্ত্র রক্ষা ও ইউরোপে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
📝98. ‘সর্ব-জার্মানবাদ’-এর আদর্শ তুলে ধরেছেন এরকম কয়েকজনের নাম উল্লেখ করো।
✅উত্তর: ‘সর্ব-জার্মানবাদ’ বা Pan-Germanism আদর্শটি বিসমার্ক, হাইনরিখ ক্লাস ও হিটলারের মতো নেতারা প্রচার করেছিলেন। এর লক্ষ্য ছিল সকল জার্মান জাতিকে একত্রিত করা।
📝99. শিল্পবিপ্লব বলতে কী বোঝো?
✅উত্তর: শিল্পবিপ্লব বলতে ১৮শ শতাব্দীর শেষভাগে ইংল্যান্ডে হাতের কাজের পরিবর্তে যন্ত্রনির্ভর উৎপাদনের সূচনাকে বোঝায়। এর ফলে অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে বিপুল পরিবর্তন ঘটে।
📝100. নৈরাজ্যবাদীদের রাষ্ট্র সম্পর্কে মূল চিন্তাধারা কী ছিল ?
✅উত্তর: নৈরাজ্যবাদীরা মনে করতেন রাষ্ট্র হলো মানুষের স্বাধীনতার অন্তরায়। তাঁদের মতে, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থা উচ্ছেদ করা জরুরি।
📝101. ‘সর্বহারার একনায়কত্ব’ বলতে কী বোঝো ?
✅উত্তর: মার্কসবাদ অনুসারে শ্রমিক শ্রেণি ক্ষমতায় এলে বুর্জোয়া শ্রেণির শোষণ বন্ধ হবে। এই শ্রমিকশ্রেণির শাসনকেই ‘সর্বহারার একনায়কত্ব’ বলা হয়।
📝102. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে বিশ্বের প্রধানতম শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্থান ঘটে। এই উত্থানের তিনটি কারণ উল্লেখ করো।
✅উত্তর: ইউরোপের অর্থনৈতিক ধ্বংসে আমেরিকা বিশ্বের প্রধান ঋণদাতা হয়ে ওঠে। এছাড়া যুদ্ধকালীন শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণও এই উত্থানের মূল কারণ।
📝103. ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স কেন হিটলারকে তোষণ করেছিল ?
✅উত্তর: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পুনরাবৃত্তি এড়াতে ও শান্তি রক্ষা করতে তারা হিটলারকে ছাড় দিতে চেয়েছিল। উপরন্তু, জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তখন তাদের প্রস্তুতি অপর্যাপ্ত ছিল।
📝104. 'D-Day' কী ?
✅উত্তর: ‘ডি-ডে’ বলতে ১৯৪৪ সালের ৬ জুন মিত্রবাহিনীর নরম্যান্ডিতে অবতরণ অভিযানকে বোঝানো হয়। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের সূচনা করে।
📝105. নিরাপত্তা পরিষদের কাজ কী কী?
✅উত্তর: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান কাজ হলো আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা। এছাড়াও, সংঘাত প্রতিরোধ, অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা এর দায়িত্ব।
📝106. ভেটো কাকে বলে ?
✅উত্তর: ভেটো হলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের বিশেষ ক্ষমতা, যার দ্বারা তারা কোনো প্রস্তাব নাকচ করতে পারে। অর্থাৎ, পাঁচ সদস্যের (আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য) মধ্যে যে কেউ একটি প্রস্তাবেও ভেটো দিলে তা গৃহীত হয় না।
📝107. ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি কী?
✅উত্তর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবর্তিত এই নীতিতে যুদ্ধরত দেশগুলো নগদে অর্থ প্রদান করে নিজেদের জাহাজে অস্ত্র বা সামগ্রী নিতে পারত। এর মাধ্যমে আমেরিকা নিরপেক্ষ থেকেও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছিল।
📝108. আটলান্টিক চার্টার কী ?
✅উত্তর: ১৯৪১ সালে চার্চিল ও রুজভেল্ট স্বাক্ষরিত এই ঘোষণায় যুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে শান্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করা হয়। এটি জাতিসংঘ সৃষ্টির ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
📝109. লাল ফৌজ কে, কেন গঠন করেন?
✅উত্তর: রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের পর লেনিন ১৯১৮ সালে ‘লাল ফৌজ’ বা Red Army গঠন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল বিপ্লব রক্ষা ও প্রতিপক্ষ শক্তিকে পরাজিত করা।
📝110. কার্ল মার্কস-এর সহযোগীর নাম কী? তাঁদের রচিত বিখ্যাত পুস্তিকার নাম কী ?
✅উত্তর: কার্ল মার্কসের সহযোগী ছিলেন ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস। তাঁদের যৌথভাবে রচিত বিখ্যাত গ্রন্থের নাম Communist Manifesto (১৮৪৮)।
📝111. ট্রিপল আঁতাত কবে ও কাদের মধ্যে সম্পাদিত হয়েছিল?
✅উত্তর: ট্রিপল আঁতাত বা ত্রিদেশীয় সন্ধি ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পাদিত হয়। এটি জার্মানির নেতৃত্বাধীন ট্রিপল অ্যালায়েন্সের বিরোধিতায় গঠিত হয়।
📝112. ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত নীতিগুলি কী ছিল?
✅উত্তর: ১৮১৫ সালের ভিয়েনা সম্মেলনে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও ইউরোপে শক্তির ভারসাম্য রক্ষার নীতি গ্রহণ করা হয়। বিপ্লব ও গণতন্ত্রের আদর্শ দমন করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য।
📝113. জুলাই রাজতন্ত্র কার রাজত্বকালকে বলা হয়? কোন্ বছর ওই রাজতন্ত্র শেষ হয় ?
✅উত্তর: ১৮৩০ সালে লুই ফিলিপের শাসনকালকে ‘জুলাই রাজতন্ত্র’ বলা হয়। এই রাজতন্ত্র ১৮৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবে পতিত হয়।
📝114. কোন্ কোন্ যুদ্ধের মাধ্যমে বিসমার্ক জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন?
✅উত্তর: বিসমার্ক ডেনমার্ক (১৮৬৪), অস্ট্রিয়া (১৮৬৬) ও ফ্রান্সের (১৮৭০–৭১) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে জার্মানির সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পায়।
📝115. কোড নেপোলিয়ন কী ?
✅উত্তর: কোড নেপোলিয়ন হলো ১৮০৪ সালে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট প্রণীত ফরাসি দেওয়ানি আইন। এতে নাগরিক অধিকার, সম্পত্তি ও স্বাধীনতার নীতিগুলি আইনি ভিত্তি পায়।
📝116. ধর্মযাজকদের সংবিধান কী ?
✅উত্তর: ১৭৯০ সালে ফরাসি জাতীয় পরিষদ কর্তৃক প্রণীত ধর্মযাজকদের সংবিধানে চার্চ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আসে। এর ফলে পোপের কর্তৃত্ব সীমিত হয়ে পড়ে এবং ধর্মযাজকরা রাষ্ট্রের অধীনস্থ হন।
📝117. পোড়ামাটি নীতি কী ?
✅উত্তর: পোড়ামাটি নীতি (Scorched Earth Policy) হলো শত্রুর অগ্রযাত্রা রোধের জন্য নিজ দেশের সম্পদ, ফসল ও অবকাঠামো ধ্বংস করার কৌশল। রুশরা নেপোলিয়নের আক্রমণের সময় এই নীতি গ্রহণ করেছিল।
📝118. আন্তর্জাতিকতাবাদ কী? উদাহরণ দাও।
✅উত্তর: আন্তর্জাতিকতাবাদ হলো সব জাতির মধ্যে সহযোগিতা, শান্তি ও ঐক্যের ভাবধারা। উদাহরণস্বরূপ—জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা আন্তর্জাতিকতাবাদের বাস্তব প্রতিফলন।
📝119. কনফেডারেশন অব দ্য রাইন কী ?
✅উত্তর: ১৮০৬ সালে নেপোলিয়ন জার্মান রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে যে নতুন সংগঠন গঠন করেন, সেটিই ছিল Confederation of the Rhine। এটি পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অবসান ঘটায়।
📝120. গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়ারশ কী ?
✅উত্তর: ১৮০৭ সালে নেপোলিয়ন প্রুশিয়ার পরাজয়ের পর পোল্যান্ডে গঠিত একটি আধা-স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়ারশ। এর উদ্দেশ্য ছিল মধ্য ইউরোপে ফরাসি প্রভাব বৃদ্ধি করা।
📝121. রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি কী ?
✅উত্তর: ১৯৩৯ সালে সোভিয়েত রাশিয়া ও নাৎসি জার্মানির মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘মলোটভ-রিবেনত্রপ চুক্তি’ই ছিল এই অনাক্রমণ চুক্তি। এতে দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
📝122. ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি নীতি কী ?
✅উত্তর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবর্তিত এই নীতিতে যুদ্ধরত দেশগুলো নগদে অর্থ প্রদান করে নিজেদের জাহাজে মালপত্র নিতে পারত। এর মাধ্যমে আমেরিকা নিরপেক্ষ থেকেও বাণিজ্য করত।
📝123. লেন্ড-লিজ আইন কী ?
✅উত্তর: ১৯৪১ সালে মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক পাস হওয়া এই আইনে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র দেশগুলোকে ঋণ বা ভাড়ার ভিত্তিতে যুদ্ধ সামগ্রী সরবরাহ করত। এটি ছিল আমেরিকার এক প্রকার সামরিক সহায়তা নীতি।
📝124. উগ্র জাতীয়তাবাদ কাকে বলে? উদাহরণসহ উত্তর দাও।
✅উত্তর: উগ্র জাতীয়তাবাদ হলো নিজের জাতিকে শ্রেষ্ঠ মনে করে অন্য জাতির প্রতি বিদ্বেষ পোষণের মনোভাব। উদাহরণস্বরূপ—জার্মানিতে নাৎসীবাদ এই উগ্র জাতীয়তাবাদের রূপ ছিল।
📝125. মিউনিখ চুক্তি কী ?
✅উত্তর: ১৯৩৮ সালে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানির মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে হিটলারকে চেকোস্লোভাকিয়ার সুডেটেনল্যান্ড দখলের অনুমতি দেওয়া হয়। এটি হিটলারের আগ্রাসনকে প্রশ্রয় দেয়।
📝126. আটলান্টিক চার্টার কী ?
✅উত্তর: ১৯৪১ সালে রুজভেল্ট ও চার্চিল স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্র, যাতে যুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এটি জাতিসংঘের নীতিমালার ভিত্তি গঠন করে।
📝127. অছি পরিষদ কী ?
✅উত্তর: অছি পরিষদ বা Trusteeship Council হলো জাতিসংঘের একটি অঙ্গ, যার কাজ ছিল উপনিবেশাধীন ও ট্রাস্ট অঞ্চলের প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান করা। এর লক্ষ্য ছিল ওই অঞ্চলগুলিকে স্বাধীনতার পথে導 করা।
📝128. দপ্তর (Secretariat) কী ?
✅উত্তর: দপ্তর বা Secretariat হলো জাতিসংঘের প্রশাসনিক অঙ্গ। এটি মহাসচিবের নেতৃত্বে সংস্থার সব কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে।
📝129. এমস টেলিগ্রাম কী?
✅উত্তর: এমস টেলিগ্রাম (Ems Telegram) ছিল ১৮৭০ সালে জার্মান চ্যান্সেলর বিসমার্ক কর্তৃক সংশোধিত একটি বার্তা। এই বার্তা প্রকাশের ফলে ফ্রান্স ও প্রুশিয়ার মধ্যে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়, যা ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধ নামে পরিচিত।
📝130. তৃতীয় সম্প্রদায় কারা?
✅উত্তর: ফরাসি বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের সাধারণ জনগণ যেমন—কৃষক, শ্রমিক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি ‘তৃতীয় সম্প্রদায়’ নামে পরিচিত ছিল। রাজা, অভিজাত ও যাজক শ্রেণির বাইরে এরা সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ গঠন করত।
📝131. প্যারিস কমিউন কী?
✅উত্তর: ১৮৭১ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে শ্রমিক ও সাধারণ জনগণ মিলে যে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করেছিল, সেটিই ছিল প্যারিস কমিউন। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রয়াস।
📝132. পার্ল হারবারের ঘটনাটি কী?
✅উত্তর: ৭ ডিসেম্বর ১৯৪১ সালে জাপানের বিমানবাহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপের পার্ল হারবার নৌঘাঁটিতে আকস্মিক আক্রমণ চালায়। এই ঘটনার ফলে আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয়।
📝133. ত্রিশক্তি মৈত্রী কাদের নিয়ে গঠিত হয়?
✅উত্তর: ত্রিশক্তি মৈত্রী বা Triple Entente গঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়াকে নিয়ে। এই জোট প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ও ইতালির বিরোধিতায় গঠিত হয়।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৪):
📝1. ভিয়েনা সম্মেলনের (1815 খ্রিস্টাব্দ) পটভূমি কী ছিল ?
✅উত্তর:
-
নেপোলিয়নের পতন: ইউরোপে নেপোলিয়নের আধিপত্য ভেঙে পড়লে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন হয়। এজন্য প্রধান শক্তিগুলি ভিয়েনায় সম্মেলনে বসে।
-
রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ফ্রান্সে ও ইউরোপে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করার পরিকল্পনা করা হয়।
-
শক্তির ভারসাম্য: ইউরোপে বড় শক্তিগুলির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা হয় যাতে ভবিষ্যতে কেউ আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। ফ্রান্সকে দুর্বল রাখা হয়।
-
মেটারনিখ ব্যবস্থা: অস্ট্রিয়ার রাজনীতিবিদ মেটারনিখ এই সম্মেলনকে নেতৃত্ব দেন। এর মাধ্যমে রক্ষণশীলতা ও রাজতন্ত্রকে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়।
📝2. জুলাই বিপ্লবের (1830 খ্রিস্টাব্দ) বিভিন্ন কারণগুলি উল্লেখ করো।
✅উত্তর:
-
রাজনৈতিক দমননীতি: চার্লস দশম সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেন। এর ফলে সাধারণ জনগণের অসন্তোষ বাড়ে।
-
অর্থনৈতিক সংকট: খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়তে থাকে এবং কৃষিজ সংকট দেখা দেয়। এতে জনগণের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
-
মধ্যবিত্ত শ্রেণির অসন্তোষ: শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি রাজনৈতিক অধিকারের জন্য আন্দোলনে নামে। তারা সাংবিধানিক রাজতন্ত্র দাবি করে।
-
ফলাফল: বিপ্লবের ফলে চার্লস দশম সিংহাসনচ্যুত হন। লুই ফিলিপ নতুন রাজা হয়ে সাংবিধানিক শাসন চালু করেন।
📝3. 1929 খ্রিস্টাব্দের অর্থনৈতিক মহামন্দা বা বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট-এর প্রধান কারণগুলি আলোচনা করো।
✅উত্তর:
-
অতিরিক্ত উৎপাদন: শিল্পপণ্যের অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছিল, কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা ছিল না। এতে উৎপাদন ও ভোগের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
-
শেয়ারবাজার ধস: নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের পতন 1929 সালের মহামন্দার সূচনা করে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ভেঙে পড়ে।
-
কৃষিক্ষেত্রে সংকট: কৃষিজ উৎপাদন বাড়লেও দাম কমে যায়, ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে।
-
বিশ্বব্যাপী প্রভাব: এই সংকট ইউরোপ, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকাতেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী মন্দা দেখা দেয়।
📝4. স্পেনে গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
✅উত্তর:
-
গণতান্ত্রিক সরকারের সংস্কার: নতুন গণতান্ত্রিক সরকার ভূমি সংস্কার ও আধুনিকায়নের চেষ্টা করে। এতে অভিজাত ও সেনাবাহিনীর বিরোধিতা শুরু হয়।
-
সেনাবাহিনীর বিদ্রোহ: ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর নেতৃত্বে সেনাবাহিনী সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এর ফলে দেশ গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
-
রাজনৈতিক বিভাজন: বামপন্থীরা রিপাবলিকান সরকারের পক্ষে লড়াই করে। ডানপন্থী ও রাজতান্ত্রিকরা ফ্যাসিস্ট বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয়।
-
ফলাফল: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এই যুদ্ধ ফ্যাসিবাদ বনাম গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত ফ্রাঙ্কোর নেতৃত্বে ফ্যাসিস্টরা বিজয়ী হয়।
📝5. নাৎসি নেতা হিটলারের বিদেশনীতি/পররাষ্ট্রনীতি উল্লেখ করো।
✅উত্তর:
-
ভার্সাই সন্ধির বিরোধিতা: হিটলার জার্মানিকে দুর্বল করার শর্ত ভঙ্গ করে। তিনি নতুন করে সেনাবাহিনী ও অস্ত্রশস্ত্র গড়ে তোলেন।
-
লেবেনস্রাউম নীতি: পূর্ব ইউরোপ দখল করে জার্মানদের জন্য নতুন বসতি গড়ার পরিকল্পনা নেন। এর ফলে প্রতিবেশী দেশগুলো হুমকির মুখে পড়ে।
-
অস্ট্রিয়া ও চেক দখল: তিনি ধাপে ধাপে অস্ট্রিয়া ও চেকোস্লোভাকিয়া দখল করেন। জার্মানিকে ইউরোপে শক্তিশালী করে তোলেন।
-
ফলাফল: তার এই আক্রমণাত্মক নীতি আন্তর্জাতিক শান্তি নষ্ট করে। অবশেষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
📝6. রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষচুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করো।
✅উত্তর:
-
রোম-বার্লিন জোট: 1936 খ্রিস্টাব্দে হিটলার ও মুসোলিনি একত্রে অক্ষশক্তি গঠন করেন। এতে জার্মানি ও ইতালি রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ হয়।
-
বার্লিন-টোকিও চুক্তি: একই বছর জার্মানি ও জাপান ‘অ্যান্টি-কমিনটার্ন প্যাক্ট’ স্বাক্ষর করে। এর উদ্দেশ্য ছিল কমিউনিজম ও সোভিয়েত প্রভাব দমন করা।
-
ত্রিদেশীয় চুক্তি: 1940 সালে জাপান, ইতালি ও জার্মানি মিলিত হয়ে ত্রিদেশীয় অক্ষচুক্তি করে। এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তি শক্তিশালী হয়।
-
ফলাফল: এই চুক্তির মাধ্যমে অক্ষশক্তি ইউরোপ ও এশিয়ায় আগ্রাসী নীতি চালায়। পরবর্তীতে এরা মিত্রশক্তির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে।
📝7. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নীতিগুলি কী ছিল?
✅উত্তর:
-
সমষ্টিগত নিরাপত্তা নীতি: জাতিপুঞ্জ যুদ্ধ প্রতিরোধের জন্য যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে। একটি দেশ আক্রমণ করলে সবাই মিলে প্রতিরোধ করাই ছিল মূল লক্ষ্য।
-
নিষ্পত্তি নীতি: দেশগুলির মধ্যে বিরোধ শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার ওপর জোর দেওয়া হয়। বিচারিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক আদালত গঠন করা হয়।
-
অস্ত্র হ্রাস নীতি: ভবিষ্যৎ যুদ্ধ ঠেকাতে সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে অস্ত্র হ্রাসের পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও এই নীতি পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
-
মানবকল্যাণ নীতি: দাসপ্রথা বিলোপ, স্বাস্থ্যরক্ষা ও শ্রমিক কল্যাণে জাতিপুঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এর মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নের চেষ্টাও করা হয়।
📝8. জাতিসংঘের ব্যর্থতার প্রধান কারণগুলি উল্লেখ করো।
✅উত্তর:
-
ভেটো ক্ষমতার অপব্যবহার: পাঁচ স্থায়ী সদস্য নিজেদের স্বার্থে ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে। এতে সংগঠন কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে না।
-
শীতল যুদ্ধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বন্দ্ব জাতিসংঘকে দুর্বল করে দেয়। দুই ব্লকের সংঘাত বিশ্বশান্তিকে বিপন্ন করে।
-
অর্থনৈতিক ও সামরিক দুর্বলতা: জাতিসংঘের নিজস্ব সেনাবাহিনী না থাকায় আক্রমণ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়। অর্থনৈতিক সম্পদের অভাবও কাজের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
-
আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব: আরব-ইসরাইল যুদ্ধ, কোরিয়ান যুদ্ধ ও অন্যান্য আঞ্চলিক সংঘাতে জাতিসংঘ নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে আস্থা নষ্ট হয়।
📝9. টেনিস কোর্টের শপথ ও তার তাৎপর্য কী ছিল ?
✅উত্তর:
-
ঘটনা (1789): ফ্রান্সের জাতীয় পরিষদের সদস্যরা ভার্সাই প্রাসাদের টেনিস কোর্টে একত্রিত হয়ে ঘোষণা করেন যে নতুন সংবিধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সভা ভঙ্গ করবেন না। এটি ইতিহাসে "টেনিস কোর্টের শপথ" নামে পরিচিত।
-
জনগণের ঐক্য: এই শপথ ছিল রাজশক্তির বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যের প্রতীক। এর মাধ্যমে ফরাসি বিপ্লব গণতান্ত্রিক রূপ লাভ করে।
-
রাজা ষোড়শ লুই: প্রথমে তিনি এর বিরোধিতা করেন, কিন্তু জনগণের চাপের মুখে কিছুটা ছাড় দিতে বাধ্য হন। তবুও জনগণ রাজাকে আর বিশ্বাস করেনি।
-
তাৎপর্য: টেনিস কোর্টের শপথ জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূলমন্ত্রকে শক্তিশালী করে। এটি ফরাসি বিপ্লবের এক ঐতিহাসিক মোড় হিসেবে বিবেচিত হয়।
📝10. মহাদেশীয় অবরোধ কী? নেপোলিয়ন কীভাবে এই ব্যবস্থা কার্যকর করেন ?
✅উত্তর:
-
নেপোলিয়নের ঘোষণা (1806): নেপোলিয়ন "বার্লিন ডিক্রি"-র মাধ্যমে ব্রিটেনের সঙ্গে ইউরোপের সব দেশের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেন। একেই মহাদেশীয় অবরোধ বলে। এর উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটেনকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করা।
-
ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ: তিনি ইউরোপের প্রায় সব দেশকে এই নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করেন। ফলে ইউরোপীয় বাজারে ব্রিটিশ পণ্য প্রবেশ করতে পারেনি।
-
ব্রিটেনের প্রতিরোধ: ব্রিটেন শক্তিশালী নৌবাহিনীর মাধ্যমে উপনিবেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যায়। তাই অবরোধ পুরোপুরি সফল হয়নি।
-
পরিণতি: ইউরোপে খাদ্য ও অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয় এবং নেপোলিয়নের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। অবশেষে মহাদেশীয় অবরোধ তার পতনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
📝11. ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লবের কারণগুলি কী ছিল?
✅উত্তর:
(i) রাজনৈতিক অসন্তোষ – চার্লস দশম: রাজা চার্লস দশমের কর্তৃত্ববাদী নীতি ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল। তিনি প্রেস, নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক অধিকার সীমিত করেছিলেন।
(ii) অর্থনৈতিক সংকট – জনসংখ্যার দারিদ্র্য: শ্রমিক ও কৃষক সম্প্রদায়ের জীবনমান খারাপ ও খাদ্যদাবি বৃদ্ধির কারণে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়। জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়।
(iii) সাম্রাজ্যবাদী ব্যর্থতা – আলজেরিয়া অভিযান: ফ্রান্সের সাম্রাজ্যবাদের ব্যর্থতা ও বিদেশে ব্যয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ায়। বিদেশে যুদ্ধ ও অভিযান ব্যর্থ হলে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো তীব্র হয়।
(iv) সামরিক ও জনজাগরণ – বিপ্লবী আন্দোলন: জনগণ ও সেনা গোষ্ঠী সরকারের বিরোধিতা শুরু করে। শিয়র্কে গোষ্ঠী শহরে বিক্ষোভ ও হিংস্র আন্দোলন শুরু করে, যা জুলাই বিপ্লবের সূচনা করে।
📝12. ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার কারণগুলি কী ছিল?
✅উত্তর:
(i) প্রাকৃতিক সম্পদ – কয়লা ও লোহা: ইংল্যান্ডে প্রাচুর্যপূর্ণ কয়লা ও লোহা শিল্পায়নকে প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও কাঁচামাল প্রদান করেছিল। এই সম্পদ শিল্পকলার বিকাশের জন্য অপরিহার্য ছিল।
(ii) অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক শক্তি – উপনিবেশবাদ: ইংল্যান্ডের বাণিজ্যিক শক্তি ও সমুদ্রপথে উপনিবেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ শিল্পায়নের পথ প্রশস্ত করেছিল। এটি উৎপাদন ও বাজার সম্প্রসারণে সহায়ক ছিল।
(iii) শ্রম ও জনসংখ্যা – কৃষি বিপ্লব: কৃষি বিপ্লবের ফলে শ্রম বাজারে বিপুল পরিমাণ কর্মী সরবরাহ হয়। শহরে মেকানিক ও কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় শ্রম পাওয়া সহজ হয়।
(iv) প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন – মেশিন ও উৎপাদন: নতুন যান্ত্রিক উদ্ভাবন, যেমন স্পিনিং জেন ও পাম্পিং যন্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করে। প্রযুক্তি শিল্প বিপ্লবকে গতিশীল করেছে।
📝13. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রুশ বিপ্লবের প্রভাব আলোচনা করো।
✅উত্তর:
(i) সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের উত্থান – ইউরোপ: রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লব পশ্চিম ইউরোপে সমাজতান্ত্রিক ও কমিউনিস্ট আন্দোলনকে উস্কানি দেয়। শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলন ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়।
(ii) রাজনৈতিক পরিবর্তন – বিশ্ব রাজনীতি: রাশিয়ায় সাম্রাজ্য পতন ও বোর্জোয়া শাসনের অবসান বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। ইউরোপের দেশগুলোতে বামপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়।
(iii) অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব – আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলন: রাশিয়ার কৃষক ও শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা আন্দোলন অন্যান্য দেশে অনুপ্রেরণা জোগায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক অধিকার ও সামাজিক ন্যায়ের দাবি বৃদ্ধি পায়।
(iv) ন্যায় ও বিপ্লবী আদর্শ – আন্তর্জাতিক প্রভাব: বিপ্লবী আদর্শ বিশ্বজুড়ে বিপ্লবী চেতনা ও গণতান্ত্রিক সংস্কারকে উৎসাহিত করে। সাম্রাজ্যবাদী নীতি ও যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসে।
📝14. জাতিসংঘের ব্যর্থতার কারণ নির্ণয় করো।
✅উত্তর:
(i) সদস্য দেশের স্বার্থবিরোধ – স্থায়ী সদস্যদের ক্ষমতা: জাতিসংঘে স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতা আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্তকে প্রায়শই অকার্যকর করে। স্বার্থবিরোধের কারণে বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যাহত হয়।
(ii) অর্থনৈতিক ও সামরিক দুর্বলতা – সংস্থার সীমাবদ্ধতা: জাতিসংঘের নিজস্ব সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি সীমিত থাকায় তা আন্তর্জাতিক সংঘাত রোধ করতে সক্ষম হয় না। এটি কার্যকর নীতি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে।
(iii) সাম্রাজ্যবাদ ও স্থায়ী শক্তি সংঘাত – ঠান্ডা যুদ্ধ: পশ্চিমা ও সোভিয়েত ব্লকের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘাত জাতিসংঘের কার্যক্ষমতা হ্রাস করে। যুদ্ধ ও বিরোধ সামাধানে সংস্থার ভূমিকা সীমিত হয়।
(iv) সাংগঠনিক সমস্যা – নীতি বাস্তবায়ন: সদস্য দেশগুলোর সমন্বয়হীনতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অভাব জাতিসংঘের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়।
📝15. জ্যাকোবিন শাসনে ফ্রান্সে কি কোনো মঙ্গল হয়েছিল? ব্যাখ্যা করো।
✅উত্তর:
ম্যাক্সিমিলিয়ান রোবসপিয়ার-এর শাসন: জ্যাকোবিন শাসনের নেতৃত্ব দেন রোবসপিয়ার, যিনি ফরাসি সমাজে সমতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। তার প্রশাসনে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
সামাজিক সংস্কার: কৃষকদের জমির মালিকানা দেওয়া হয় এবং ভূমির পুনর্বণ্টন করা হয়। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি কিছুটা স্থিতিশীলতা পায়।
অর্থনৈতিক পদক্ষেপ: মূল্যনিয়ন্ত্রণ আইন চালু করে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করা হয়। এতে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পায়।
দমননীতি ও সীমাবদ্ধতা: অতিরিক্ত দমননীতি ও মৃত্যুদণ্ডের কারণে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই কঠোরতার ফলে জ্যাকোবিন শাসন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
📝16. ফরাসি বিপ্লবে নারীদের ভূমিকা উল্লেখ করো।
✅উত্তর:
রাজনৈতিক সচেতনতা: নারীরা বিপ্লবী আন্দোলনে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক অধিকার দাবি করে। তারা সমানাধিকার ও ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম চালায়।
অর্থনৈতিক ভূমিকা: বাজার আন্দোলন ও খাদ্যসংকট মোকাবিলায় নারীরা নেতৃত্ব দেয়। তারা রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের দাবি উপস্থাপন করে।
সংগঠন গঠন: নারীরা ‘উইমেন’স ক্লাব’ ও অন্যান্য বিপ্লবী সংগঠন গঠন করে সামাজিক পরিবর্তনের প্রচার চালায়। এসব সংগঠন নারীজাগরণের পথ প্রশস্ত করে।
প্রভাব ও তাৎপর্য: তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ফরাসি সমাজে নারী অধিকারের ভিত্তি গড়ে ওঠে। এই ভূমিকা পরবর্তীতে ইউরোপের নারী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।
📝17. ‘কোড নেপোলিয়ন’-এর পরিচয় দাও।
✅উত্তর:
প্রবর্তক নেপোলিয়ন: 1804 খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ‘সিভিল কোড’ প্রবর্তন করেন, যা পরবর্তীতে ‘কোড নেপোলিয়ন’ নামে পরিচিত হয়। এটি আধুনিক ইউরোপীয় আইনের ভিত্তি স্থাপন করে।
আইনের মূল নীতি: এই কোডে আইন সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য বলে ঘোষণা করা হয়। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সম্পত্তির অধিকার স্বীকৃত হয়।
সমাজে প্রভাব: সমাজে বংশগত সুবিধা ও শ্রেণিভেদ কমানোর চেষ্টা করা হয়। এতে নাগরিক সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক গুরুত্ব: কোড নেপোলিয়ন শুধু ফ্রান্স নয়, ইউরোপের বহু দেশে অনুসরণ করা হয়। এটি আধুনিক নাগরিক আইনের মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তার করে।
📝18. বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সের করব্যবস্থার পরিচয় দাও।
✅উত্তর:
(১) ত্রিস্তরীয় করব্যবস্থা – অভিজাতদের বিশেষাধিকার: ফরাসি সমাজে তিন শ্রেণির মধ্যে তৃতীয় শ্রেণিই কর দিত, কিন্তু অভিজাত ও যাজক শ্রেণি করমুক্ত ছিল। এর ফলে সাধারণ জনগণের উপর করের ভার বাড়ত।
(২) দ্বৈত কর – Taille ও Gabelle: ‘তাইল’ নামে জমির কর ও ‘গাবেল’ নামে লবণের কর সাধারণ জনগণের উপর চাপানো হতো। এই করগুলো ছিল অত্যন্ত অন্যায় ও শোষণমূলক।
(৩) রাজকোষের সংকট – বিলাসী রাজনীতি: রাজপরিবার ও অভিজাতদের বিলাসিতার কারণে রাজকোষ শূন্য হয়ে পড়ে। করবৃদ্ধির মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ওপর সেই ঘাটতি পূরণ করা হতো।
(৪) জনঅসন্তোষ – বিপ্লবের বীজ: অন্যায় করব্যবস্থা জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করে। এই ক্ষোভই শেষ পর্যন্ত ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম মূল কারণ হয়ে ওঠে।
📝19. বিসমার্কের রক্ত ও লৌহনীতির পরিচয় দাও।
✅উত্তর:
(১) নীতির প্রবক্তা – ওটো ভন বিসমার্ক: প্রুশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ‘রক্ত ও লোহা’ নীতির মাধ্যমে জার্মান ঐক্যের পথ দেখান। তিনি বিশ্বাস করতেন, যুদ্ধ ও শক্তিই জাতীয় ঐক্যের একমাত্র উপায়।
(২) যুদ্ধকৌশল – সামরিক শক্তির প্রয়োগ: বিসমার্ক কূটনীতি ও যুদ্ধের সংমিশ্রণে রাজনীতি পরিচালনা করেন। ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি জার্মান ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেন।
(৩) কূটনৈতিক প্রজ্ঞা – বাস্তবনীতি: বিসমার্ক আদর্শ নয়, বাস্তব পরিস্থিতিকে প্রাধান্য দেন। তাঁর রিয়ালপলিটিক নীতি ইউরোপীয় রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করে।
(৪) ফলাফল – জার্মান ঐক্য: রক্ত ও লোহা নীতির ফলেই ১৮৭১ সালে জার্মানি একক সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। বিসমার্ক তাই “আয়রন চ্যান্সেলর” নামে ইতিহাসে অমর।
📝20. সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে যা জানো লেখো।
✅উত্তর:
(১) ঘটনার স্থান ও সময় – সেরাজেভো, ১৯১৪: ২৮ জুন ১৯১৪ সালে বসনিয়ার রাজধানী সেরাজেভোতে অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ ও তাঁর পত্নীকে হত্যা করা হয়। হত্যাকারী ছিলেন গাভরিলো প্রিন্সিপ, এক সার্ব জাতীয়তাবাদী।
(২) পটভূমি – জাতীয়তাবাদী বিদ্বেষ: সার্বিয়া ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরির মধ্যে জাতীয়তাবাদী দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। বসনিয়া দখলের প্রতিবাদেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
(৩) প্রতিক্রিয়া – যুদ্ধের সূচনা: অস্ট্রিয়া সার্বিয়াকে দোষারোপ করে যুদ্ধ ঘোষণা করে। একের পর এক দেশ এতে জড়িয়ে পড়ে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।
(৪) ইতিহাসে তাৎপর্য – বিশ্বযুদ্ধের প্রারম্ভ: সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হিসেবে বিবেচিত। এটি ইউরোপের শান্তি ব্যবস্থার চূড়ান্ত ভাঙন ঘটায়।
<<<<<<<<<<<<<<<<🌹সমাপ্ত🌹>>>>>>>>>>>

