✍️রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৫):
👉গদ্য:
📝 1. “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে।” — ‘বাবুটি’ কে? তাঁর শখ যে বজায় আছে, তা কীভাবে বোঝা গেল?
✅ উত্তর:
👉 বাবুটি কে: শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসে নিমাইবাবুর কথায় ‘বাবুটি’ হচ্ছেন ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ও দুর্বল ছিলেন।
👉 শখের পরিচয়: মাথার বাহারি ছাঁট ও চুলে সুগন্ধি তেলের ব্যবহার তাঁর শখ প্রকাশ করে।
পরনে রামধনু রঙের জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি ও বিলিতি মখমলপাড়ের কালো শাড়ি ছিল।
পকেটে বাঘ আঁকা রুমাল রাখা ছিল তাঁর বাহারি শখের নিদর্শন।পায়ে হাঁটু পর্যন্ত লাল ফিতে বাঁধা সবুজ মোজা ও বার্নিশ করা পাম্প শু পরতেন।
হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি থাকত। এই সমস্ত সাজসজ্জা তাঁর বিলাসী রুচির প্রমাণ।স্বাস্থ্য নষ্ট হলেও এই বাহারি শখ দেখায় তাঁর ষোলোআনাই শখ অটুট ছিল।
এইভাবেই শারীরিক দুর্বলতার মাঝেও তাঁর রুচি ও বিলাসিতা বজায় ছিল।
📝 2.“অথচ আপনি একেবারে খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো সব তুচ্ছ করে সরে পড়লেন?” — কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কীভাবে ‘খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো’ ব্যবহার করেছিলেন সংক্ষেপে আলোচনা করো।
✅ উত্তর:
👉 কার কথা বলা হয়েছে: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরুপী’ গল্পে এই উদ্ধৃতিতে হরিদার কথা বলা হয়েছে। তিনি জগদীশবাবুর বাড়িতে খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো উপস্থিত হন।
👉 খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো ব্যবহার: হরিদার গায়ে ধবধবে সাদা উত্তরীয় ও ছোট বহরের একটি সাদা থান ছিল। এই সাজসজ্জা তাঁকে প্রকৃত সন্ন্যাসীর মতো দেখাচ্ছিল। তিনি বিনয়পূর্ণভাবে জগদীশবাবুর বাড়িতে প্রবেশ করেন। জগদীশবাবু তাঁকে যথোচিত মর্যাদা দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
হরিদা বিরাগীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে ব্যাকুল হন।
সন্ন্যাসী কিছু উপদেশ দিয়ে বিদায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেন। জগদীশবাবু একটি থলি নিয়ে আসেন, যাতে একশো এক টাকার নোট ছিল। হরিদা সেই থলির দিকে না তাকিয়েই সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান। এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যায় তিনি অর্থ বা পার্থিব সম্পদের প্রতি অবিচল এবং সন্ন্যাসীর মতো বিনয়ী ছিলেন। তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসীর নীতি অনুযায়ী পার্থিব আকর্ষণ এড়িয়েছেন। হরিদার এই আচরণই প্রমাণ করে, তিনি খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন করতেন।
👉প্রবন্ধ:
📝 1.“আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।” — কোন জিনিস আজ অবলুপ্তির পথে? এই অবলুপ্তির কারণ কী? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কী?
✅ উত্তর:
👉 কোন জিনিস আজ অবলুপ্তির পথে: নানা ধরনের ফাউনটেন পেন, কালি, দোয়াত, কলমদানি আজ অবলুপ্তির পথে।
এইসব ব্যবহার একসময় দৈনন্দিন লেখালেখিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
👉 অবলুপ্তির কারণ ও লেখকের মতামত: কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার এই অবলুপ্তির প্রধান কারণ। লেখক এতে বিপন্নবোধ করেন।
কলমের মাধ্যমে নিজের হাতে লেখা তাঁর কাছে অধিক প্রীতিকর। কিন্তু বিজ্ঞানের চরম উন্নতির কারণে লেখালেখির কাজকে দ্রুত ও সহজ করতে কম্পিউটার সর্বত্র ব্যবহার হচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে লেখক কলমের অবলুপ্তি ভেবে নস্টালজিক হয়ে পড়েন। তিনি আরও চিন্তিত হন, কারণ হাতে লেখা হয়তো চিরতরে মুছে যাবে। লেখক প্রশ্ন করেন, ক্যালিগ্রাফিস্টদের অস্তিত্ব কী হবে। এই সকল ভাবনা তাঁকে বিপন্নবোধ করায়। তাঁর মতে, প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক, হাতে লেখা ও ঐতিহ্যবাহী কলমের মূল্য ও নস্টালজিক ভাবনা অমুল্য। লেখক প্রকাশ করেন, কলম ও হাতে লেখার চর্চা হারিয়ে যাওয়া সমাজ ও সংস্কৃতির জন্য এক ধরনের ক্ষতি ও দুঃখের বিষয়।
📝 2. ‘তাই কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে আমরা তাতে “হোম-টাস্ক” করতাম।’ — কীসে ‘হোম-টাস্ক’ করা হত? ‘হোম-টাস্ক’ করার সম্পূর্ণ বিবরণ দাও।
✅ উত্তর:
👉 কীসে হোম-টাস্ক করা হত: শ্রীপান্থ রচিত “হারিয়ে যাওয়া খালি কলম” প্রবন্ধে হোম-টাস্ক করা হত কলাপাতায়, যাকে কেটে কাগজের মতো আকারে তৈরি করা হতো।
শ্রীপান্থ তাঁর শৈশবে এইভাবে কলাপাতায় হোম-টাস্ক লিখতেন।
👉 হোম-টাস্ক করার সম্পূর্ণ বিবরণ: লেখার জন্য কলম বানানো হত রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে।
কঞ্চির মুখ ছুঁচালো করে চিরে দেওয়া হত, যাতে কালি গড়িয়ে না পড়ে। কালির জন্য ঘরোয়া উপায়ে তৈরি বিশেষ কালি ব্যবহার করা হত।
ছাত্ররা সেই কলম ও কালি দিয়ে কলাপাতায় লেখার কাজ করত। লেখা শেষ হলে কলাপাতার বান্ডিল বেঁধে স্কুলে নিয়ে যাওয়া হত। শিক্ষক কাজ পরীক্ষা করে আড়াআড়ি টেনে পাতাগুলি ছিঁড়ে দিতেন। ছেঁড়া কলাপাতা ছাত্ররা পুকুরে ফেলে দিত। কারণ, যদি গোরু খেয়ে নিত, তবে অক্ষর খাওয়া পাপ মনে করা হত। বিশ্বাস ছিল, এতে অমঙ্গল বয়ে আনতে পারে। এই বিশ্বাস ও প্রথাই লেখকের স্মৃতিচারণায় ধরা পড়েছে।
👉পদ্য:
📝 1.“এল মানুষ ধরার দল”— কোথায় এল ? মানুষ ধরার দল এসে কী করেছিল?
✅ উত্তর:
👉 কোথায় এল: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আফ্রিকা” কবিতায় মানুষ ধরার দলটি এসেছিল আফ্রিকার অরণ্যে।
তারা সভ্যতার নামে বর্বরতার চিহ্ন নিয়ে প্রবেশ করেছিল।
👉 মানুষ ধরার দল এসে কী করেছিল: তারা লোহার হাতকড়ি নিয়ে এসেছিল। তাদের নখ নেকড়ের থেকেও তীক্ষ্ণ ছিল। তারা সভ্যতার বর্বর লোভ নিয়ে অরণ্যকে কলুষিত করেছিল।
অমানবিক আচরণ দিয়ে অরণ্যের ভাষাহীন ক্রন্দনকে অপমান করেছিল। তাদের পদচারণায় কাদার পঙ্কিল স্তূপ তৈরি হয়েছিল। অরণ্যের শান্ত প্রকৃতিকে তারা রক্তাক্ত করেছিল। তাদের আগমনে মানবিক মর্যাদা পদদলিত হয়েছিল।
অরণ্যের অধিবাসীদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাদের ইতিহাস কলঙ্কিত হয়েছিল এই বর্বরতায়। রবীন্দ্রনাথ এই ঘটনায় দাসত্ব ও শোষণের করুণ চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন।
📝 2.“তোরা সব জয়ধ্বনি কর।” — কবির এই কথা বলার কারণ সংক্ষেপে লেখো।
✅ উত্তর:
👉 প্রধান কারণ: কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি ভারতবাসীকে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি জনগণকে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন নতুন বিপ্লবের ডাক দিয়ে।
👉 বিস্তারিত কারণ: কবি চেয়েছিলেন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামী চেতনা জাগ্রত হোক।
তিনি পরাধীন ভারতবর্ষে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জাগাতে উৎসাহিত করেন। এই জয়ধ্বনি ছিল নতুন দিনের সূচনার প্রতীক। পুরোনো শৃঙ্খল ধ্বংস করে নতুন শক্তিকে বরণ করার বার্তা এতে নিহিত ছিল। এটি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রেরণা জোগাত। বিপ্লবী শক্তির মাধ্যমে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিত। কবি মানুষের মনে সাহস ও আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করতে চেয়েছিলেন।
জয়ধ্বনির মধ্যে ছিল আশার আলো ও শক্তির আহ্বান। তিনি স্বাধীনতার পথে বিপ্লবকে একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে দেখিয়েছিলেন। অতএব, কবি এই আহ্বানের মাধ্যমে জনগণকে স্বাধীনতার জন্য জয়ধ্বনিতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
👉নাটক:
📝 1. “বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা, তার শ্যামল প্রান্তরে আজ রক্তের আলপনা”— বক্তা কে? কোন দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে?
✅ উত্তর :
👉 বক্তা: এই উক্তিটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বিখ্যাত নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকের দ্বিতীয় অঙ্ক থেকে গৃহীত। এর বক্তা ছিলেন স্বাধীন বাংলার শেষ নবাব সিরাজদ্দৌলা, যিনি বাংলার রাজনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এ কথাটি উচ্চারণ করেছিলেন।
👉 যে দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে: এখানে বোঝানো হয়েছে পলাশীর যুদ্ধের প্রাক্কালে বাংলার ওপর নেমে আসা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্রের ভয়াবহ ছায়া। নবাব উপলব্ধি করেছিলেন যে মীরজাফর, জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ এমনকি ঘসেটি বেগম তাঁর বিরুদ্ধে ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে যোগসাজশ করছে। কলকাতা দখলের জন্য রবার্ট ক্লাইভ পুনরায় ফিরে আসেন এবং আলিনগরের সন্ধির মধ্য দিয়ে সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলেও ইংরেজরা গোপনে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যায়। এসব চক্রান্তে বাংলার স্বাধীনতার অস্তিত্ব সংকটে পড়ে এবং আসন্ন যুদ্ধের ফলে বাংলার শ্যামল প্রান্তরে রক্তপাতের ভয়াবহ দৃশ্য আসন্ন বলে মনে হয়। তাই সিরাজদ্দৌলা এই উক্তির মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানান এবং বিরুদ্ধাচরণকারীদের দেশাত্মবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করেন।
👉কোণি:
📝 1. “ইচ্ছে থাকলেও ওকে সাঁতার শেখাবার সামর্থ্য আমার নেই।” কে বলেছিল? তার পরিচয় সংক্ষেপে উল্লেখ করো।
✅ উত্তর :
👉 মতি নন্দীর “কোণি” গল্পে এই উক্তিটি বলেছিলেন কোনির দাদা কমল। তিনি কথাটি বলেছিলেন ক্ষিতীশ সিংহকে উদ্দেশ করে।
👉 কমল ছিলেন শ্যামপুকুর বস্তির বাসিন্দা ও কোনির পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল মানুষ। ছোটবেলায় তারও সাঁতারু হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল এবং তিনি অ্যাপোলো ক্লাবের দক্ষ সাঁতারুও ছিলেন। কিন্তু পিতার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে তাকে সাঁতার ছেড়ে মোটর গ্যারেজে কাজ শুরু করতে হয়। সংসারের অভাব-অনটন সত্ত্বেও তিনি বোন কোনির মধ্যে নিজের ভগ্নস্বপ্ন পূরণের আশা দেখেছিলেন। রবীন্দ্র সরোবরে সাঁতার প্রতিযোগিতায় তিনি প্রাণপণ চিৎকার করে কোনিকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। কোনির প্রতিযোগিতার জন্য তিনি বারো টাকা ধার করে কস্টিউম কিনে দেন। সংসারের টানাপোড়েন সত্ত্বেও বোনের প্রতিভাকে বিকশিত করতে তিনি অক্লান্ত চেষ্টা চালান। পরিবারের সচ্ছলতার জন্য এক ভাইকে পনেরো টাকার বিনিময়ে চায়ের দোকানে কাজের ব্যবস্থাও করেছিলেন। সংসারের অন্নসংস্থান তার কাছে শোকের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল। তাই তার উক্তির মধ্যে দারিদ্র্যের যন্ত্রণা থাকলেও, লুকিয়ে ছিল বোনের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও নিজের অপূর্ণ স্বপ্নের পুনর্জাগরণ।
📝 2. “বিষ্টু ধরের বিরক্তির কারণ হাত পনেরো দূরের একটা লোক।” বিষ্টু ধরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়ে তার বিরক্তির কারণ উল্লেখ করো।
✅ উত্তর :
👉মতি নন্দীর “কোণি” গল্পে বিষ্টুচরণ ধর ছিলেন বনেদি বংশের সন্তান ও আই.এ. পাশ করা শিক্ষিত যুবক। পাড়ার সকলে তাকে বেষ্টাদা বলে ডাকত, এবং বনেদিয়ানা ও সম্পদের কারণে সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন।
👉 বিষ্টুচরণের সাতটি বাড়ি ছিল, বড়ো বাজারে তার ঝাড়ন মশলার বিশাল ব্যবসা চলত। ভোটে দাঁড়ানোর বাসনা থাকায় তিনি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির পদ অলংকৃত করতেন এবং আর্থিক সাহায্য দিতেন। বারুণীর দিন তিনি গঙ্গার ঘাটে গিয়ে উপুড় হয়ে মালিশ উপভোগ করছিলেন। তখনই ক্ষিতীশ সিংহ ওরফে ক্ষিদ্দা সাদা লুঙ্গি, গেরুয়া পাঞ্জাবি পরে ও কাঁধে রঙিন ঝোলা নিয়ে দূর থেকে তাকিয়ে মুচকি হাসছিলেন। বিষ্টুচরণ বুঝেছিলেন, ক্ষিদ্দার সেই হাসি তার বিশাল দেহাকৃতি নিয়েই। ছোট ছেলেরা যেমন তার মোটা শরীর দেখে হাসে, তেমনই এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষও তাকে দেখে হাসছে দেখে তিনি আরও আহত হন। তাঁর মনে হয়েছিল, এভাবে উপহাস করা অন্যায্য ও অপমানজনক। তাই তিনি গভীর দুঃখ পেয়ে বিরক্ত হয়েছিলেন। আসলে, তার ইচ্ছে ছিল ছিপছিপে চেহারার মানুষ হওয়ার, কিন্তু স্থূল দেহের কারণে তিনি প্রায়ই উপহাসের পাত্র হতেন। ক্ষিদ্দার মুচকি হাসি সেই পুরোনো বেদনাকে আবারও জাগিয়ে তোলে।
📝 3. চিড়িয়াখানায় কোনিকে নিয়ে বেড়াতে গিয়ে কী ঘটেছিল? এই ঘটনা থেকে ক্ষিতীশের কী মনে হয়েছিল?
✅ উত্তর :
👉মতি নন্দীর “কোণি” গল্পে চিড়িয়াখানায় নিয়ে গেলে কোনি প্রাণীদের দেখে ভীষণ আনন্দিত হয়েছিল এবং প্রবল কৌতূহল নিয়ে চারপাশে তাকাচ্ছিল। কিন্তু সেই আনন্দের আড়ালে তার চোখেমুখে চাপা কষ্ট ও ভয়ের ছাপও ফুটে উঠেছিল।
👉 এই দৃশ্য দেখে ক্ষিতীশ প্রথমে খুশি হলেও ধীরে ধীরে তার মনে এক নতুন উপলব্ধি জন্ম নেয়। সে বুঝতে পারে, কোনি কেবল প্রাণীদের প্রতি কৌতূহলী নয়, তার মনের গভীরে বহু অপ্রকাশিত যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে। ক্ষিতীশের মনে হয়, কোনি একেবারে সাধারণ কোনো মেয়ে নয়। তার চোখে-মুখে বিষাদের ছায়া ও ভয়ের আভাস স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছিল। ক্ষিতীশ অনুভব করে, কোনি আনন্দের মুহূর্তেও অতীতের কষ্ট ভুলতে পারে না। তার চাপা আবেগ যেন প্রতিটি আচরণের মধ্যেই প্রকাশ পাচ্ছিল। ক্ষিতীশ উপলব্ধি করে, কোনির অন্তর্লোক সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক জটিল। প্রাণীদের সামনে দাঁড়িয়ে তার ভেতরের ক্ষতগুলো যেন আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এভাবেই ক্ষিতীশের কাছে কোনি গভীর রহস্যময় ও ব্যথাভারাক্রান্ত চরিত্র বলে প্রতীয়মান হয়।